বাংলারজমিন
ডিসিকে মঞ্চে রেখে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
(১ মাস আগে) ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার, ৯:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:২৪ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জে জেলা প্রশাসনের মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসককে মঞ্চে রেখেই জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধা। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে শহরজুড়ে। অভিযোগ ওঠেছে, আওয়ামী ঘরানার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাধান্য দিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়। সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় আওয়ামী ঘরানার একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বক্তব্য রাখেন। তাদের মধ্যে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবি ছিদ্দিক ও ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন। ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া তার বক্তব্য শেষ করার সময় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেন। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ফিসফাস চললেও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলেননি। এদিকে জেলা প্রশাসককে মঞ্চে রেখে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়ার জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী ঘরানার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক দুই কমান্ডার এবি ছিদ্দিক ও ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া ছাড়াও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মাহবুব আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিজানুর রহমান খান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূঞা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া তার বক্তব্য শেষ করার সময় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। এ সময় মঞ্চে থাকা জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানসহ কেউ কোনো প্রতিবাদ বা আপত্তি করেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত। তার ছেলে খালেদ সাইফুল্লাহ সাফাত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবি ছিদ্দিক একজন তুখোড় আওয়ামী লীগার। তিনি কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি’র একান্ত সহচর হিসেবে পরিচিত।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সময়ে যাদের দাপটের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেতো, তাদের অনেককেই এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাপটের সাথেই অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। তাঁরা বক্তব্যও দেন। আজকের (সোমবার) সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সরব উপস্থিতি এবং বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এর মধ্যে সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া বক্তব্য শেষ করার সময় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেন। কিন্তু এ নিয়ে কেউ বাধ-প্রতিবাদ করেননি।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন প্রোগ্রামে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে আমরা বিভিন্ন সময়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথা শুনছেন না। এরই ফলশ্রুতিতে আজকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা মেনে নেয়ার মতো নয়। আমি মনে করি, এটি জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।
এ ব্যাপারে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ বলেন, আজকে কিশোরগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ২৪ এর শহীদ ভাইদের সঙ্গে এটি প্রতারণা। আমরা মনে করি, প্রশাসনে আওয়ামী লীগের অনেক দোসর রয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় তারা দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ এবং পদোন্নতি লাভ করেছে। প্রশাসনের অনেকে মনে করে যে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে। আশা করি, জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, আমি তো শুনিনি। আমি শুনতে পাইনি।
পাঠকের মতামত
by heart this type of people are not freedom fighter, they are Awami terrorist. DC must be suspended.
পাকিস্তান,, ইসরায়েল ও ইয়াজিদ সম্প্রদায়ের দালালরা নিপাত যাক গনতন্ত্র মুক্তি পাক।।
She is short hearing!
ডিসি ফৌজিয়া খানকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হোক। এ ধরনের আওয়ামী অনুগত ঘৃন্য দলবাজ প্রেতাত্মাদের কবল থেকে জরুরী ভাবে প্রসাশনকে মুক্ত করা আবশ্যক।
আমরাতো সবই বুঝতে পারছি। এ রকম বেখেয়ালি জেলা প্রশাসক কি ভাবে হয়?
স্বভাব যায়না ধুইলে - ইল্লত যায়না মইলে.........
একজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধের ময়দানের চেয়ে স্লোগান দিয়ে যুদ্ধ করেছে তিনি যদি তার বিশ্বাস থেকে একই শ্লোগান দিয়ে চলে তাহলে তো দোষের কিছু নেই? এখানে তো রাজনীতির কোন কিছু নেই?