ভারত
মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে কতজনের মৃত্যু? মোদি সরকারের কাছে কোনো তথ্যই নেই
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ২:২৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে সম্প্রতি সমাপ্ত মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে নিহত বা আহতদের সম্পর্কে কেন্দ্রের কাছে কোনও তথ্য নেই। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই সংসদে একথা জানিয়েছেন। এই ধরনের ঘটনা রাজ্য সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে উল্লেখ করে রাই জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারগুলো এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম। লোকসভায় লিখিত জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন, ভিড় ব্যবস্থাপনা, ভক্তদের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা, ধর্মসভার সময় যেকোনো ধরনের বিপর্যয় প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয় পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়। কোনও রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত, মৃত ও আহতদের আর্থিক সাহায্য দেয়ার বিষয়টি রাজ্যসরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। ভারতের সংবিধানের সপ্তম তফসিল অনুসারে ‘পাবলিক অর্ডার’ এবং ‘পুলিশ’ হল রাজ্যের বিষয়। এই বিষয়ে কেন্দ্র কোনও রকম তথ্য সংরক্ষণ করে না। ফলে কেন্দ্রের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই।’
মৌনি অমাবস্যা-এর শুরুতে মহা কুম্ভের সঙ্গমে পুণ্যস্নানের জন্য ভিড় করার পরে ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে। আখড়া মার্গে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩০ জন তীর্থযাত্রী মারা যান এবং ৬০ জনেরও বেশি আহত হন। ১২ কোটিরও বেশি তীর্থযাত্রী মহাকুম্ভে স্নানের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২৮ জানুয়ারির শেষের দিকে প্রায় ৫.৫ কোটি মানুষ সঙ্গমের পানিতে ডুব দিয়েছিলেন। রাত যত বাড়তে থাকে, ততই ভিড় বাড়তে থাকে যার ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ভারতের সংবিধানে, ‘পাবলিক অর্ডার’ এবং ‘পুলিশ’ হল রাজ্যের তালিকাভুক্ত বিষয়, রাজ্য সরকারগুলোকে তাদের অঞ্চলের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রাথমিক নিয়ন্ত্রণ প্রদান করা হয়। পাবলিক অর্ডার বলতে বোঝায় সমাজের সামগ্রিক শান্তি। যাতে বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গা বা ব্যাঘাত নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়। রাজ্য পুলিশ বাহিনী আইন প্রয়োগ, অপরাধ প্রতিরোধ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিযুক্ত। তবে রাজগুলোকে অবশ্যই সংবিধান এবং সংসদ দ্বারা নির্ধারিত মৌলিক অধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনার বৃহত্তর কাঠামোর মধ্যে কাজ করতে হবে।রাজ্যের বিষয় হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্র নির্দিষ্ট শর্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে। সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৩৫৫ অনুযায়ী বাহ্যিক আগ্রাসন এবং অভ্যন্তরীণ ঝামেলা থেকে রাজ্যগুলোকে রক্ষা করার জন্য কেন্দ্রের হাতে ক্ষমতা দেয়া আছে। যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন কেন্দ্র CRPF বা সেনাবাহিনীর মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারে।
উপরন্তু, ৩৫৬ অনুচ্ছেদের অধীনে, যদি একটি রাজ্য সরকার জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে। যদিও আইন-শৃঙ্খলা প্রাথমিকভাবে রাজ্যের দায়িত্ব, তবে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া