ঢাকা, ৩ মে ২০২৫, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

পাচারকারী আটক

ঘুরতে নেয়ার কথা বলে নারী ও শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
৩ মে ২০২৫, শনিবার
mzamin

ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুকে ভারতে পাচার করতেন শংকর অধিকারী। এমনকি পাচারের জন্য টার্গেটকৃত নারীকে পাতানো বিয়ের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে বিক্রি করতেন তিনি। এমন এক চক্রের হোতা ভারতীয় নাগরিক শংকর অধিকারী বিজিবি’র হাতে ধরা পড়েছেন। আটক হওয়ার পরে বিজিবি’র কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানিয়েছেন ওই ভারতীয় নাগরিক। মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়। আটক শংকর অধিকারী (৩৯) ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের নুকুল অধিকারীর ছেলে।

বিজিবি বলছে, গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঘাডাঙ্গা বিওপির নায়েক আবু হানিফ অভিযান চালিয়ে শংকর অধিকারীকে সীমান্ত পিলার-৬০/৩৩ সংলগ্ন বাংলাদেশের ১ কিলোমিটার ভেতরে কাঞ্চনপুর গ্রামের ব্রিজের উপর থেকে আটক করে। বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানিয়েছে, আটক শংকর অধিকারী দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় বিজিবি’র টহল তার কাছ থেকে নগদ বাংলাদেশি মুদ্রা ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপি এবং ওমানি ৭ রিয়েল উদ্ধার করে।

আটকের পরে শংকর ও দুই নারীর দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শুরু করে বিজিবি। বেরিয়ে আসে নারী ও শিশু পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিজিবি’র দেয়া তথ্য মতে, গত বছরের ১১ই নভেম্বর ৬ মাসের ভিসা নিয়ে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন শংকর। এরপর তিনি মাদারীপুরে রাজৈর থানার বড়খোলা গ্রামে তার আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেন। সেখানে তিনি কৌশলে এক কিশোরী (১৩)কে বিয়ে করে ভারতে ফিরে যান। পরে গত ১৭ই এপ্রিল আবারো বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন পাচারকারী চক্রের হোতা শংকর। এরপর বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিজের কথিত কিশোরী স্ত্রী, প্রতিবেশী যুথিকা বালা (২৯) ও তার ছেলে বাধন বৈদ্যকে নিয়ে মহেশপুর সীমান্তে আসেন শংকর। একপর্যায়ে দালালদের মাধ্যমে দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টাকালে বিজিবি’র জালে আটকা পড়েন তিনি।

শংকরের কথিত কিশোরী স্ত্রী ও অপর নারী যুথিকা হালদারের উদ্ধৃতি দিয়ে বিজিবি জানিয়েছে, ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পাচারের উদ্দেশ্যে দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসেন শংকর অধিকারী। সীমান্ত এলাকায় পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত ভিকটিম নারী ও শিশুরা শংকরের আসল উদ্দেশ্য বুঝতেও পারেননি। ভিকটিম নারী ও শিশুরা ভারতে প্রবেশের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে তারা বিজিবি’র জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

এদিকে ভারতীয় পাচারকারী চক্রের হোতা শংকর অধিকারী বিজিবি’র কাছে জানিয়েছেন, তার কথিত স্ত্রীসহ দু’জন নারী এবং এক শিশুকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গা এলাকার দালাল আনোয়ারের সঙ্গে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তি করেন শংকর। চুক্তি অনুযায়ী ওই নারী ও শিশুকে ভারতে অনুপ্রবেশ করানোর পরে কথিত দালাল আনোয়ারকে টাকা প্রদান করার কথা ছিল।

বিজিবি বলছে, আটক মানব পাচারকারী চক্রের হোতা শংকর কৌশলে নিজের টাকা ব্যয় করে ওই তিনজনকে ভারতে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতে নেয়ার পরে ওই তিনজনকে বিক্রি করে দিয়ে নিজের টাকা উশুল করার পরিকল্পনাও ছিল পাচারকারীর। শংকরকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, শংকরের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আটক নারী ও শিশুসহ তিন বাংলাদেশিকে যশোরের জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status