বাংলারজমিন
মানিকগঞ্জে সাজার প্রায় দেড় যুগ পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে
২৪ জুন ২০২২, শুক্রবারমানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সিরাজুল ইসলাম (৪০) নামের এক আসামিকে সাজার দেড় যুগ পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সে গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতো। বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকা থেকে র্যাব সিরাজুলকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৪ এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার সিরাজুলের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বারাহির চর গ্রামে। তিনি জামিনে বের হয়ে পালিয়ে গিয়ে নিজেকে আড়াল করতে সিরাজ নাম ধারণ করে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর গ্রামকে বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে। তবে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে মানিকগঞ্জ সদরের বাড়াইল চর ব্যবহার করে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে প্রায় দেড় যুগ ধরে সে পলাতক ছিল। র্যাব জানায়, ২০০২ সালের জুলাই মাসে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামশা গ্রামের আবদুল জলিলের মেয়ে জুলেখা বেগমকে বিয়ে করে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে তাকে বেশকিছু নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার এবং আসবাবপত্র দেয়া হয়। এরপর আরও যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে সিরাজুল মারধর করতো। এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হলে সিরাজুল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ২০০৩ সালের ৬ই ডিসেম্বর পূর্বপরিকল্পিতভাবে সিরাজুল শ্বশুরবাড়ির অদূরে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এতে সে স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে আট মাসের গর্ভের সন্তানকেও হত্যা করে। পরের দিন পুলিশ নিহত জুলেখার লাশ উদ্ধার এবং পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনায় ওইদিন (২০০৩ সালের ৭ই ডিসেম্বর) নিহত জুলেখার বাবা আবদুল জলিল বাদী হয়ে সিরাজুলসহ তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম, মা রাবেয়া বেগম, খালু শামসুল ইসলাম, দুই চাচা মো. ফাইজুদ্দিন ও মো. তাইজুদ্দিন এবং মামা আবুল হোসেনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ আসামি শামসুলকে গ্রেপ্তার করলে তিন মাস পর জামিনে বের হয়।
র্যাব-৪ এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হাসান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামি সিরাজুল পলাতক ছিল। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে রেজাউল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে রিকশা চালানোসহ দিনমজুরের কাজ করতো। গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে বুধবার তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪ এর দল একটি দল।