খেলা
‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন বা পেস সহায়ক উইকেট দরকার নেই’
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে আগামীকাল। প্রত্যেক সিরিজের আগেই উইকেট নিয়ে ক্রিকেটার থেকে সংবাদমাধ্যম, সবখানেই বাড়তি কৌতূহল থাকে। বিশেষ করে টেস্টে স্বাগতিকরা হোম গ্রাউন্ডের সুবিধা নিতে চায় উইকেট দিয়ে। গতকাল বাংলাদেশের হেড কোচ ফিল সিমন্সের কাছেও সংবাদ সম্মেলনে করা হয় এই ‘কমন’ প্রশ্ন, উইকেট কেমন চান! সিমন্সের উত্তরে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার ছোঁয়া পাওয়া গেল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেস বা স্পিন নয়, প্রোপার উইকেটে খেলতে চায় টাইগাররা। সিমন্স বলেন, ‘আমরা টেস্ট দলটাকে যেদিকে নিয়ে যেতে চাই, ও রকম খেলতে চাই।’
গত ১৩ই এপ্রিল থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ দল। আগামীকাল সকালে এখানেই শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট। এর আগে গতকাল দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন হেড কোচ সিমন্স। চার মাস পর লাল বলের ক্রিকেটে মাঠে নামবে টাইগাররা। এই প্রায় এক সপ্তাহের ক্যাম্পে প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট সিমন্স। তিনি বলেন, ‘প্রস্তুতি বেশ ভালো হয়েছে। এখানকার ফ্যাসিলিটিজ আমার মনে হয় স্বপ্নের মতো। আপনি যা চান, তাই করতে পারবেন। হোটেলটা খুব দূরে নয়। আমরা অনেক কাজ করতে পেরেছি এই অল্প সময়েই।’ উইকেট নিয়ে সিমন্সের চাহিদা যেন ভবিষ্যতের দিকেই ইঙ্গিত করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে প্রোপার উইকেট প্রস্তুত করার। আমরা টেস্ট দলটাকে যেদিকে নিয়ে যেতে চাই, ওরকম খেলতে চাই। আমরা একটা নির্দিষ্ট ওয়ে-তে খেলি, এজন্য আমাদের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন উইকেট তৈরির দরকার নাই। প্রোপার উইকেট বানিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতার চেষ্টা করবো। স্পিন উইকেট বা পেস উইকেট তৈরির দরকার নাই। আমরা ওখানে গিয়েছি আজ, উইকেট শক্ত, ভালো মনে হচ্ছে; আমাদের দেখতে হবে কাল সকালে কেমন হয়।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পেস ইউনিট দুর্দান্ত খেলছে। এই সিরিজেও তাদের নিয়ে আশাবাদী সিমন্স। দলে নেই কোনো বাঁহাতি পেসার, সিমন্স অবশ্য তার খুব একটা প্রয়োজনও দেখছেন না। টাইগারদের ক্যারিবীয় হেড কোচ বলেন, ‘নট নেসেসারালি। আপনার দলে একটা বাঁহাতি পেসার থাকা ভালো এখনকার ক্রিকেটে। কিন্তু যদি না থাকে। আপনার যতক্ষণ তিন চারজন ডানহাতি পেসার থাকে, কোনো কোনো দলে তো ডানহাতি পেসার নাই। আমরা আমাদের চার পেসার নিয়ে খুশি।’ বাংলাদেশের তরুণ দ্রুতগতির বোলার নাহিদ রানা ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হবেন কিনা প্রশ্নে সিমন্স বলেন, ‘এটি আসলে মুজারাবানির মতো একই বিষয়। তারা একটি দিক থেকে কিছুটা ভিন্ন। ব্যাটসম্যানরা তাদের বিপক্ষে সমস্যায় পড়ে। নাহিদ রানার সেই গতিটা আছে, যা অনেক পেসারদের জন্য আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। সে যদি সঠিক জায়গায় বোলিং করতে পারে, নিশ্চিতভাবেই জিম্বাবুয়ের জন্য বড় হুমকি হবে।’ ৬ ফুট ৮ ইঞ্চির দীর্ঘকায় রোডেশিয়ান পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিকে নিয়ে সিমন্স বলেন, ‘যদি পেসারদের উইকেট সহায়তা করে, সে (নাহিদ রানা) পৃথিবীর যেকোন দলকে আক্রমণ করবে। তার উচ্চতা একটা আলাদা সুবিধা দেয়। তবে আমাদের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তার বিপক্ষে খেলেছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। তার ব্যাপারে একটা ধারণা আছে। তারা তাকে খেলার পথ ঠিক করে নেবে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ নিয়ে ভাবতে চান না সিমন্স। তিনি টেস্টের প্রথম দিন থেকেই আস্তে আস্তে এগোতে চান। সিমন্স বলেন, ‘আমি হোয়াইটওয়াশের ব্যাপারে জানি না। একবারে একটি পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে আমি। এখানে প্রথম টেস্ট হবে। এটি জিতলে আমরা পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করব, সিরিজ জেতার কথা আলোচনা করব। প্রথম টেস্ট জেতার জন্য আমাদের আগে প্রথম দিনটি জিততে হবে। আমি এভাবেই ভাবতে পছন্দ করি। এখনই চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবতে পারব না। আপাতত সিলেট টেস্টে মনোযোগ দিতে হবে।’ টেস্টে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ভোগাচ্ছে অনেক দিন ধরেই। সাম্প্রতিক সময়ে রান না করলেও এবারও দলে টিকে গেছেন তারা। টপ অর্ডার নিয়ে সিমন্স বলেন, ‘গত চার দিন ধরে আমরা এখানে। তারা ভালো অবস্থায় আছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি আঁটসাঁট মনে হয়েছে। আশা করি, তারা সেই টাইট স্ট্রাকচারড ডিফেন্স প্রথম ম্যাচেও নিয়ে যেতে পারবে।’