বাংলারজমিন
সিরাজগঞ্জে নির্মাণ শেষের আগেই ধসে পড়লো ‘মুজিব কিল্লা’
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১ আগস্ট ২০২৪, বৃহস্পতিবারসিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ শেষের আগেই ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। চলতি জুলাই মাসেই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিম্নমানের কাজ করায় নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই গত ৫ই জুলাই যমুনার পানির স্রোতে মুজিব কিল্লার একাংশ ভেঙে পড়েছে।
নদী ভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় চরাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ‘মুজিব কিল্লা’ তৈরি করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। বুধবার সকালে সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার চর-গিরিশ ইউনিয়নের ছালাল ও চর-ডগলাস মৌজায় দুই কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এ কিল্লা। গত ২০২২ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় এই মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কাজটি বাস্তবায়ন করছে সজীব কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ৫ই জুলাই যমুনার পানিতে একাংশ ভেঙে পড়ে। আশঙ্কা রয়েছে আবার যদি যমুনার পানি বাড়ে তাহলে এটি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আলী হোসেন, সোবাহান আলীসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চরাঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় নির্মিত এই মুজিব কিল্লা আদৌ টিকবে কিনা তা নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। এত টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হওয়া কিল্লাটি কাজ শেষ না হতেই নদীতে ভেঙে গেল। তারা আরও জানান, কিল্লার পূর্ব পাশে নদীর পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট আছে। এটি দুই বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কালভার্টটির উত্তর পাশের জায়গা ভরাট করে ডগলাস-ভেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
মুজিব কিল্লার প্রকল্প পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, কিল্লাটি সেখানে টিকবে কিনা তা যাচাই করার জন্য তিন সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি এরইমধ্যে গঠন করা হয়েছে। আগামী মাসের শুরুতেই ওই কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সেতু বন্ধ করে দেয়ার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নতুন মাটির উপরে কিল্লা নির্মাণ ও যমুনার পানির স্রোতে কিছুটা অংশ ভেঙে গেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রিপন মিয়া বলেন, মূল মাটির এক ফুট নিচ থেকেই পিলার তুলেছেন। কিন্তু পানির প্রবল স্রোতের কারণে মূল মাটি সরে যাওয়ায় ভেঙে গেছে। তারা ৮০ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ করেছেন। এ ব্যাপারে কাজিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একে এম শাহ আলম মোল্লা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এর ভেতরে গরু-ছাগল এবং মানুষের থাকা-খাওয়া, প্রস্রাব-পায়খানা ও গোসলের ব্যবস্থা আছে। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, নদীর স্রোতে কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় প্রকল্প পরিচালক এটি পরিদর্শন করে কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।