বিশ্বজমিন
ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি
নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য কেন্দ্র ও মণিপুর রাজ্য সরকারের সমালোচনা সুপ্রিম কোর্টের
মানবজমিন ডেস্ক
২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে গত বছর কুকি ও মেইতি জাতিগত সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। এর ফলে সেখানে বড় রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, গত বছর ৩রা মে থেকে ১৫ই নভেম্বর সময়ের মধ্যে এই সংঘাতে কমপক্ষে ১৭৫ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ। ২০২৩ সালে ভারতে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্ষিক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার সারসংক্ষেপে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, অধিকারকর্মীরা ও সাংবাদিকরা রিপোর্ট করেছেন যে, সেখানে সশস্ত্র লড়াই হয়েছে। ধর্ষণ করা হয়েছে। অবমাননা করা হয়েছে। এর সঙ্গে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং উপাসনালয় ধ্বংস করা হয়েছে। সরকার সেখানে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করে, প্রতিদিন কারফিউ দেয় এবং সহিংসতার জবাবে ইন্টারনেট স্লো করে দেয়। এই সহিংসতাকে থামাতে ব্যর্থতা এবং সহিংসতা তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ, মানবিক সহায়তা সরবরাহ নিশ্চিত করা, ধ্বংস করে দেয়া বাড়িঘর এবং উপাসনালয় পুনঃনির্মাণে কেন্দ্রীয় এবং মণিপুর রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রতি বছরের মতো এ বছরও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের প্রায় সব দেশের গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে ভারত অংশে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২৩ সালে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার ইস্যু পাওয়া গেছে। এসব রিপোর্ট বিশ্বাসযোগ্য। এর মধ্যে আছে খেয়ালখুশিমতো আটক অথবা আইনবহির্ভূতভাবে হত্যাকাণ্ড, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতা, সরকারের কাছ থেকে অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি, জেলখানার পরিবেশ ভয়াবহ কঠিন এবং জীবনের প্রতি হুমকিস্বরূপ। বছর জুড়েই খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়েছে। আছে রাজনৈতিক বন্দি ও আটক ব্যক্তি। ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় খেয়াল-খুশিমতো অথবা বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। কোনো আত্মীয়ের ঘটানো অপরাধের কারণে পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। মত প্রকাশ ও মিডিয়ার স্বাধীনতায় আছে গুরুতর বিধিনিষেধ। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটানো হয়েছে অথবা সহিংস হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয়েছে।
তাদেরকে সেন্সরশিপ করানো হয়েছে। ইন্টারনেট স্বাধীনতায়ও আছে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা। স্বাধীনভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে আছে উল্লেখযোগ্য হস্তক্ষেপ। আন্দোলনের স্বাধীনতায় আছে বিধিনিষেধ। আছে সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আছে সরকারের গুরুতর বিধিনিষেধ। আছে ব্যাপকভাবে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন সেইসব কর্মকর্তাদের শনাক্তে এবং শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।