অনলাইন
ইরানে হামলা চালাতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের ভোল বদলে দিল ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র
মানবজমিন ডিজিটাল
(৮ ঘন্টা আগে) ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ১:৫৭ অপরাহ্ন

ইসরাইলের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানে গোপনে পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। মিডল ইস্ট আইয়ের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এ তথ্য।ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় জ্বালানি পুনরায় ভরার প্রয়োজন ছাড়াই দীর্ঘ পথ অতিক্রমে সক্ষম হবে এফ-৩৫ বিমান। এ পরিবর্তন আনার বিষয়টি গোপনীয় হলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, গত শুক্রবার ইরানে হামলায় অংশ নেয়া ইসরাইলের যুদ্ধবিমান আকাশপথে জ্বালানি নেয়নি কিংবা পুনরায় জ্বালানি ভর্তি করতে আশপাশের কোনো দেশে অবতরণ করেনি।
মার্কিন কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আইকে জানান, এই বিশেষ অভিযানের জন্য ইসরাইলি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের কাঠামো এমনভাবে বদলানো হয়েছে; যাতে বাড়তি জ্বালানি বহন করা যায়। এটি আবার বিমানটির ‘স্টেলথ’ ক্ষমতায় (রাডারে ধরা না পড়ার ক্ষমতা) কোনো প্রভাব ফেলেনি। এফ–৩৫ যুদ্ধবিমানের এ সংস্করণ ‘এফ–৩৫ আই আদির’ নামে পরিচিত। এফ–৩৫ হল বিশ্বের একমাত্র দূরপাল্লার স্টিলথ ফাইটার, এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে রাডার বা ইনফ্রারেড সেন্সরগুলোর পক্ষে এটি ট্র্যাক করা কঠিন হয়ে পড়ে। মার্কিন কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, শুক্রবারের হামলার ব্যাপকতা ও আকস্মিকতার মাত্রা বিবেচনায় এ পরিবর্তন এফ–৩৫ যুদ্ধবিমানের সক্ষমতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এফ-৩৫ এর পারফরম্যান্স মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, সেইসাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু চীন এবং রাশিয়া, সাবধানতার সাথে অধ্যয়ন করবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, এটি একটি গেম চেঞ্জার। এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইসরাইল আমাদের সহযোগিতা করেছে।
উভয় কর্মকর্তাই নিশ্চিত করেছেন যে, ইসরাইল মার্কিন সম্পৃক্ততার সাথে তাদের এফ-৩৫ বিমানে পরিবর্তন এনেছে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা কীভাবে এফ-৩৫-কে আরও জ্বালানি বহনের জন্য পরিবর্তন করা হয়েছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চাননি, তবে একটি বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্য এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইসরাইল এ যুদ্ধবিমানে বাহ্যিক ‘ড্রপ ট্যাংক’ যুক্ত করেছে, যা বাড়তি জ্বালানি বহনে সহায়ক। এ প্রসঙ্গে ‘অ্যারোডায়নামিক অ্যাডভাইজরি’র মহাকাশবিশেষজ্ঞ রিচার্ড আবুলাফিয়া মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে অসাধারণ ঘটনা। আকাশপথে ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের জ্বালানি না নেয়ার একমাত্র বিকল্প ছিল ‘ড্রপ ট্যাংক’ ব্যবহার। প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল, এমন একটি ব্যবস্থার উদ্ভাবন; যা ড্রপ ট্যাংকের সঙ্গে এফ-৩৫-এর ইন্টারফেস স্টেলথ ক্ষমতাকে নষ্ট না করে। আমার ধারণা, আমাদের সহযোগিতায়, ইসরাইলিরা এই পরিবর্তনটি করার জন্য একটি বিদ্যমান জেটে কার্যত অস্ত্রোপচার করেছে।'
এফ-৩৫-এর প্রকাশ্যে ঘোষিত যুদ্ধক্ষেত্রের পরিসর প্রায় ৭০০ মাইল। ইসরাইল এবং ইরানের মধ্যে সবচেয়ে কম দূরত্ব হল প্রায় ৬২০ মাইল। যদি মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার ব্যবস্থা না করা হতো, তাহলে তাত্ত্বিকভাবে তারা উপসাগরীয় অঞ্চলে বা আজারবাইজানে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারত, কিন্তু মিডল ইস্ট আই-কে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই অঞ্চলের কোনও মার্কিন ঘাঁটিতে স্থলভাগে জ্বালানি ভরার কাজ করা হয়নি। আজারবাইজান আজ জানিয়েছে যে, তারা ইরান বা অন্য কোনও দেশের উপর হামলা চালানোর জন্য তার আকাশসীমা বা ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না, আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ তার ইরানি প্রতিপক্ষ আব্বাস আরাকচির সাথে এক ফোনালাপে একথা বলেছেন।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই
পাঠকের মতামত
১০০০ কিমি ও যদি না যায় - তাইলে তো টেম্পুর চেয়েও খারাপ অবস্থা