ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সাড়ে ৯ মাসের বকেয়া বেতন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের ২৪(ঙ) ধারা বাস্তবায়ন চায় সিএইচসিপি এসোসিয়েশন

স্টাফ রিপোর্টার

(১৭ ঘন্টা আগে) ১৫ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৩৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৭:৩৮ অপরাহ্ন

mzamin

সাড়ে ৯ মাসের  বকেয়া বেতন,  কমিউনিটি ক্লিনিক  স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের ২৪(ঙ) ধারা বাস্তবায়ন এবং  ট্রাস্টের  সাংগঠনিক  কাঠামোতে সৃজিত সকল পদে কর্মী ন্যস্তকরণের দাবিতে মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোসিয়েশন।
মঙ্গলবার মহাখালীস্থ বিএমআরসি ভবনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্য়ন্ত এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনের শত শত কর্মী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত বৈষম্যের শিকার সিএইচসিপি-২০২২ ব্যাচের কর্মীরা।
তারা জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে আমরা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা প্রতিনিয়ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি এ সেবাদাতাদের বেতন সাড়ে ৯ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। গত মাসের শেষের দিকে আমাদের মধ্য থেকে ১৩২৮৯ জন ৩.৫ মাসের বেতন বোনাস পেলেও আমরা ২০২২ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত ৬৯৭ জন সিএইচসিপি এবং ১২ জন হেড অফিসের কর্মী বেতন পাইনি। দীর্ঘ সাড়ে ৯ মাস যাবত বেতন না পাওয়ায় আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি। বেতন না পাওয়ায় আমরা ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হয়েছি।
২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ ৪ ধাপে জনবল নিয়োগ করে (২০১১, ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২২ সালে)। বর্তমানে ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে রাজস্বখাতে অস্থায়ীভাবে ১৩৯৪৯টি পদ সৃজিত রয়েছে। এই পদগুলো পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষ গত বছরের  ১৫ই ডিসেম্বর আমাদের সকলের কাছ থেকে ট্রাস্টের অনুকূলে যোগদানের আহবান করেন। আমরা সকলেই ট্রাস্টের অনুকূলে যোগদান করি। সৃজিত সকল পদের বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় বেতনের জন্য অর্থ বরাদ্ধ দিয়েছে। কিন্তু তারপরেও কর্তৃপক্ষ ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৮ সালের নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দিলেও ২০২২ সালে নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেয়নি। আমরা মনে করছি আমাদের সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৮ সালের নিয়োগকৃতদের বেতন প্রদানের পরেও কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ৬৫০টি পদের অধিক পদের জন্য বেতন প্রদানের সুযোগ ছিল। 
তারা আরও জানান, কিছুদিন যাবৎ আমরা কর্তৃপক্ষের কর্তাদের মুখ থেকে শুনতে পাচ্ছি শুধুমাত্র ২০২২ সালের নিয়োগকৃতদের ট্রাস্টে ন্যাস্ত করা হবে না, আমাদের জন্য নতুন করে প্রকল্প পাশ করা হবে। ট্রাস্টে প্রায় ৬৫০টি পদ শূন্য এবং উক্ত পদের বিপরীতে অর্থ বরাদ্ধ থাকার পরেও আমাদের কেন ট্রাস্টে ন্যাস্ত করা হবে না এ বিষয়ে জানতে আমরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাইনি।  আমরা একই প্রতিষ্ঠানে দ্বৈতনীতি চাই না। কর্তৃপক্ষ কিছু কর্মীকে স্থায়ীকরণ করে এবং কিছু কর্মীকে প্রকল্পে স্থানান্তারের যে দ্বৈত নীতির প্রণয়ন করে ২০২২ সালের নিয়োগপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈষম্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্ট আইন, ২০১৮ এর সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। 
২০১৮ সালের কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন   অনুযায়ী কর্মচারীর একটি অংশকে স্থায়ী করে অপর একটি অংশকে প্রকল্পে স্থানান্তরের সুযোগ নাই। তারপরেও একটি মহল ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পদ এবং বরাদ্ধ থাকার পরেও আমাদেরকে প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করে প্রকল্প পাশ করাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। এমনটা হলে মহান সংসদ এবং আইনের লঙ্ঘন হবে। 
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- (১) ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে সৃজিত সকল পদে কর্মী ন্যাস্তকরণ পূর্বক চাকুরী স্থায়ী করতে হবে এবং আজকের মধ্যে আমাদের পদায়নের চিঠি করতে হবে। (২) কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন ২০১৮ এর ২৪(ঙ) ধারার বাস্তবায়ন করতে হবে। (৩) অনতিবিলম্বে আমাদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে।
কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্ট আইন ২০১৮ এর ২৪(ঙ) ধারার পাশাপাশি আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের পক্ষে আরও কিছু যুক্তি তুলে ধরেন তারা। এতে তারা বলেন,  (১) আমরা ০১/০৩/২০২৩ তারিখে যোগদান করি এবং যোগদানের পর থেকে ২ বছরেরও অধিক সময় যাবৎ অত্যন্ত সুনাম ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদান করে আসছি এবং এখনও কর্মরত আছি। (২) ২০২২ সালের জনবল নিয়োগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়া হয়েছে। (৩) ২০২২ সালে শূন্যপদের কথা উল্লেখ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং আমাদের শূন্যপদে নিয়োগ করা হয়। (৪) ২০২২ সালের নিয়োগ ট্রাস্টের খসড়া প্রবিধানের নিয়োগবিধি প্রতিপালন করে অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে হয়েছিল। (৫) ২০২২ সালের নিয়োগের যোগদান কার্যক্রম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পদ সৃজনের সম্মতির পূর্বেই সম্পন্ন হয়েছিল। (৬) আমাদের আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (আরপিটিআই) এ ১.৫ মাস তত্ত্বীয় এবং ১.৫ মাস জেলা সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্যবহারিক (মোট ৩ মাস) মৌলিক প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়েছে।  (৭) বর্তমানে ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে সৃজনকৃত ১৩৯৪৯টি পদ রয়েছে ও অর্থ মন্ত্রণালায় সমুদয় পদের বিপরীতেই অর্থ বরাদ্ধ দিয়েছে এবং বিধি অনুযায়ী ২০১১, ২০১৫, ২০১৮ সালে নিয়োগকৃতদের দিয়ে তালিকা পূরণের পরেও ট্রাস্টে ২০২২ সালের নিয়োগকৃতদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শূন্যপদ থাকে। (৮) ট্রাস্ট সকল কর্মচারীর কাছ থেকে ট্রাস্টে যোগদানের আহবান করে এবং গত বছরের ১৫ইডিসেম্বর যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের অনুকূলে যোগদান করি এবং ট্রাস্ট আামদের যোগদানপত্র গ্রহণ করে।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status