নির্বাচিত কলাম
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তান, মিয়ানমার, মধ্যপ্রাচ্য শান্তি নেই কোথাও
মোহাম্মদ আবুল হোসেন
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবারযুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউরোপের কমপক্ষে ৮০০ সরকারি কর্মকর্তা গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। জর্ডানে মার্কিন একটি ঘাঁটিতে ২৮শে জানুয়ারি ড্রোন হামলা হয়। উপযুক্ত সময়ে, বাছাই করা স্থাপনায় এর জন্য উপযুক্ত জবাব দেয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমনিতেই সিরিয়া, ইয়েমেন, লেবানন, ইরাক, ইরানে ইরানপন্থি বিভিন্ন গ্রুপ ক্ষোভে ফুঁসছে, তার ওপর এমন ঘোষণা তাদেরকে আরও উজ্জীবিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইরানি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়। তাতে ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার একজন সহ কমপক্ষে চারজন সিনিয়র কর্মকর্তা নিহত হন। এ কারণে ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ ইরান। তার মধ্যে ২রা ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সিরিয়া ও ইরাকে ইরানপন্থি কমপক্ষে ৮৫টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে হামলা-পাল্টা হামলা থেকে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো সময় স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে যুদ্ধ। গাজায় এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৭ হাজার। তারপরও দক্ষিণে রাফা অঞ্চলে উন্মত্তের মতো হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসরাইল। রাফায় বাস্তুচ্যুতদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। সেখানে হামলার পর এসব অসহায় মানুষের ঠিকানা কী হবে তা অজানা। এরই মধ্যে আলোচনায় এসেছে যে, গাজার মানুষকে অন্য কোনো দেশে জোর করে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আলোচনাও এগিয়েছে। জাতিসংঘ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ কোনো মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনের তথ্য আমলে নিচ্ছে না ইসরাইল
পাকিস্তানে কি হচ্ছে এসব! একের পর এক মামলায় সাজা দিয়ে ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান ক্রিকেটের কিংবদন্তি ইমরান খানের। তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা করে সাজা দেয়া হয়েছে বা হচ্ছে, একই রকম ঘটনা আরও নেতার বিরুদ্ধে আছে। কিন্তু কই, তারা তো বহাল তবিয়তে আছেন। নির্বাচন করছেন। প্রথমে ইমরান খানকে সাজা দেয়া হয় তোষাখানা মামলায়। পাক্কা ১০ বছরের জেল দেয়া হয় তাকে। অথচ একই অভিযোগ আছে অন্য নেতাদের বিরুদ্ধেও। সেগুলোকে আমলে নেয়া হয়নি। উল্টো পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএলএন) প্রধান ও তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে দেশে এনে তাকে নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আল আজিজিয়া ও পানামা পেপারস মামলায় যাবজ্জীবনের জন্য সরকারি পদে অযোগ্য ঘোষণা করেছিল আদালত। তাকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। কোনো এমপিকে অযোগ্য ঘোষণার মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর করে আইন পাস করা হয়। ফলে নওয়াজ শরীফের ক্ষেত্রে সেই পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এমন সুবিধা পেয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তার দল থেকে বলা হয়, তিনিই হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। অথচ তখনো নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। সেই সব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে অথবা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে তাকে নির্বাচনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি যখন আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন আদিয়ালা জেলের চারদেয়ালে বন্দি জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাকে প্রথমে তোষাখানা মামলায় ১০ বছরের জেল দেয় আদালত। এতে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে যান। এরপর কেড়ে নেয়া হয় দলীয় নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট। এমনকি দলটির অভ্যন্তরীণ নির্বাচনও বেআইনি বলে ঘোষণা দেয়া হয়। দল হিসেবে পিটিআই হয়ে পড়ে অস্তিত্বহীন। এ জন্য এ দলটির প্রার্থীরা সারা দেশে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো একক প্রতীক নেই। এক একজন প্রার্থী এক এক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। ফলে তারা যে পিটিআইয়ের প্রার্থী তা ভোটারদের কাছে উপস্থাপন করা খুবই জটিল কাজ হয়ে পড়েছে। তোষাখানা মামলার পর ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে ১৪ বছর করে জেল দেয়া হয় কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করা বিষয়ক মামলায়। সর্বশেষ ৩রা ফেব্রুয়ারি ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিয়ে বেআইনি, অনৈসলামিক বলে রায় দেন একজন বিচারক। বুশরা বিবির সাবেক স্বামী ‘ইদ্দত’ চলাকালে ইমরান-বুশরা বিবাহ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। তার শুনানিতে আদালত এদিন দু’জনকেই ৭ বছর করে জেল দেয়। ১০+১৪+৭= সর্বমোট ৩১ বছরের জেল এখন ইমরান খানের কাঁধে। তবে এসব সাজা একটির পর একটি প্রয়োগ করা হবে নাকি একই সঙ্গে চলতে থাকবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এমন প্রেক্ষাপটে এটা পরিষ্কারভাবে মনে হচ্ছে যে, ইমরান খানকে ইচ্ছাকৃতভাবেই মামলায় জেল দেয়া হচ্ছে। এ অঞ্চলের রাজনীতিতে এটাই যেন রীতি হয়ে উঠছে। আইন ব্যবহার করে রাজনীতি উদ্ধার করা হচ্ছে। কিন্তু এর পেছনে যে ‘এস্টাবলিশমেন্টের’ হাত আছে, তা সহজেই অনুমেয়। কারণ, ইমরান খান যেমন সেনাবাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছিলেন, ঠিক তাদেরকে ক্ষেপিয়ে ক্ষমতা হারিয়েছেন। ফলে পাকিস্তানের মতো দেশে শক্তিধর সেনাবাহিনীর ভূমিকা রাজনীতিতে আরও একবার প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।
২.
পাকিস্তান থেকে ফেরা যাক মধ্যপ্রাচ্যে। ওই অঞ্চল এখন বিস্ফোরণোন্মুখ। পরিস্থিতি যা, তাতে যেকোনো সময় পুরো মধ্যপ্রাচ্য একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। গাজায় ইসরাইলের নৃশংস হামলার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো কথা বলা শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউরোপের কমপক্ষে ৮০০ সরকারি কর্মকর্তা গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। জর্ডানে মার্কিন একটি ঘাঁটিতে ২৮শে জানুয়ারি ড্রোন হামলা হয়। উপযুক্ত সময়ে, বাছাই করা স্থাপনায় এর জন্য উপযুক্ত জবাব দেয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমনিতেই সিরিয়া, ইয়েমেন, লেবানন, ইরাক, ইরানে ইরানপন্থি বিভিন্ন গ্রুপ ক্ষোভে ফুঁসছে, তার ওপর এমন ঘোষণা তাদেরকে আরও উজ্জীবিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইরানি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়। তাতে ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার একজন সহ কমপক্ষে চারজন সিনিয়র কর্মকর্তা নিহত হন। এ কারণে ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ ইরান। তার মধ্যে ২রা ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সিরিয়া ও ইরাকে ইরানপন্থি কমপক্ষে ৮৫টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে হামলা-পাল্টা হামলা থেকে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো সময় স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে যুদ্ধ। গাজায় এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৭ হাজার। তারপরও দক্ষিণে রাফা অঞ্চলে উন্মত্তের মতো হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসরাইল। রাফায় বাস্তুচ্যুতদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। সেখানে হামলার পর এসব অসহায় মানুষের ঠিকানা কী হবে তা অজানা। এরই মধ্যে আলোচনায় এসেছে যে, গাজার মানুষকে অন্য কোনো দেশে জোর করে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আলোচনাও এগিয়েছে। জাতিসংঘ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ কোনো মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনের তথ্য আমলে নিচ্ছে না ইসরাইল।
৩.
যুক্তরাষ্ট্রে এ বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রাইমারি শুরু হয়েছে। প্রথমে আইওয়া ককাস, তারপর নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাইমারি নির্বাচন হয়েছে। তাতে ব্যাপকভাবে এগিয়ে আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সেই মামলার শুনানি একজন ফেডারেল বিচারক অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করেছেন। ফলে এ সময়ের মধ্যে যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে যায়, তাহলে ট্রাম্প তাতে উৎরে যেতে পারেন। অনেকেই মনে করছেন, যেসব মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে তাতে ট্রাম্পকে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। কিন্তু এসব মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি ট্রাম্প শিবিরের। ট্রাম্প নিজেই তো বলে দিয়েছেন, তাকে রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য এসব মামলা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি ট্রাম্পকে কোনো মামলায় অযোগ্য বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে বড় রকমের অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। কারণ, ট্রাম্পের যেসব সমর্থক তারা কট্টর। তারা ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি দেখিয়ে দিয়েছে কেমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। অভিযোগ আছে, ওইদিন ট্রাম্পের উস্কানিতে তারা ক্যাপিটল হিলে হামলা করে। তা নিয়ে মামলা চলমান।
৪.
পাশের দেশ মিয়ানমারে সামরিক জান্তা জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কাছে ধরাশায়ী অবস্থা। শান রাজ্যে প্রায় ২০০ সেনাসদস্য আত্মসমর্পণ করেছে বিদ্রোহীদের কাছে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি তীব্র যুদ্ধ শুরু করেছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে। তারা এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর কয়েকটি পোস্ট নিজেদের দখলে নিয়ে গেছে বলে খবর দিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। সেনাবাহিনীর মধ্যেও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে এই চলমান যুদ্ধে সীমান্ত অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। সেখানে বসবাসকারী লোকজন বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে প্রভাব পড়েছে। আঘাত লাগছে মিয়ানমারের অর্থনীতিতে। এখানে উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর বড় রকম প্রভাব আছে চীনের। কোকাংয়ে চারটি পরিবারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে চীন। অনেকেই যুক্তি দিচ্ছেন যে, সামরিক জান্তা সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার জবাবদিহিতা চাইছেন। ইএও’র কাছে হারানো এবং সেনাবাহিনীকে লজ্জায় ফেলার জন্য তার বিরুদ্ধে এমন দাবি উঠছে। গত ৭৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী বিপুল এলাকা হারাচ্ছে ইএও’র কাছে। এ বছরের মধ্য জানুয়ারি উগ্রপন্থি বৌদ্ধ ভিক্ষু অশ্বিন আরিউয়ন্থা তার সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইংয়ের পদত্যাগ দাবি করেন। সেনাবাহিনীপন্থি একটি র্যালিতে তিনি ভাষণে ভাইস সিনিয়র জেনারেল শয়ে উইনের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়ার দাবি জানান। জেনারেল মিন অং হ্লাইং এবং জেনারেল শয়ে উইনের মধ্যে সামরিক অপারেশন নিয়ে মারাত্মক দ্বিমত আছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। যদিও ওই বৌদ্ধ ভিক্ষুকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে সেনাবাহিনীর ভেতরে অসন্তোষের কারণে পরে তাকে ছেড়ে দেয় জান্তা সরকার। আর এখন ক্রমাগত শক্ত ঘাঁটিগুলো হারাচ্ছে সেনাবাহিনী। তা দখল করে নিচ্ছে বিদ্রোহীরা। আত্মসমর্পণ করা সেনাদেরকে মুক্ত করে দিচ্ছে তারা। তাদেরকে আটক না রেখে চলে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে। আত্মসমর্পণ করেছেন ৬ জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। সামরিক আদালত তাদেরকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে ইএও’র কাছে বিভিন্ন এলাকা হারানোর পর আর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য। গ্রামবাসীর ওপর হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে বোমা ফেলা এটাই নির্দেশ করে যে, সেনাবাহিনী বেপরোয়া অবস্থায় আছে।
আমাদের দেশে আছে শান্তি?