খেলা
‘৫০০০০’ ছুঁয়ে বিদায় বললেন অ্যান্ডারসন
স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার
ঐতিহ্যবাহী লর্ডসে অভিষেক হয়েছিল জেমস অ্যান্ডারসনের। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ভেন্যুতে টেস্ট অভিষেক তার। ১৯ বছর পর থামলেন সেখানেই। অভিষেক ইনিংসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে জানান দিয়েছিলেন নিজের আগমনী বার্তা। শেষ টেস্টে দুই ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে আলোটা কাড়েন গাস অ্যাটকিনসন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিদায় বেলাতেও নিজের জাতটা চেনান অ্যান্ডারসন। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে শিকার ১ উইকেট। অধিনায়ক বেন স্টোকস আগেই জানিয়েছিলেন অ্যান্ডারসনকে বিদায়ী উপহার দিতে চান তারা। অ্যান্ডারসনের বিদায়ী টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১১৪ রানের বড় ব্যবধানেই হারালো ইংল্যান্ড। এই টেস্টকে ‘অ্যান্ডারসনের ম্যাচ’ বললে একটুও ভুল হবে না। অনেক আবেগ আর আয়োজন ছিল তাকে ঘিরে। টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ বলে কথা। তিন দিন ধরেই তার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানরা ছিলেন গ্যালারিতে।
কদিন পর ৪২ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া অ্যান্ডারসন ম্যাচ শেষে যখন মাঠ ছাড়লেন, আরেকবার তাকে অভিবাদন জানালেন সকলে। যেতে যেতে হাত উঁচিয়ে জবাব দিলেন তিনি। বিদায়ী ম্যাচে অ্যান্ডারসনকে গার্ড অব অনার দিতে চেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই পরিকল্পনা থাকলেও অ্যান্ডারসন নামার সময় শোয়েব বশিরের রান আউটের জন্য খেলোয়াড়রা চলে গিয়েছিলেন বাউন্ডারি লাইনের কাছে। তাই ্আগেরদিন গার্ড অব অনার দেওয়া হয়নি। গতকাল অবশ্য ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই দলই গার্ড অব অনার দেয় তাকে। ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে জানায় অভিবাদন। গ্যালারিতে ছিলেন অ্যান্ডারসনের পরিবারের সদস্যরা। তাদের চোখ দিয়ে ঝড়ছিল পানি। দর্শকরাও অভিবাদন জানান এই কিংবদন্তিকে।
১৩৪৭ উইকেট ও ১০০১ উইকেট নিয়ে মুত্তিয়া মুরালিধরন ও শেন ওয়ার্ন আছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় প্রথম দুইয়ে। তৃতীয় বোলার হিসেবে ১০০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করতে বিদায়ী টেস্টে অ্যান্ডারসনের দরকার ছিল ১৩ উইকেট। শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি। লর্ডসে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৪ উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংলিশ পেসারের উইকেট এখন ৯৯১। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০০ উইকেটের আক্ষেপ থাকলেও লর্ডস টেস্টে অসাধারণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন অ্যান্ডারসন। প্রথম পেসার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০ হাজার বল করার রেকর্ড গড়েছেন। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলে অ্যান্ডারসন এখনো পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭ বল করেছেন। সর্বোচ্চ বোলিংয়ের হিসাবেও সবার ওপরে আছেন মুরালিধরন। শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার ৬৩১৩২ বল করেছেন। ১৯৯২ থেকে ২০১১ এই ২১ বছরের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি এশিয়া একাদশ ও আইসিসির হয়েও খেলেছেন তিনি। ১৮৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে অ্যান্ডারসনের উইকেট ৭০৪টি, টেস্ট ইতিহাসে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। মুত্তিয়া মুরালিধরনের উইকেট ৮০০টি ও শেন ওয়ার্নের ৭০৮টি। চাইলে ওয়ার্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারতেন ৪২ ছুঁইছুঁই করা অ্যান্ডারসন। কিন্তু এই কিংবদন্তি থামতে চেয়েছিলেন লর্ডসে। ঐতিহ্যবাহী লর্ডসের মর্যাদাও হয়তো কিছুটা বাড়ল টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া এই পেসারের অবসরের ভেন্যু হিসেবে।