বিশ্বজমিন
ট্রাম্পকে গুলি করা কে এই টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস
মানবজমিন ডেস্ক
(৯ মাস আগে) ১৫ জুলাই ২০২৪, সোমবার, ১২:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:০৫ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পকে গুলি করা ব্যক্তির নাম প্রকাশ হয়েছে আগেই। মার্কিন অঙ্গরাজ্য পেনসিলভ্যানিয়ার বাটলারে শনিবার বিকেলে সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হত্যচেষ্টাকারী ২০ বছরের একজন যুবক। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে হামলাকারীর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। মঞ্চের এত কাছ থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ায় কুড়ি বছর বয়সের ওই যুবককে নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন ট্রাম্পকে হামলা করা ওই যুবকটি কে?
এফবিআইকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলাকারী ওই যুবক পেনসিলভ্যানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে বেথেল পার্ক নামক এলাকার বাসিন্দা । গত ১৩ জুলাই বিকেলে ট্রাম্পের ওপর হামলাকারী হিসেবে তাকে গুলি করে হত্যা করে সিক্রেট সার্ভিসের গোয়েন্দারা। তদন্ত সংস্থা এফবিআই হামলার বেশ কয়েক ঘণ্টা পর ওই হামলাকারী যুবকের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ২০ বছর বয়সী ওই যুবক চশমা পরা এবং ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
ওই হামলাকারীকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অন্যতম বিষয়টি হচ্ছে এত অল্প বয়সে কীভাবে বা কাদের প্ররোচনায় এত বড় হামলা চালিয়েছে সে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে তারা হামলার আগেই ওই যুবককে মঞ্চের কাছাকাছি একটি স্থাপনার ছাদে বন্দুক হাতে হামাগুড়ি দিতে দেখেছে। তবে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানানোর আগেই ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ওই যুবক। তার মৃতদেহ উদ্ধারের সময় এফবিআই সদস্যরা একটি এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেল উদ্ধার করেছে।
ক্রুকসের সম্পর্কে এফবিআই যে তথ্য দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, সবসময় একজন শান্ত এবং একাকী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল মার্কিন ওই যুবক। ২০২২ সালে বেথেল পার্ক হাই স্কুল থেকে স্নাতক শেষ করেছিল ক্রুকস। পরে ন্যাশনাল ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স ইনিশিয়েটিভ থেকে ৫০০ ডলারের একটি বৃত্তিও পেয়েছিল। এতে বুঝা যায় যুবকটি পড়াশুনায় বেশ ভালো অবস্থানে ছিল। এছাড়া তার সম্পর্কে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক যে তথ্য রয়েছে সেটি হচ্ছে সে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে সে রিপাবলিকান দলের একজন নিবন্ধিত ভোটার। এবারই প্রথম তার ভোট দেয়ার কথা ছিল।
স্কুলে তার বন্ধুরা তাকে ‘সোশ্যালি রিজার্ভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তার সহপাঠীরা তাকে কখনও ট্রাম্প বা রাজনীতির কোনো আলোচনা করতে শুনেনি। তাকে প্রায়ই স্কুলে উত্ত্যক্ত করা হত বলেও জানিয়েছে তার সহপাঠীরা। স্থানীয় ইউএস মিডিয়াকে একজন ছাত্র বলেছেন তিনি চুপচাপ ছিলেন, তাকে অন্য স্কুল ছাত্ররা মাঝে মাঝেই মারধর করত। স্নাতক শেষ করে সে একটি নার্সিং হোমে কাজ শুরু করেছিল।
হামলার পর তার গাড়ির ভিতর একটি সন্দেহভাজন ডিভাইস পাওয়া গেছে যেটি এখন বিস্ফোরক প্রযুক্তিবিদদের কাছে পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দারা এখনও তার মুঠোফোন তদন্ত করছেন বলে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীতা করবেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে ড্যামোক্র্যাটদের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। শনিবার হামলার পর যখন তাকে তার দেহরক্ষীরা ঘেরাও করে তার গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এক সাংবাদিকের তোলা একটি ছবি বেশ আলোচনায় এসেছে। বলা হচ্ছে ছবিটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি আইকনিক ছবি। রক্তাক্ত ট্রাম্প হাত মুষ্টিবদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাকে ঘিরে রেখেছেন তার দেহরক্ষীরা আর অন্যদিকে তার ঠিক মাথার ওপরে উড়ছে একটি আমেরিকার পতাকা- ঠিক এ অবস্থাতেই ওই ছবিতে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প। ট্রাম্পকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন ফাইট! ফাইট! ফাইট!