খেলা
অতীতের কাণ্ডে আম্পায়ারিংয়ে আস্থাহীন ক্রিকেটাররা
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৪ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের (ডিপিএল) বিতর্কিত আম্পায়ারিং নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতি বছরই আম্পায়ারিং নিয়ে অভিযোগের পাহাড় জমা হতো দলগুলোর পক্ষ থেকে। বিশেষ করে ক্ষমতাধর ক্লাব কর্মকর্তাদের ইশারায় হতো বিতর্কিত আম্পায়ারিং। এ নিয়ে ২০২১-এ মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ঢাকা লীগে লাথি দিয়ে ভাঙেন স্টাম্প। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব এমন ঘটনা ঘটান। এবার তাকে যেন অনুসরণ করলেন মোহামেডানের তরুণ অধিনায়ক জাতীয় দলের তারকা তাওহীদ হৃদয়। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে শনিবার ডিপিএলে আবাহনী বনাম মোহামেডানের ম্যাচে অসদাচারণের ঘটনা ঘটে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে ইবাদত হোসেনের বল আঘাত করে মোহাম্মদ মিঠুনের প্যাডে। আবেদন করে মোহামেডান। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। যা মনঃপূত হয়নি মোহামেডান অধিনায়কের। প্রতিবাদ করতে থাকেন তিনি সহ দলটির ক্রিকেটাররা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন আরেক আম্পায়ার শরফদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। তার সঙ্গেও তর্কে জড়ান তার দলটির ক্রিকেটাররা। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরই বুঝা যাচ্ছিল, বড় কোনো শাস্তির মুখে পড়বেন তাওহীদ হৃদয়। অন্যদিকে এবারো ফিক্সিং বিতর্ক ঘিরে ধরেছে ঢাকা লীগকে। কিন্তু দেশ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে বড় পরিবর্তনের পর এমন ঘটনা ঘটবে না এমনই প্রতিশ্রুতিবব্ধ ছিল সিসিডিএম। এরপরও তারা পূর্বের বিতর্ক থেকে এই আসরকে রক্ষা করতে পারেননি। কিন্তু কেন! এ নিয়ে সিসিডিএমের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল বলেন, ‘আসলে ঢাকা লীগে সিসিডিএমের সঙ্গে স্বাধীন ভাবে কাজ করছে বিসিবি’র অনেক গুলো বিভাগ। এর মধ্যে আম্পায়ারিং অন্যতম। যাদের কোন কাজেই সিসিডিএম বাধা দিচ্ছে না অতীতে যা হয়েছিল। তবে এখনো ক্রিকেটাররা সেই ঘটনা গুলোর কারণে আম্পায়ারদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না।’
সিসিডিএমের সমন্বয়কের মতে অতীতে যে বিতর্কিত আম্পায়ারিং ছিল তার খারাপ প্রভাব এখনো ক্রিকেটারদের মধ্যে কাটেনি। যে কারণে একটু ভুল হলেও তারা সেটিকে সন্দেহের চোখে দেখেন। হৃদয়ের ঘটনাটিকেও তাই মনে করছেন তিনি। তবে মাঠে খেলা চলার সময় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত সবশেষ কথা। যে কারণে সেটি মেনে নিতে হবে দলকে। তা না মেনে যে ঘটনা ঘটিয়েছেন হৃদয় তার জন্য তিনি শাস্তি পাবেন এটাই নিশ্চিত। রুবেল বলেন, ‘দেখেন মাঠে খেলার শুরু হয়ে গেলে সব দায়িত্ব আম্পায়ারদের। সেখানে কোন হস্তক্ষেপ চলবেনা। যদি কেউ ভুল করে সেখানে অধিনায়ক তার রিপোর্টে তা উল্লেখ করতে পারে। অসদাচরণের কোনো সুযোগ নেই। আমরাও এবার আম্পায়াররা প্রভাবিত হয় এমন কিছু করছি না। আগে সিসিডিএম এর বিপক্ষে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ ছিল। এখানে একটু সময় লাগবে সবার আস্থা ফিরাতে। কারণ শেষ ১৬ বছরে এমন ঘটনা ঘটেছে। যার প্রভাব এখনো কাটেনি।’
গতকালই শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের প্রথম রাউন্ড। এরই মধ্যে ৬ দল নিশ্চিত করেছে সুপার লীগে খেলা। ১১ ম্যাচ খেলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আবাহনী। একই সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে মোহামেডান। এরপর গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স, গুলশান ক্রিকেট ক্লাব, আগ্রহনী ব্যাংক ও ছয় নাম্বার দল হিসেবে সুপার লীগ নিশ্চিত করেছে লিজেন্ডস আব রূপগঞ্জন। এই ছয় দল নিয়ে আগামী ১৬ই এপ্রিল থেকে মাঠে গড়াবে সুপার লীগের প্রথম রাউন্ড।