বিশ্বজমিন
ইসরাইলে তৈরি ভারতের হ্যারপ ড্রোন কী
মানবজমিন ডেস্ক
(৮ ঘন্টা আগে) ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

ভারতের পাঠানো ২৫টি হ্যারপ ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। প্রেস ব্রিফিংয়ে আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ভারত উসকানিমূলক ও স্পষ্ট আগ্রাসন চালাচ্ছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। করাচি, লাহোরসহ বিভিন্ন স্থানে এই ড্রোনগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং ড্রোন ধ্বংসাবশেষের ছবিও তুলে ধরা হয়।
হ্যারপ ড্রোন কী?
হ্যারপ একটি ‘লোইটারিং মিউনিশন’ বা আত্মঘাতী ড্রোন, যা শত্রুপক্ষের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উড়ে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস সাধন করে। এটি ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের এমবিটি মিসাইল ডিভিশনের তৈরি একটি উন্নত ড্রোন। এই ড্রোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা মানবনিয়ন্ত্রিত ‘হিউম্যান-ইন-দ্য-লুপ’ মোডে পরিচালিত হতে পারে। লক্ষ্যবস্তু না পেলে এটি ঘাঁটিতে ফিরে এসে অবতরণ করতেও সক্ষম। এর মোড়ানো পাখা থাকায় এটি ট্রাক, জাহাজ বা বিমান থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
মেহরান ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাহাদ ইরফান সিদ্দিকী জানান- এই হ্যারপ ড্রোনগুলো উচ্চ মানের সামরিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচালিত হয় এবং সাধারণ জ্যামিং প্রযুক্তি দিয়ে এগুলোকে আটকানো খুব কঠিন। তিনি বলেন, হ্যারপ ড্রোন উচ্চমাত্রার ক্ষতিকর ও বিধ্বংসী হতে পারে।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো গুরুতর অপরাধ। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ভারত যেভাবে মসজিদ, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জনবসতি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, তা স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধের শামিল।
বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত অস্ত্র
হ্যারপের মতো স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রাণঘাতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এগুলো মানুষ ছাড়াই লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ ও আক্রমণ করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ভারতের অস্ত্র আমদানি ও ব্যবহারের প্রেক্ষাপট
গত দশকে ভারত প্রায় ২.৯ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম ইসরাইল থেকে আমদানি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নজরদারি ও যুদ্ধ ড্রোন, রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র। ২০১৬ ও ২০২০ সালে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘর্ষে হ্যারপ ড্রোন সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তান এই ড্রোন ব্যবহারকে ‘স্পষ্ট যুদ্ধঘোষণা’ হিসেবে দেখছে এবং দেশটির সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো মূল্যে সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।