বাংলারজমিন
আরিফ হত্যা
সিলেটে কারাগারে কাউন্সিলর নীপু
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবারসিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগকর্মী হিরণ মাহমুদ নীপুকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে দু’দফা জামিন নেয়ার পর গতকাল সিলেট মহানগর দায়রা জজ এ কিউ এম নাসির উদ্দিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেলে পাঠানো হয়। এ সময় আদালতে নিহত ছাত্রলীগকর্মী আরিফের মা আঁখি বেগমসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নীপু সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। তিনি নগরীর বর্ধিত অংশ ৩৬নং ওয়ার্ডের নতুন কাউন্সিলর। বৃহত্তর বালুচর এলাকায় নীপুর নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একটি বলয় রয়েছে। বালুচরের পার্শ্ববর্তী টিবি গেট এলাকার বাসিন্দা ছিল ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদ। সে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মী ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। এ কারণে নিহত আরিফের সঙ্গে নীপু বলয়ের নেতাকর্মীদের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জের ধরে ১৫ই নভেম্বর নীপু গ্রুপের কর্মীরা টিবি গেট এলাকায় ছাত্রলীগকর্মী আরিফের উপর প্রথম দফা হামলা চালিয়েছিল। এতে গুরুতর আহত হয়ে আরিফ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বৃহত্তর বালুচর এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রবাজরা আরিফের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় আরিফের পিতা বাদী হয়ে শাহপরান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ ওই মামলা প্রথমে রেকর্ড করেনি। কিংবা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ মামলা দায়ের করায় নীপু ও তার সহযোগীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় ২০শে নভেম্বর কিছুটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে আরিফ। ওই রাতে নীপুসহ তার গ্রুপের কর্মীরা বাসার সামনেই আরিফকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে গুরুতর আহত হয় আরিফ। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন স্থানীয়রা এলাকা থেকে আরিফ হত্যার দুই আসামিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে এবং ঘটনার পর উত্তাল হয়ে ওঠে নগরের বালুচর এলাকা। আত্মগোপনে চলে যায় কাউন্সিলর নীপু ও তার সহযোগীরা। পরে ২৮শে নভেম্বর নীপু উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নেয়। পরে ৩০শে ডিসেম্বর দুই সপ্তাহের জামিন নেয়। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর গতকাল সিলেটের আদালতে আত্মসমর্পণ করে নীপু। পরে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। আরিফ হত্যা মামলার বাদী আঁখি বেগমের পক্ষের আইনজীবী মখলিছুর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে নীপু পলাতক ছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিল। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হলে গতকাল সে আদালতে হাজির হয়। আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নীপুকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে- আদালত থেকে দুপুরে গাড়িযোগে নীপুকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় আদালত চত্বরে নিহত আরিফের সহকর্মীরা নীপুসহ আসামিদের ফাঁসি দাবি করে মিছিল করেন। নিহত আরিফের মা ও মামলার বাদী আঁখি বেগম জানিয়েছেন, আমি ন্যায়বিচার চাই। এখনো সব আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আসামিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। নতুবা নীপুসহ তার সহযোগীরা জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো বালুচরকে অশান্ত করে তুলবে।