খেলা
এশিয়া কাপ ঘরেই রাখতে চান জ্যোতি
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবারবিশ্বকাপ বাছাই পর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে গতকাল সকালে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশ নেয়ার আগে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ এশিয়া কাপ। এবার ঘরের মাঠে এই আসরের শিরোপা ধরে রাখাই এখন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের অন্যতম লক্ষ্য। গতকাল সকালে বিমানবন্দরে নেমে সংবাদমাধ্যমকে নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘আমি বলবো এটা আমাদের জন্য সেরা প্রস্তুতি ছিল। কারণ, ম্যাচ প্র্যাকটিসের ওপর কোনো প্রস্তুতি হতে পারে না। যেহেতু আমরা ওখানে একই (টি-টোয়েন্টি) ফরম্যাটে খেলে এসেছি সেটা আমাদেরকে এশিয়া কাপে সাহায্য করবে। কারণ, ওই টুর্নামেন্টে কম বেশি আমরা সবাই খেলেছি। যেহেতু আমরা প্রায় একই দল পাচ্ছি এবং এশিয়া কাপে যদি আমরা দল হিসেবে কাজ করতে পারি আমার কাছে মনে হয় ভালো একটা ফল আসবে।’ ২০১৮ তে নারী এশিয়া কাপে ভারতকে হারিয়ে ঐতিহাসিক শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে ঘরের মাঠে শিরোপা ধরে রাখার ভালো উপলক্ষ। সেটি করতে নিজেদের শতভাগের বেশি দিতে চায় ক্রিকেটাররা।
শিরোপা ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী জ্যোতি বলেন, ‘অনুপ্রেরণা হলো আমি আমাদের দিক থেকে চিন্তা করছি কারণ, আমরা কিন্তু ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। আমাদের দলটা দেখবেন যে প্রায় যারা এশিয়া কাপ খেলেছেন অনেকেই আছেন। এখানে সবাই অভিজ্ঞ এবং যেহেতু ঘরের মাঠে খেলা আমার কাছে মনে হয় নিজেদেরকে এগিয়ে রাখাটাই উচিত।’ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নারী দলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। টানা পাঁচ ম্যাচ জয় দিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এমন অর্জনকে এশিয়া কাপের জন্যও দারুণ প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু ভালো একটা প্রস্তুতি পেয়েছি এবং শিরোপা জেতার মতো বড় অনুপ্রেরণা আর কোনো কিছু হতে পারে না। তাই আমার কাছে মনে হয় আমরা কোয়ালিফাই করে এসেছি যেটা আমাদেরকে অন্যরকম একটা বুস্ট আপ করে রাখছে। শিরোপা ধরে রাখার বিষয়ে ১১০ ভাগ দিতে হবে। যেন ঘরের মাঠে ঘরের শিরোপা থাকে।’ বাংলাদেশ নারী দল যে মানের ক্রিকেট খেলে তাতে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলাকে অনেকেই দুঃখজনক মনে করেন। এই নিয়ে টানা তিন বাছাই পর্বের শিরোপা জিতে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল দেশে ফিরে টাইগ্রেস অধিনায়ক আবার জানালেন আর বাছাই পর্ব খেলতে চান না তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু যাওয়ার আগেই বলে গিয়েছিলাম আমরা আর কোয়ালিফাই (বাছাই পর্ব) খেলতে চাই না। যেহেতু আমরা এফটিপিতে আছি তাই বাইরের টি-টোয়েন্টি সিরিজগুলো খেলবো। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে অবশ্যই সিরিজ নেওয়ার এবং জেতার। এর ফলে আমরা যদি র?্যাঙ্কিং এ এগিয়ে যেতে পারি আমাদেরকে আর কোয়ালিফাই খেলতে হচ্ছে না। আশা করছি এই পরিকল্পনায় আমাদের ক্রিকেট বোর্ড এগোচ্ছে এবং আমরাও সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।’ আবুধাবিতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে সমান অবদান রেখেছেন দলের সিনিয়র ও জুনিয়র ক্রিকেটাররা। বল হাতে সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদরা দেখিয়েছেন ঝলক। ব্যাট হাতে অধিনায়ক জ্যোতি ছাড়াও জ্বলে উঠেছেন মুর্শিদা খাতুনরা। চোটের কারণে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরুর আগেই দেশে ফিরতে হয় পেসার জাহানারা আলমকে। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে ফাইনালে ফারজানা হক পিংকি খেলেন ৬১ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস। আগামী বিশ্বকাপ সিনিয়রদের কারও কারও শেষ শেষ আসর হতে পারে। যদিও পুরো বিষয়কে যার যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করছেন জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘প্রথমত এটা কিন্তু বলা যায় না যে এটা কার শেষ বিশ্বকাপ। এখানে অনেক সময় খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত একটা সিদ্ধান্ত থাকে। এখানে যারা সিনিয়র খেলোয়াড় আছেন তারা কিন্তু ভালো পারফর্ম করে দলের জন্য খেলে যাচ্ছেন। বিশেষ করে আমি যদি বলি রুমানা আহমেদ প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল হয়েছেন। সালমা আপু কিন্তু ধারাবাহিকভাবে দলের জন্য ভালো বল করে যাচ্ছেন। তাই আমি বলবো সিনিয়ররাই কিন্তু একটা ভীত করে দিয়ে যাচ্ছেন। এবং তাদের হাত ধরেই কিন্তু জুনিয়ররা উঠে আসছে, ভালো পারফরম্যান্স করছে।’