ঢাকা, ৮ মে ২০২৪, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

নতুন বছরে নতুন রাজনৈতিক প্রস্তাবনা

দিদারুল ভূঁইয়া
২ জানুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

সরকার, প্রশাসন, সরকারি দল যে কেবল এমন নাশকতাই করছে, তা নয়। তারা গত দুই মাসে বিএনপি’র অন্তত ৩০ হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, মামলা দিয়েছে অগণিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র মঞ্চসহ প্রায় সকল বিরোধী দলের আন্দোলনে বাধা দিয়েছে, হামলা করেছে, মামলা করেছে। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নির্বাচন খেলা দেখাতে গিয়ে নিজেদের কর্মীদেরও সহিংসতার মুখে ফেলে দিয়েছে। তাতে ১০ দিনে প্রায় একশ’ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, মারা গেছেন কয়েকজন, আহত অনেকে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ সংঘাতের ঘটনাগুলোকে তত গুরুত্বপূর্ণ কিছু না বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে নির্বাচন নির্বাসিত হয়েছে। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, এরপর ১৮ সালে রাতের ভোটের নির্বাচনের পর এবার ডামি নির্বাচন। এটা এখন প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়, গত দুই নির্বাচনের মতো এবারো ২০২৪ সালে দেশে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। হতে যাচ্ছে একটা ডামি নির্বাচন। আর এটা এখন খুবই অনিশ্চিত, কবে আবার এদেশে একটা প্রকৃত নির্বাচন হবে, আদৌ কখনো আর হবে কিনা?

বাংলাদেশে এর আগে যে কখনো এমন নির্বাচনের নামে সিলেকশন হয় নাই, তা কিন্তু না।

বিজ্ঞাপন
১৯৭৩ সালে দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই এর যাত্রা শুরু। ‘রেডিও টেলিভিশনে অপজিশন নেতাদের বক্তৃতা দূরের কথা, যানবাহনের অভাবে তারা ঠিকমতো প্রচার চালাতেও পারিলেন না। 
(আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর- আবুল মনসুর আহমদ, পৃঃ ৬২৬)
কেবল আওয়ামী লীগ আমলেই এমন ভুয়া নির্বাচন হয়েছে, তাও না। 
বিএনপি, জাতীয় পার্টিও এদেশে সরকার গঠন করেছে, জামায়াতসহ অনেকগুলো ডানপন্থি দল এবং অনেক বামদলও বিভিন্ন সরকারের শরিক হয়েছে। কোনো দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে এদেশে সরকারি দল কখনোই হারে নাই। আবার অদলীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচনে আগের দলীয় সরকার কখনোই জিতে নাই।

উপরের বক্তব্যের সারাংশ হলো- কোন দল সেটা বিষয় না, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হয় নাই। হবার ন্যূনতম কোনো সম্ভাবনাও নাই। 
২৪ সালের নির্বাচনের নামে যেটা হতে যাচ্ছে, সেটা মূলত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, একটা ডামি নির্বাচন। এখানে সকল প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মার্কা নৌকা। আওয়ামী লীগ, ডামি লীগ, বিদ্রোহী লীগ, স্বতন্ত্র লীগ, জোট লীগ, কিংস পার্টি লীগ, জাতীয় পার্টি লীগ-সবাই নৌকা মার্কার জন্য আপ্রাণ ছুটেছেন। নৌকা নিশ্চিত করার জন্য কেউ অভিমানে গাল ফোলানো, কোথাও প্রতিক্রিয়ার ভাব দেখানো আবার কেউ কেউ একরকম মারামারিও করেছেন। এর মানে এই না, নৌকার বিপুল জনসমর্থন তৈরি হয়েছিল। বরং নৌকার জনসমর্থন অনেকাংশে কমেছে। এই কাড়াকাড়ি, কামড়াকামড়ির কারণ এরা সবাই জানেন, দলীয় সরকারের অধীনে এই নির্বাচনে দলীয় মার্কাই দিতে পারে জেতার নিশ্চয়তা। 
‘এবার নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। এর প্রায় সবাই সরাসরি আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন সমঝোতা চায়।’ -প্রথম আলো, ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৩।
সরকারি দল আর তাদের উচ্ছিষ্টভোগীদের এই কামড়াকামড়ির বিপরীতে জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। 

বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সকল বিরোধী দল ইলেকশন প্রতিহত করার ঘোষণা বারংবার দিয়েছে। সর্বশেষ বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ দিয়েছে ভোট বর্জনের ডাক।
তবে এত হাঁকডাকের পরও বিশেষত বিএনপি’র রাজপথের আন্দোলনে প্রয়োজন এবং সামর্থ্যের তুলনায় অতি নগণ্য উপস্থিতি বা এক রকমের অনুপস্থিতি আন্দোলনে তাদের সিরিয়াসনেস নিয়ে এমনকি তাদেরই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তুলেছে অনেক অনেক প্রশ্ন, এমনকি হতাশা ও অনাস্থা। এ সমালোচনার সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও স্বীকার করতেই হবে যে সরকারের সর্বোচ্চ জুলুম, লোভ, ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদ এড়িয়ে বিএনপি তেমন কোনো ভাঙনের মুখে পড়ে নাই। অন্য তেমন কোনো বড় নেতা বা দলও রাজাকার, বেইমানের তালিকায় নাম লেখায় নাই। এটা এ আন্দোলনে বিএনপিসহ সকল বিরোধীদলের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় একটা অর্জন। আন্দোলনের নৈতিকতা, জনসমর্থনের বড় প্রমাণও এখানে। জনগণের একটা নৈতিক বিজয়ও বটে।

তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রতিহতের যে লড়াই, তা থেকে বিরোধী মহল এখনো অনেক দূরে। সে তুলনায় ৭ তারিখ বরং অনেক কাছে। ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলে অন্তত একটা বিজয়ের পথে। হোক না সেটা ডামি নির্বাচন। হোক না সেটা বিরোধী দলবিহীন এবং একতরফা নির্বাচন। গণতন্ত্র মঞ্চ নিরবচ্ছিন্নভাবে রাজপথে থেকে মাঠের আন্দোলনের নেতৃত্ব একরকম আদায় করে নিয়েছে। অন্য প্রধান বিরোধী দলগুলোর বর্তমান প্রয়োজন এবং সামর্থ্যের তুলনায় অনেকাংশে দুর্বল আন্দোলন তার একটি কারণ। এ ছাড়া ভিন্ন কয়েকটা ছোট ছোট আন্দোলন অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। 
ফ্যাসিবাদ বিরোধী কবি-সাহিত্যিকরা রাজপথে নেমেছেন, গান-কবিতা নিয়ে। পরপর দুটি আদালতে জুতা নিক্ষেপের ঘটনা সামগ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর জনগণের আক্রোশের প্রমাণ। শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবির পাশাপাশি শ্রম আইনে তাদের হিস্যার দাবি তুলেছেন। 

এসব জনসমর্থিত প্রতিবাদ ও আন্দোলনের বিপরীতে সরকারি দল নাশকতার পন্থা অবলম্বন করছে। ট্রেনলাইন কাটা, ট্রেনে আগুন দেয়া- এসব ভয়াবহ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জন নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে, জনগণের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বিপুল। কেউ কেউ দাবি করার চেষ্টা করছেন, এসব আন্দোলনরত বিরোধীদের কাজ। কিন্তু তাহলে সরকার যে এতদিনে পুরো ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করে প্রমাণসহ জাতির সামনে উত্থাপন করতো, সেটা তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন। এবং এখন পর্যন্ত যতটুকু তথ্য প্রমাণ মিডিয়ার কল্যাণে আমাদের সামনে এসেছে, তাতে এসব নাশকতায় সরকার, প্রশাসন ও সরকারি দলের অংশগ্রহণ ও সহায়তার প্রমাণ বরং স্পষ্ট হয়েছে।

সরকার, প্রশাসন, সরকারি দল যে কেবল এমন নাশকতাই করছে, তা নয়। তারা গত দুই মাসে বিএনপি’র অন্তত ৩০ হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, মামলা দিয়েছে অগণিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র মঞ্চসহ প্রায় সকল বিরোধী দলের আন্দোলনে বাধা দিয়েছে, হামলা করেছে, মামলা করেছে। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নির্বাচন খেলা দেখাতে গিয়ে নিজেদের কর্মীদেরও সহিংসতার মুখে ফেলে দিয়েছে। তাতে ১০ দিনে প্রায় একশ’ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, মারা গেছেন কয়েকজন, আহত অনেকে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ সংঘাতের ঘটনাগুলোকে তত গুরুত্বপূর্ণ কিছু না বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ২০০৭ সালে ঘোষণা দিয়ে লগি বৈঠার যুদ্ধ করেছে। পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য করেছে। তাদের ক্ষমতালিপ্সার কাছে এমনকি নিজের দলের নেতাকর্মীদের জীবনও যে তুচ্ছ, এবার তারা সেটাও প্রমাণ করেছে।

একথা মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, নির্বাচনের দিন যত এগোবে, এমন দলের মধ্যে, বিরোধীদের এবং এমনকি সাধারণ নাগরিকদের উপর সন্ত্রাস, জুলুম, নিপিড়ন বাড়াবে আওয়ামী লীগ। তার উপর তারাই ঘোষণা করেছে মার্চ নাগাদ দেশে দুর্ভিক্ষ হতে পারে। বিদেশি বিভিন্ন স্যাংশনের হুমকিও আছে। ফলস্বরূপ দেশে একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।

সমাধানের পথ আসলে কী?
সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চয়ই এখনো আলোচনার মাধ্যমে বের করা সম্ভব।
বিদেশি বন্ধুদের সর্বশেষ যে আলোচনার উদ্যোগ, সেটা আওয়ামী লীগ ভেস্তে দিয়েছে এই বলে যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নিজেদের অধীনে এখনি তাদের নির্বাচন করতেই হচ্ছে। তারা দেখিয়েছে সংবিধানের ১২৩ এর ৩(ক) অনুচ্ছেদ, যেখানে সরকারের মেয়াদের শেষ ৯০ দিনের মধ্যে সরকারের অধীনে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।

সংবিধানের ১২৩ এর ৩(খ) অনুচ্ছেদ তারা বেমালুম চেপে গেছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এখনো সংসদ ভেঙে দিয়ে সকল দল মিলে আলাপ-আলোচনা করে জাতীয় সমঝোতার ভিত্তিতে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার সুযোগ আছে। পরবর্তী সরকার সে সমঝোতাকে বিল হিসেবে পাস করিয়ে নিবে, এতটুকু আস্থার জায়গায় আসাও এখনো নিশ্চয় অসম্ভব নয়। 
এ বিষয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব জাতির সামনে পেশ করেছে। প্রস্তাবটি

নিম্নরূপ: 
১। ৭ই জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে সংবিধানের ১২৩(৩)(খ) অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে হবে।
২। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে নির্বাচন পরিচালনাসহ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে ন্যূনতম সমঝোতার ভিত্তিতে ‘জাতীয় সমঝোতা সনদ’ গ্রহণ করতে হবে।
৩। পরবর্তী সংসদের প্রথম অধিবেশনে গৃহীত ‘জাতীয় সমঝোতা সনদ’ এর ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের জন্য বিল পাস করতে হবে।
এ প্রস্তাবে বেশ মেরিট আছে বলতেই হবে। ইতিমধ্যে অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্লেষক একই রকম আলোচনা শুরু করেছেন। দেশ যখন একটা সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে, তখন সংবিধানসম্মত এ প্রস্তাব দেশটাকে বাঁচাতে পারে। 

নতুন বছরের এ প্রাক্কালে প্রশ্ন হচ্ছে আওয়ামী লীগ কী দেশটাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে? তাদের অতীত ইতিহাস বলে যে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে তারা দেশকে এমনকি দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলতেও দ্বিধা করে না। আবার দুর্ভিক্ষ পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বেশি মূল্য চুকিয়েছে। 
এর কোনোটাই এদেশ আর চায় না।

পাঠকের মতামত

আসলে যে যেমতের মানুষ। আজ যদি বিএনপি ঠিক এই কাজটা করত, তাহলে দিদারুল সাহেব তার পক্ষে হাজারো যুক্তি দাড় করাতো। বিএনপিকে নির্বাচন এ আনার জন্য আওয়ামী লীগের কি করনীয় ছিল তা দিদারুল সাহেব বলেন নাই। কোন বড় রাজনৈতিক দল আরেকজনকে ক্ষমতায় আনার জন্য ব্যাস্ত হয় না, এটা কখনো হয় নি, হবেও না।

Mohsin
১ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৬:৫৫ অপরাহ্ন

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সম্মন্ধে সংবিধানের ব্যাখা ও নিয়মকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিকৃত করে মিথ্যা বলার জন্য আগামী তিনটি সংসদ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে অযোগ্য করতে হবে।

mohd. Rahman ostrich
১ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৩:৫৯ অপরাহ্ন

চমৎকার সমস্যা মাধান প্রস্তাবনা। তবে, উলুবনে মুক্ত ছড়িয়ে লাভ হয় না। আওয়ামী লীগ কী দেশটাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে? না, আসবে না।

Mortuza Huq
১ জানুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ১:৫০ অপরাহ্ন

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status