ঢাকা, ৩ মে ২০২৫, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

বিএনপি আন্দোলন স্থগিত করেছে, বন্ধ করেনি: সোহেল

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে

(২ দিন আগে) ৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৯:২২ অপরাহ্ন

mzamin

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, আমাদের ধৈর্যের বাঁধ কেউ যেন না ভাঙে। আমরা সরকারকে বলেছি, আমরা সময় দিচ্ছি, সরকার আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে, কথার কিন্তু সাইজ ভালো না, আমরা নির্দিষ্ট সময় চেয়েছি। কিন্তু আমাদের ধৈর্য আছে, ধৈর্যের সীমা আছে। সেই সীমা যদি আপনারা ক্রস করেন, মনে করবেন বিএনপি আন্দোলন স্থগিত রেখেছে, আন্দোলন বন্ধ করে দেয়নি। বুধবার কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাবিব উন নবী খান সোহেল এসব কথা বলেন। তাড়াইল সাচাইল দারুল হুদা কাছেমুল উলুম মাদরাসা মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি সভাপতি মো. শরীফুল আলম। ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক ছাইদুজ্জামান মোস্তফা।
তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলার আগে চিন্তা ভাবনা করে বলবেন। এই কারণে যে বিএনপি সব শক্তিকে মোকাবেলা করেই আজকে এই পর্যায়ে এসেছে। বিএনপি নামের দল যদি বাংলাদেশে না থাকতো, এই বাংলাদেশে টাকা নিয়ে বাজারে যেতে পারতেন না, রুপি দিয়ে বাজার করতে হতো। বিএনপি যদি বাংলাদেশে না থাকতো, ওই মোদির আজকে অফিস থাকতো ঢাকায়। বিএনপি আছে বলেই তা পারেনি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও পারবে না।
নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই নিতে হবে মন্তব্য করে সাহেল বলেন, দেশে এখন একটি সরকার আছে। এটা হচ্ছে ইউনূস সাহেবের সরকার। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট। এটার একটি উপদেষ্টামণ্ডলী আছে। এটাতে আবার ছাত্ররাও ঢুকেছে। আমি একজন সাবেক ছাত্রনেতা। আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে এই সিদ্ধান্তটি সঠিক কি না? আমি বিশ^াস করি, ছাত্রদের এই সরকারে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। আমরা সবসময় দেখতে চাই, দেশে একটা গোষ্ঠী থাক, ছাত্ররা থাক, তারা থাকবে নির্লোভ, যাদের মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ থাকবে না, এ রকম একটি গোষ্ঠী থাক। সেই ছাত্রদের মধ্যে যখন দেখি ক্ষমতার লোভ, তখন মনে কষ্ট হয়। যখন পত্রপত্রিকায় দেখি, আমাদের ছোট ভাইদের কেচ্ছা। তার মানে এটি তাদের সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত। কারা করিয়েছে, কেন করিয়েছে জানি না।
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, এখন আমরা নির্বাচন চাই-এই কথা বলা অন্যায় হয়ে গেছে। আমরা রাজনীতিবিদরা জনগণের ভালোবাসা এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এটা কি অন্যায়? নির্বাচন চাওয়া যাবে না। কেন নির্বাচন চাওয়া যাবে না? ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সমস্যা কোথায়? না কি বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারে এই অর্থেই আপনারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন? বিএনপি এমনি এমনি জনপ্রিয় হয়নি। এমনি এমনি বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নমালা তৈরি হয় না। আমরা জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করবো। আর ভোট কি মানুষ অন্য জায়গায় দিবে? কথায় কথায় বলে কি-ঈদের পরে আন্দোলন। আমাদের তো ঈদের পরে আন্দোলন। এই পনেরো বছর ঈদের পরে যে আন্দোলন এই কথা বলার সাহসও তো আমরা কোন দলকে পাইনি। আমরা হয়তো বা অনেক সময় আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে কখনো বলতে হয়েছে-ঈদের পরে আন্দোলন, কখনো এসএসসি পরীক্ষার পর আন্দোলন, কখনো রমজানের পর আন্দোলন বলতে হয়েছে। কিন্তু এই ১৫-১৬ বছরে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে কোনো দল এসে বলেনি, আমরাও আপনাদের মতোই আমরাও জীবন দিবো, আমরাও জেল খাটবো, আমরাও আন্দোলনে আপনাদের সাথে একই রকম ত্যাগ স্বীকার করবো।
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব আরো বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ছিলো না। আমাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, সোয়াত। কখনো কখনো আজিজের মতো সেনাপতিরাও আমাদের ১২টা বাজানোর জন্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। আর ছিলো এই উপমহাদেশের আধিপত্যবাদী শক্তি। আপনারা আজকে বুঝতে পারছেন, কতটুকু তারা আওয়ামী লীগের জন্য ব্লাইন্ড ছিলো। প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে, প্রতি পদে পদে আমাদেরকে তাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। কিছু হয়তো বা আমাদের শক্তির ঘাটতি থাকলেও থাকতে পারে। একটা রাজনৈতিক দল কতদিকে মোকাবেলা করবে! কত শক্তিকে মোকাবেলা করবে! কিছু ঘাটতি থাকতে পারে। সেই ঘাটতি যাদের দ্বারা পূরণ হয়েছে, তারাই যদি এসে বলে, আমরাই সব, আপনারা যান গা, তা কি হয়? ১৫দিনের মুক্তিযোদ্ধা যদি এসে বলে ১৫ বছরের মুক্তিযোদ্ধাদের আপনাদের কোনো অবদান নাই, তা মানা যায়? আমাদের নেতা তারেক রহমান পুরো আন্দোলন তার নেতৃত্বে হলো। এখন শুনি, অমুক মাস্টারমাইন্ড, তমুক মাস্টারমাইন্ড। এসব কারা?
উপজেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন লিটনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, রুহুল হোসাইন, এডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস ও আজিজুল ইসলাম দুলাল, সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. ইসরাইল মিয়া ও আমিনুল ইসলাম আশফাক।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দেন। বেলা ১২টায় সম্মেলন শুরুর আগেই সম্মেলনস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status