বাংলারজমিন
মুন্সীগঞ্জে ভুয়া মালিক সাজিয়ে জমি ক্রয়, তিন পরিবারকে হয়রানি
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
৫ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
তিনজনের পদবি আলাদা। বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপায়। অথচ তাদের তিনজকে বলা হচ্ছে এক বংশের। বানানো হয়েছে গজারিয়ার বাসিন্দা। এভাবে তাদের নামে সম্পদ দেখিয়ে দলিল করে কিনে নিয়েছে একটি চক্র। বিক্রির দলিলে করা সইগুলো বলা হচ্ছে ওই তিন হিন্দু ব্যক্তির। অথচ এসব ঘটনার কিছুই জানে না তারা। শেষ পর্যন্ত হয়েছেন মামলার শিকারও। ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি এলাকায়। ভুক্তভোগীরা হলেন- শৈলকুপা উপজেলার কুমিরাদাহ এলাকার কমল সরকার (৭৪), একই এলাকার সন্তোষ কুমার বিশ্বাস (৪৬) এবং হাটফাজিপুর এলাকার ভুট্টো দাস (৫৪)। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম হুমায়ুন কবির প্রধান। তিনি ইউনিয়নের ছোট রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। জানা যায়, ৭১ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে মালিক হয় মো. আনিসুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি ২০০৫ সালে ওই সম্পত্তি দি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন। ২০১৫ সালে সেই সম্পত্তি থেকে হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ জমি শৈলকুপা কমল সরকার, সন্তোষ কুমার বিশ্বাস এবং ভুট্টো দাস নামের এ তিন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে নিজের নামে দলিল করে নেন। জমি জালিয়াতি করে বিক্রি করার অভিযোগে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তভার পরেছে সিআইডি’র উপর। মামলার সাক্ষ্য দিতে শৈলকুপা থেকে আসেন এ তিন দিনমজুর। এ সময় নিজেদের অসহায়ত্বের কথা বলেন তারা। ভুট্টো দাস বলেন, আমি জীবনে কখনো গজারিয়া আসিনি। এখানে আমার চৌদ্দপুরুষ কারও সম্পত্তি নেই। তাই কারও কাছে সম্পত্তি বিক্রির কোনো প্রশ্নই আসে না। অযথা হুমায়ুন নামে ওই ব্যক্তি আমাদের নাম ব্যবহার করে আমাদের হয়রানি করছে। সন্তোষ কুমার বিশ্বাস ও কমল সরকার বলেন, আমাদেরকে আত্মীয় বানিয়ে অন্য মানুষের সম্পদ জালদলিল করেছে হুমায়ুন।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির প্রধানকে স্থানীয়ভাবে ভূমিদস্যু বলে জানান স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জে জাল-জালিয়াতির অভিযোগে ৮টি ও মারামারির অভিযোগে ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। অভিযোগের বিষয়ে হুমায়ুন বলেন, যে তিনজন তাকে জায়গা লিখে দিয়েছেন তারা পূর্বে গজারিয়াতে থাকতেন। এখন শৈলকুপায় থাকেন। বালুয়াকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান মানবজমিনকে জানান, ভুট্টো, সন্তোষ ও কমল কখনো গজারিয়ার বাসিন্দা ছিলেন না। তাদের মালিক সাজিয়ে হুমায়ুনরা ভুয়া দলিল করেছে।