খেলা
বার্নাব্যুতে আরেকবার রূপকথা লিখতে পারবে রিয়াল?
পুলক বিশ্বাস পার্থ
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তদের মধ্যে একটি বাক্য খুব প্রচলিত, যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক দীর্ঘ সময়’। প্রায় প্রতি মৌসুমেই এটির প্রমাণ দিয়ে আসছে অল হোয়াইটরা। চ্যাম্পিয়নস লীগের রাজারা আরেকবার পিছিয়ে পড়েছে এই প্রতিযোগিতায়। কোয়ার্টার ফাইনালের আগের লেগে ৩-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছে ইংলিশ জায়ান্ট ক্লাব আর্সেনাল। আজ ফিরতি লেগে কি আরেকবার প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পারবে স্প্যানিশ জায়ান্টরা? না কি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পরাজয়ের গ্লানিতে ডুববে প্রতিযোগিতাটির সর্বোচ্চ ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা? প্রথম লেগে হারের পর ফিরতি লেগে রিয়ালের প্রত্যাবর্নের গল্প অনেক। তবে স্প্যানিশ জায়ান্টরা প্রথম লেগে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকে ফিরতি লেগে কখনও জয় ছিনিয়ে নিতে পেরেছে? উত্তরটা হচ্ছে না। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লীগে এই স্কোরলাইনে দ্বিতীয় লেগ খেলে জয়ের রেকর্ড নেই রিয়ালের। কিন্তু গানারদের কোচ মিকেল আর্তেতা নিশ্চয়ই ২০২১-২২ মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির সান্তিয়াগো বার্নাব্যু সফর ভুলে যেতে চাইবেন না। সেবার সেমিফাইনালে সিটিকে কাঁদানোর আগে শেষ ষোলোতে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) কি দশা হয়েছিল, সেটিও নিশ্চয়ই আর্সেনাল ভক্তদের মনে আছে। একই কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন ক্লাবটির কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান লেফট ব্যাক মার্সেলো ভিয়েরা। সমপ্রতি মেক্সিকোতে ইএসপিএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদকে কেউ বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে পারবে না। যদিও ৩ গোলে এগিয়ে থাকা মানে বিশাল কিছু। তবে আমি সবসময়ই রিয়ালকে নিয়ে ভাবি। তাদের ওপর অনেক আস্থা আছে। এটা মনে রাখতে হবে, রিয়াল মাদ্রিদ ইজ রিয়াল মাদ্রিদ। তারা সব সময়ই ঘুরে দাঁড়ায়।’ একই সুর আর্সেনাল বসের গলাতেও। ইউরোপের সফলতম দলটির সামর্থ্য সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই অবগত আর্তেতা। তাই মনোযোগটা নিজেদের দিকেই রাখতে চান তিনি। ৪৩ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কোচ স্বদেশী রেডিও কাদেনা সেরের এক অনুষ্ঠানে সমপ্রতি বলেন, ‘৩ গোলের ব্যবধান ঘুচিয়ে রিয়াল জিততে পারবে কি না? দেখা যাক.. এর বাইরে আমি আর কী বলতে পারি? তারা আগেও এমন কিছু করেছে, তাই না? আমরা এমন মানসিকতা নিয়ে নামব যেন লড়াইটা এখনও উন্মুক্ত।’ অন্যদিকে জোর গুঞ্জন উঠেছে রিয়াল বস কার্লো আনচেলোত্তির বরখাস্তের প্রসঙ্গে। আর্সেনালের সঙ্গে প্রথম লেগে হারের পর স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়, চ্যাম্পিয়নস লীগ থেকে ছিটকে গেলেই চাকরি হারাবেন এই ইতালিয়ান কোচ। নিজের কোচিং ক্যারিয়ারে এই রিয়ালের হয়েই সবচেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন আনচেলোত্তি। ২০১৩-এর জুনে দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মৌসুমেই দু’টি বড় শিরোপা জেতেন তিনি। কোপা দেল রে’র পরে লস ব্লাঙ্কোসদের জেতান তাদের অধরা লা দেসিমা অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লীগের দশম শিরোপা। এখন সালটা ২০২৫। এর মধ্যে রিয়ালের চ্যাম্পিয়নস লীগের সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫তে। এতসব সমীকরণ, ইতিহাস কোনো কাজে আসবে না, যদি না রিয়াল মাঠের খেলাটায় উন্নতি করতে পারে। তবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর আবহটাই ভিন্ন। এখানে বাঘা বাঘা দল নাকানিচুবানি খেয়ে ফিরেছে। আর প্রতিযোগিতাটা যখন চ্যাম্পিয়নস লীগ, তখন রিয়াল মাদ্রিদ যেকোনো অবস্থা থেকে ফিরে আসার সক্ষমতা রাখে।