খেলা
মাঠ থেকেই বিদায় নিচ্ছেন রানা
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার
২০১৪-১৫ মৌসুমে পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরুটা করেছিলেন মোহামেডানের জার্সিতে। বিপিএল ফুটবলের এবারের মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়নের গোলবার সামলাচ্ছেন আশরাফুল ইসলাম রানা। জাতীয় দলে দীর্ঘদিন খেলেছেন। দেশকে দুই ম্যাচে নেতৃত্বও দিয়েছেন। আজ দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন এই গোলরক্ষক। তার শেষটায়ও থাকছে মোহামেডান, প্রতিপক্ষ হিসেবে। আজ কুমিল্লায় মোহামেডানের বিপক্ষে ব্রাদার্সের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছেন তিনি। এরপর তুলে রাখবেন বুট ও গ্লাভসজোড়া। নিজের অবসরের কারণ খোলাসা করে রানা বলেন, ‘অবসরের কারণ নতুনদের সুযোগ করে দেওয়া। এটাই অবসরের সঠিক সময় মনে হয়েছে। আমার ইচ্ছা আছে গোলকিপিং কোচিংয়ে আসার। ফুটবল দিয়ে যেহেতু রানা হয়েছি, এটাকে ছাড়তে পারবো না। ফুটবলের সাথে থেকে এর সেবা করতে চাই।’ নিজের অপ্রাপ্তির কথা জানিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এই গোলরক্ষক বলেন, ‘আমার বড় আক্ষেপের জায়গা হল খেলোয়াড় হিসেবে সেভাবে কিছু দিতে পারিনি। দেশের মানুষ যেভাবে ফুটবলকে ভালোবাসে, যেভাবে মনের মধ্যে লালন করে, ওইভাবে ফুটবলকে আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। সোনালী প্রজন্মের কথা বলি- ছাঈদ হাছান কানন ভাই, আমিনুল ভাই, সাব্বির ভাই, আসলাম ভাই, এদের নাম যেভাবে মানুষ সবসময় মুখে মুখে বলে, সেভাবে আমরা তাদের মতো করে কেউ হতে পারিনি। এটা আমার আক্ষেপ। দল থেকে অবসরের আগে লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ভালো একটা জায়গায় রেখে যাওয়া, সেটা হয়নি।’ ২০১৫ সালের নেপালের বিপক্ষে অভিষেক হওয়া রানা জাতীয় দলের জার্সিতে ৩০টি ম্যাচ খেলেছেন। ফুটবলাররা সাধারণত জাতীয় দল থেকে আগে এরপর ক্লাব থেকে অবসর নেন। রানার ক্ষেত্রে একেবারে ক্লাব থেকেই আসছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এ বিষয়ে তিনি, ‘২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে ডাক পেতাম। যদিও সেই সময় জিকোই খেলেছে। তখন মনে হয়েছিল জাতীয় দল থেকে আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা দেই। যাতে নতুনরা সুযোগ পায়। কোচকে বলেছিলাম কিন্তু সেই সুযোগটা হয়ে উঠেনি। এ নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ রয়েছে তাই ক্লাব পর্যায়েই আনুষ্ঠানিকভাবে করছি।’ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার সঙ্গে অন্য দশ জন ফুটবলারের ক্যারিয়ারে ভিন্নতা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ফুটবলার হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেনাবাহিনীর হয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলছিলেন। ২০১৪ সালে সেই চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর পেশাদার ফুটবলার হয়ে পথচলা শুরু করেন। কিছু দিনের মধ্যেই জাতীয় ফুটবল দলে এক নম্বর গোলরক্ষকে পরিণত হন। এক পর্যায়ে আর্মব্যান্ডও উঠে তার হাতে। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ত্রিশ ম্যাচ। ক্লাব ক্যারিয়ারে তার অর্ধযুগ কেটেছে শেখ রাসেলে। চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলেছেন চার মৌসুম। প্রায় এক যুগ পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে সবচেয়ে দুঃখজনক ও সুখকর স্মৃতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে কলকাতার সল্টলেকে ৬০ হাজার ভারতীয় দর্শকের সামনে বাংলাদেশের ড্র এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুখের স্মৃতি। আর সবচেয়ে কষ্টের ২০১৬ সালে ভুটানে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে অফে হেরে যাওয়া। সেই হারের পর বাংলাদেশ ১৪ মাসের বেশি ফুটবলের বাইরে ছিল। যার প্রভাবে র্যাঙ্কিং অনেক পিছিয়ে ১৮০ তে চলে যায়।’