বাংলারজমিন
শহীদ মিনার নেই সরাইলের ২২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার
সরাইল উপজেলার ২২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। জাতীয় এ দিবসটির দায় সারতে কিছু প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা কলাগাছ, কাঠ, বাঁশ, গাছের ডালপালা, ইটাবালি ও কাগজের উপর ভরসা করেই কাটাচ্ছেন বছরের পর বছর। অথচ ২০২০ সালে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। প্রয়োজনে নিজেদের উদ্যোগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন মাউশি। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি আদৌ। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০৮টি কিন্ডারগার্টেন, ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি কলেজ রয়েছে। এরমধ্যে ১০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০৬টি কিন্ডারগার্টেন, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা ও ২টি কলেজে নেই শহীদ মিনার। উপজেলার মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৬২টি। শহীদ মিনার নেই ২২৫টিতে। সরাইল উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন স্থানে ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত নিজসরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নেই শহীদ মিনার। এ ছাড়া সরাইল সদরের সরাইল মডেল, বড্ডাপাড়া, উচালিয়াপাড়া, বড়বাড়ি, জিলুকদার পাড়া, সরাইল সদর উচ্চ বিদ্যালয়, স্বল্প নোয়াগাঁও, কুট্রাপাড়া পশ্চিম ও কুট্রাপাড়া পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় দিবসে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। ফলে জাতিসত্তার সঙ্গে জড়িত এমন গুরুত্বপূর্ণ দিবসের মর্যাদা ও মর্মার্থ অজানাই থেকে যাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে। ফলে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি নীরবেই কাটছে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো গত ১৩ বছর ধরে স্লিপ ও সংস্কার বাবদ লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ পাচ্ছেন। ওই টাকার একটা অংশ খরচ করলেই প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়ে যায়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নৌশাদ মাহমুদ বলেন, প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে অবশ্যই শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। স্লিপ ও সংস্কারের টাকায় শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ করা যায় না। শহীদ মিনার নির্মাণে অনেক টাকার প্রয়োজন। অনেক বিদ্যালয়ে নির্মাণের জায়গাও নেই। নতুন ভবন নির্মাণের ইস্টিমিটে শহীদ মিনার নির্মাণ যুক্ত করে দিলে ভালো হতো। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা-উল আলম ভূঁইয়া বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের ইচ্ছা আমাদের আছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।