অনলাইন
ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে গণমাধ্যম এখনো পুরোপুরি মুক্ত নয়: তারেক রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
(৭ ঘন্টা আগে) ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৫২ অপরাহ্ন

৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনো ফ্যাসিবাদ শক্তির হাত থেকে গণমাধ্যম পুরোপুরি মুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিনে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে চরম কর্তৃত্ববাদী একদলীয় বাকশাল কায়েম করে তাদের অনুগত ৪টি সংবাদপত্র রেখে গোটা জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিলো। ফলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদ কর্মী বেকার হয়ে পড়েছিলো। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। চিরায়ত গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং যার মূল শর্ত হচ্ছে বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহিতার আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে।
তারেক রহমান বলেন, পরবর্তীকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের কাঙ্খিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সকল প্রকার অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুন:প্রতিষ্ঠিত করেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুন:প্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়গ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সকল পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্টের মতো একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দূর্গে বন্দি করা হয়েছিল। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন এক বিষাদঘন কালিমালিপ্ত দিন। এদিনে তৎকালীন একদলীয় বাকশাল সরকার নাৎসী কায়দায় তাদের অনুগত ৪টি সংবাদপত্র অনুমতি দিয়ে অন্যসব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদ কর্মীকে বেকার করে হতাশার অতল গহব্বরে ঠেলে দিয়েছিল। বাকশালের পথ ধরে ডামি আওয়ামী সরকার পুরনো বাকশালের পুন:রুত্থান ঘটিয়ে বিগত ১৫ বছর সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর দমন-পীড়ণ অত্যূগ্র মাত্রা নামিয়ে এনেছিল। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার টুঁটি চেপে ধরা হয়েছিল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল দিনকাল, আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি, চ্যানেল-১ টিভি সহ অসংখ্য গণমাধ্যম।
তিনি বলেন, সত্য প্রকাশে খুনের শিকার হয়েছেন অর্ধশতাধিক সাংবাদিক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা মামলায় গ্রেপ্তার ও হয়রানীর শিকার হয়েছেন বহু সাংবাদিক, শিক্ষক, পেশাজীবী এমনকি শিশু শিক্ষার্থীরাও। মন্ত্রী-এমপিদের এবং ক্ষমতাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমালোচনা করলেই সাংবাদিকদের হয়রানী ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো। ‘৭৫-এর এই দিনের বিভিষিকা এখন ভিন্ন মাত্রায় আরও ভয়ঙ্কর হিংস্ররুপে আত্মপ্রকাশ করেছিল। কিন্তু বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর মানুষ তাদের বাকস্বাধীনতা কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা পেতে হলে প্রয়োজন দ্রুত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। বিএনপি বহুমত, পথ ও দলের বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে বারবার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বহুমাত্রিকতা বিএনপি’র রাজনৈতিক আদর্শ। বারংবার অবৈধ স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর শক্ত শৃঙ্খল ভেঙ্গে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছে বিএনপি। যেমনটি করেছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক এবং আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। বাতিল করেছিলেন বাকশালী আমলের সকল কালাকানুন।
পাঠকের মতামত
জ্বনাব তারেক রহমান একদম ১০০ সঠিক বলেছেন, অফলাইন অনলাইন গনমাধ্যম সহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম পুরনো সেই অপশক্তির নিয়ন্ত্রনে। ফেসবুক ইউটিওবে প্রচুর দেশবিরোধী গনতন্ত্রবিরোধী কমেন্টস দেখে মনে হয় সবকিছু এখনো সেই শত্রুদেশের কব্জায়।
ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে গণমাধ্যম এখনো পুরোপুরি মুক্ত নয় - শতভাগ একমত