ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বা জে ট প্রতিক্রিয়া

বাজেটে অলিগার্ক আমদানির নামে পাচার, এবং...

রুমিন ফারহানা
২৭ জুন ২০২২, সোমবার
mzamin

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে যেসব সমস্যা রয়েছে যেমন চরম মূল্যস্ফীতি, আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্যহীনতা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কমতে থাকা, বিনিয়োগ স্থবির, কর্মসংস্থানের চরম সংকট এসব কোনোটির ক্ষেত্রেই কার্যকরী দিকনির্দেশনা নেই।

খুব বেশিদিন আগের কথা না যখন শ্রীলঙ্কা ছিল উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ, যার মাথাপিছু আয় ছিল ৪০০০ ডলার এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানব সূচক উন্নয়নে দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশের চাইতে অনেক উন্নত। এখন শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট সারা পৃথিবীর আলোচিত বিষয়। সেই শ্রীলঙ্কা আজ দেউলিয়া। শ্রীলঙ্কার সেই সময়ের পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশে। শ্রীলঙ্কার পর্যালোচনায় যখন বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে তখন বেশ কিছু অর্থনীতিবিদ বলছেন বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মত সমস্যায় পড়ার কোন সম্ভাবনাই নেই, বাংলাদেশ একেবারে নিরাপদ ইত্যাদি। তবে এই আকালেই কিছু অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের অবশ্যই সেই ঝুঁকি আছে এবং বাংলাদেশ এখনই যদি খুব সতর্ক না হয় তাহলে দ্রুতই বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।    

 শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার প্রেক্ষাপটে উত্থাপিত এবারের বাজেটে কথা ছিল বাংলাদেশ যেন সেই পথে না যায় তার একটা ভালো দিকনির্দেশনা দেয়া, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা বলা, বিশেষ করে সময়টি যখন ঠিক করোনা পরবর্তী এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সময়। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে যেসব সমস্যা রয়েছে যেমন চরম মূল্যস্ফীতি, আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্যহীনতা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কমতে থাকা, বিনিয়োগ স্থবির, কর্মসংস্থানের চরম সংকট এসব কোনোটির ক্ষেত্রেই কার্যকরী দিকনির্দেশনা নেই।    

অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ: বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির ৬টি চ্যালেঞ্জের প্রথমটিতেই বলেছেন- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। বাজেট বক্তৃতার ২৪ পৃষ্ঠার ৪৩ পয়েন্টে বলেছেন, ‘সরকার দেশে বর্তমানে বিরাজমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চায়। 

এই কৌশল অর্থমন্ত্রীর অর্থনীতি বোঝাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।

বিজ্ঞাপন
বর্তমান মূল্যস্ফীতি কস্ট পুশড অর্থাৎ পণ্যের উৎপাদন খরচ কিংবা আমদানি মূল্য বৃদ্ধিজনিত; ডিমান্ড পুলড নয় অর্থাৎ চাহিদার অনেক বৃদ্ধিজনিত কারণে হয়নি যে চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে এটি কমানো যাবে।  সর্বোপরি বর্তমানে যখন সরকার বলছে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কিছু বেশি, তখন অর্থনীতির থিংক ট্যাংকগুলো বলছে মূল্যস্ফীতি এর দ্বিগুণেরও বেশি। জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি তৈরির জন্য কথা ছিল একেবারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সব ধরনের শুল্ক পুরোপুরি তুলে দেয়া, কিন্তু সেরকম কোনো পদক্ষেপ নেই। 

সামাজিক নিরাপত্তা: চরম মূল্যস্ফীতির সময় মানুষ যখন আধাপেটা খেয়ে, না খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে তখন জরুরি ছিল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অনেক বেশি বাড়ানো। করোনায় দুই কোটির বেশি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে গেছে। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র হয়েছে আরও অসংখ্য মানুষ। অথচ ভাতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা একটিও বাড়ানো হয়নি। বাড়ানো হয়নি ভাতার পরিমাণও। 

বর্তমানে ভয়ঙ্কর মূল্যস্ফীতির দেশে মাসে এই সামান্য ৫০০ টাকা দিয়ে কী হয়?   অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়েছে সরকার আরেকটি সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে’। এই কার্যক্রমে চালের কেজি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

ভর্তুকি দিয়ে অলিগার্কদের পকেট আরও ভারী করা: গরিব মানুষের নাভিশ্বাস তৈরি করা বাজেটে অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা তুলে দিচ্ছেন সরকারের কিছু অলিগার্ক-এর হাতে। এবারের বাজেটে ভর্তুকি খাতে রাখা হয়েছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা যার প্রধান অংশ যাবে বিদ্যুৎ খাতে। এটা এখন স্পষ্ট, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে কিংবা কম সক্ষমতায় চালিয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের হাতে ক্যাপাসিটি চার্জ এবং বিদ্যুৎ কেনার নামে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে দেয়া হবে আগের বছরগুলোর মতো। যেমন গত ১০ বছরে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও কেন্দ্রগুলো ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ তুলে নিয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা।  

 টাকা পাচার বৈধ: বিদেশে পাচার হওয়া টাকা বৈধ করা এবং দেশে ফেরত আনার নামে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ হারে কর ধার্য করে প্রশ্নাতীতভাবে সেগুলো প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে টাকা ফেরত আসার কোনো কারণ নেই। তবে সরকারের এই পদক্ষেপ তাদের আবার এই সাহস দিয়েছে- কখনো কোনো দেশ যদি এমন পাচারকারীদের ধরপাকড় শুরু করে তাহলে সেই টাকা আবার তারা নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। বলা বাহুল্য টাকা ফেরত আনার জন্য নয়, পাচারকারীদের নিশ্চিন্ত করার জন্যই এই পদক্ষেপ।   

সাম্প্রতিক সময়ে আমদানির নামে টাকা পাচার: সম্প্রতি দেশের ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্যের সংকটকে দেখাচ্ছেন অনেকেই। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে গড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি হয়েছে। আর এপ্রিল মাসে এটা পৌঁছেছিল ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে।  করোনায় মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা তলানিতে চলে গেছে। তাতে সব রকম পণ্য আমদানির পরিমাণ অনেক কমে যাবার কথা। কিন্তু তৈরি পোশাকশিল্পে প্রবৃদ্ধির কারণে কিছু আমদানি বৃদ্ধি পণ্যের মূল্য এবং জাহাজ ভাড়া বাড়ার কারণে আমদানি করা পণ্যের পরিমাণ না বাড়লেও ডলারের অঙ্ক কিছুটা বাড়ার কথা। কিন্তু এটা বাংলাদেশের মাসিক আমদানি ৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাবার কারণ নেই। 

 আসলে কয়েক মাসে বাংলাদেশ থেকে আসলে বড় অঙ্কের টাকা আমদানির নামে অর্থাৎ ওভার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে পাচার হয়েছে। ২০১৪ এর নির্বাচনের আগে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছিল। আরেকটি নির্বাচন সামনে রেখে পাচার আবার বাড়ছে।  সাম্প্রতিক রিপোর্টে জিএফআই জানিয়েছে তারা বাংলাদেশের রিপোর্ট তৈরি করেছে পুরনো তথ্য দিয়ে কারণ ২০১৫ সাল থেকে সরকার জাতিসংঘে আমদানি রপ্তানির তথ্য দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পাচারের তথ্য লুকানোর এই চেষ্টাই প্রমাণ করে সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ লোকজন টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত। আবার অনেকেই এমন টাকার হিস্যা পায়।   

নিম্নবিত্ত মানুষের ওপরে আয়কর: বাৎসরিক আয়ের করমুক্ত সীমা ৩ লাখ টাকা বৃদ্ধি করা জরুরি ছিল অনেক আগেই। শুধু মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলেও তো এই সীমা বাড়ার কথা। মাসে মাত্র ২৫ হাজার টাকার বেশি উপার্জন করলেই কাউকে অর্থাৎ একজন নিম্নবিত্ত মানুষকে আয়কর দিতে হবে।  

অথচ কয়েক দিন আগেই সিপিডি হিসাব করে দেখিয়েছে প্রয়োজনমতো মাছ ও মাংসের দাম যোগ করলে ৪ সদস্যের একটি পরিবারে মাসে শুধু খাদ্য বাবদ ব্যয় দাঁড়ায় ২১ হাজার ৩৫৮ টাকা। তাদের বাসা ভাড়া, সন্তানের শিক্ষা, আর পরিবারের স্বাস্থ্য ব্যয় যোগ করলে অঙ্কটি কত হয়?  অতি সামান্য আয়ের ওপরে যখন আয়কর নির্ধারিত হয় এই দেশে তখন উচ্চ আয়ের মানুষের বেতনের বাইরে বিভিন্ন সুবিধার করসীমা বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এতে তারা আরও লাভবান হবে। বড় ব্যবসায়ীদের ব্যবসার কর্পোরেট ট্যাক্স কমেছে এই বছরও।  

জিডিপি বাড়িয়ে দেখানো: এদিকে এবার ৪৪ লাখ টাকার বেশি জিডিপি দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি’র আকারকে অনেক বাড়িয়ে দেখানো হয় প্রবৃদ্ধি আর মাথাপিছু আয়কে বেশি দেখানোর জন্য। মজার ব্যাপার মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে দেখানোর জন্য শুধু যে জিডিপির আকার বাড়িয়ে দেখানো হয় তা না, কমিয়ে দেখানো হয় জনসংখ্যা।  এছাড়াও জিডিপির আকার বাড়িয়ে দেখালে জিডিপি’র অনুপাতে ঋণের পরিমাণ কম দেখা যায়। বর্তমানে সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে জিডিপির অনুপাতে ঋণ ৪৫ শতাংশ পার হয়েছে। 

জিডিপির সঠিক হিসাব হলে দেখা যাবে এটা সম্ভবত ৭০ শতাংশে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ আমরা বিপদসীমা পেরিয়ে গেছি বেশ আগেই। এবারের বাজেটে জনগণের করের টাকার এক-পঞ্চমাংশই যাবে ঋণের সুদ পরিশোধের পেছনে। বর্তমান বাংলাদেশে একটি শিশু জন্ম নেবে মাথার ওপরে ৯৬ হাজার টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে।  

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প: গত কয়েক অর্থবছরের মতো এবারো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মতো অতি ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা কোনোভাবেই যৌক্তিক ছিল না। বিশেষজ্ঞদের মতে এটা এক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। রুশ অর্থায়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটিতে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুতের মূলধন ব্যয় হবে ৫০ লাখ ডলার। অথচ ভারতে একই দেশ রাশিয়ার নির্মিত কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রে ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে প্রতি মেগাওয়াটে ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ কেন্দ্রের মূলধন ব্যয় বাবতই লুটপাট হচ্ছে কমপক্ষে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এই প্রকল্প ভয়ঙ্কর ঝুঁকি তৈরি করতে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে।  

এরকম আরেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ। এর জন্য এখন পর্যন্ত যে ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে সেটা বাড়বে অনেক। একইভাবে অনেক টাকার শ্রাদ্ধ করা হয়েছে পায়রাকে গভীর সমুদ্রবন্দর বন্দর বানানোর নামে। একই রকম অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প কক্সবাজার থেকে রামু পর্যন্ত রেললাইন, যাতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের কথা বলা হচ্ছে, যেটা বাড়বে নিশ্চিত।   এতেই শেষ নয়। প্রস্তাব করা হচ্ছে নতুন নতুন আরও সব অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। এমন কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে ু ১) দ্বিতীয় পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২) ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন, ৩) দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, ৪) পূর্বাচলে ১১০ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, ৫) শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ৬) পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, ৭) নোয়াখালী বিমানবন্দর ইত্যাদি। এটি আমার কথা নয়, এটি বলেছেন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মইনুল ইসলাম। ওদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরও কিছু প্রয়োজনীয় প্রকল্পের সবগুলোতে লুটপাট আর বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অনেক বেশি।

 ফলে সেগুলো প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উপযোগিতা দেয়া দূরেই থাকুক, পরিণত হবে শ্বেতহস্তীতে। 

বিদেশি ঋণ আশঙ্কাজনক: এসবের ফল হয়েছে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের নিট বিদেশি ঋণের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের নিট বিদেশি ঋণ হয়েছে ২০ গুণ। বলা হচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির অনুপাতে বৈদেশিক ঋণ ১৫ শতাংশের মতো। জিডিপির সঠিক হিসাব করা হলে বিদেশি ঋণ এর মধ্যেই জিডিপির ২৫ শতাংশের মতো হবে। যেভাবে বিদেশি ঋণ-নির্ভর একের পর এক মেগা প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে তাতে সামনের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে, সেটা আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছি। অনেকগুলো বড় লোনের গ্রেস পিরিয়ড চলছে এখন। 

যা শেষ হলে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে। সঙ্গে নতুন যুক্ত হতে থাকা নতুন সব ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষে অনেক বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।     এদিকে বর্তমান ডলারের সংকটের সময় রেমিট্যান্স আসা অনেক কমে গেছে। এর সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলেই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিরাট অঙ্কের টাকা পাচার হচ্ছে, যা রিজার্ভ কমিয়ে দিচ্ছে অতি দ্রুত।  আমার আলোচনায় দেখালাম দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে শ্রীলঙ্কার মতো সব ক’টি ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর এই দেশে বিরাজমান এবং প্রস্তাবিত বাজেট সেগুলোকে আরও ত্বরান্বিত করবে। 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status