অনলাইন
নিউ ইয়র্কে গভর্নর
পলিসিগত পার্থক্যের কারণে আইএমএফ কিস্তি দিতে দেরি করছে
সিদ্দিকুর রহমান সুমন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
(১০ ঘন্টা আগে) ২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ১২:০৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৩২ অপরাহ্ন

পলিসিগত পার্থক্যের কারণে আইএমএফ কিস্তি দিতে দেরি করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তারল্য সংকট আর ঋণ খেলাপির বিষয়েও তাদের অসন্তোষ রয়েছে। তবে খুব দ্রুতই আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার নিউ ইর্য়কের এক মতবিনিময় সভায় গভর্নর এসব তথ্য জানান। বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর বর্তমান সময়ে ব্যাংকিং সংস্কার, অর্থ পাচার, রিজার্ভ হ্যাকিং মামলা, নতুন নোট ছাপানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
গভর্নর জানান, বিগত কয়েকমাসে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিগত সরকারের বিভিন্ন অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, লুটপাট হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে, তবে অসম্ভব নয়।
পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বৃটিশ সরকারসহ অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আমেরিকায় অর্থ পাচারকারীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে উল্লেখ করে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিগত সময়ে বিকাশকে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন প্রদান করা হয়নি, নগদকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে যা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং দুর্ভাগ্যজনক । তবে বর্তমানে নগদ সরকারে, তাই নগদকে দেখা বাংলদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব। রিজার্ভ হ্যাংকিং নিয়ে নিউ ইয়র্কে এখনো মামলা চলছে, যেখানে ফেডারেল রিজার্ভ ও বাংলাদেশের পাশে আছে বলে জানান তিনি। সুইফ সিস্টেমের সাথে এখন আর কোনো সিস্টেম যুক্ত নয় । সুইফটের লোকজন কিছুদিন আগেও পরিদর্শন করে গেছে বলে জানান গভর্নর।
ব্যাংকে শেয়ার থাকলেই স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের আর ইচ্ছেমতো পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন গভর্নর। তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি তৈরি করছে । শুধু তাই নয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর সংখ্যা ৫০/৫০ করা হবে এবং ঐ ডাইরেক্টরদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্যানেল তৈরি করবে।
নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে গভর্নর বলেন, এটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। নতুন নোট ছাপাতেও ১৮ মাস থেকে দুই বছর সময় লাগতে পারে। ভারতের উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, ভারতের তৎকালীন গভর্নর এর বিরোধিতা করলেও রাজনৈতিক কারণে পুরাতন নোট বাতিল করা হয়েছিলো, যেখানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারও বিপদে পড়েছিলো। গভর্নর থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন না বলে জানান তিনি।
দায়িত্বে আসার পর থেকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এখনো পাননি উল্লেখ করে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, আগামীতে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পাবেন না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী, কমিউনিটি প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভার পূর্বে নিউ ইয়র্কের রেমিটার এসোসিয়েশনের সাথেও কনসুলেট জেনারেল অফিসে এক সভায় বক্তব্য রাখেন গভর্নর ।
পাঠকের মতামত
IMF এর লোন বন্ধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি.....আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধারাই যথেষ্ট,,,, লোন না হইলেও এই দেশ সুন্দরভাবে চলবে ইনশাআল্লাহ....