ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র নেগেটিভ-পজেটিভ

শামীমুল হক
২০ জুন ২০২২, সোমবার
mzamin

সব উন্নয়নই মার খাচ্ছে রাজনীতিতে উন্নয়ন না হওয়ায়। মানুষ আশা নিয়ে বসে আছে রাজনীতির নীতি পরিবর্তন হবে। রাজনীতিকরা একে অপরকে শ্রদ্ধা করবেন। জনসভায় দাঁড়িয়ে আর গালাগাল দেবেন না। আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখবেন না। তারা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবেন। দেশের গুরুতর সমস্যায় এক টেবিলে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।

রাজনীতির আকাশ বরাবরই মেঘাচ্ছন্ন। কখনো ঝড়, ঘূর্ণিঝড় আবার কখনো টর্নেডোর পূর্বাভাস। আর এতে আতঙ্কিত দেশের মানুষ। ঘুমুতে গেলেও শান্তি নেই।

বিজ্ঞাপন
এরকম এক গুমোটবাঁধা আকাশে হঠাৎ রোদ দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। কিন্তু তাদের সে অপেক্ষার পালা কি শেষ হবে? আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র দূরত্ব এখন যোজন যোজন। দা-কুমড়া সম্পর্ক। এ সম্পর্কের উন্নয়ন হবে কি? কীভাবেই বা হবে? দেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতু বিশাল এক অর্জন। আগামী ২৫শে জুন এর উদ্বোধন হবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে  দক্ষিণাঞ্চলের ১৮ জেলা সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানীর সঙ্গে। এ নিয়ে উল্লাস দেশজুড়ে। সরকারি দল এ ইস্যুতে দেশের সকল দলকে এক কাতারে নিয়ে আসতে পারতো। অন্তত চেষ্টা তো করতে পারতো। 

অন্যদিকে এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তেও বিএনপি’র বক্তব্য নেগেটিভ। তাদের কাছে যেন পদ্মা সেতু কিছুই না। এ সেতু নিয়ে বিএনপি নেতাদের নেতিবাচক মন্তব্য মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। বিশ্ব যেখানে এ সেতু নিয়ে অবাক। নিজস্ব অর্থায়নে বিশাল এ সেতু নির্মাণ মোটেও সহজ ছিল না। কঠিন সেই কাজটিই করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে বিএনপি কৃতিত্ব না দিক, চুপ থাকতে পারতো। কিন্তু তারা উদ্ভট কথা বলে নিজেরা হাসির পাত্র হচ্ছে মানুষের কাছে। রাজনীতিতে বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করা নিয়মে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ক্ষেত্র বেছে নিতে ভুল করেছে বিএনপি। অন্য সব বিষয়ের সঙ্গে বিষয়টি গুলিয়ে ফেলেছে। যা করা মোটেও ঠিক হয়নি। আসলে দেশে রাজনৈতিক সম্প্রীতি না থাকায় অনেক কিছুই দেখছে দেশবাসী।

 

 

পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই- যে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্প্রীতি নেই। জাতীয় ইস্যুতে তারা এক টেবিলে বসে আলাপ করে। দেশের স্বার্থে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। যেখানে সরকার সরকারের পথে চলে। বিএনপি বিএনপি’র পথে। অন্য দলগুলোও জোটের পক্ষে সাফাই গায়। কিন্তু সরকারে যারাই থাকুক না কেন তারা কাউকে ডেকে জাতীয় কোনো ইস্যুতে পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজনটুকু আছে বলে মনে করে না। উন্নয়নে বাংলাদেশ এগিয়েছে অনেক। গড় আয় বেড়েছে বহু গুণ। মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। গ্রামে গ্রামে আজকাল আর কুঁড়েঘর দেখা যায় না। সব জায়গায় স্থান করে নিয়েছে ইট, পাথরের দালান। মানুষ এখন আর না খেয়ে মরে না। কিন্তু সব উন্নয়নই মার খাচ্ছে রাজনীতিতে উন্নয়ন না হওয়ায়। সবার আগে তো প্রয়োজন রাজনীতিতে উন্নয়ন। মানুষ আশা নিয়ে বসে আছে রাজনীতির নীতি পরিবর্তন হবে। রাজনীতিকরা একে অপরকে শ্রদ্ধা করবেন। জনসভায় দাঁড়িয়ে আর গালাগাল দেবেন না। আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখবেন না। তারা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবেন। দেশের গুরুতর সমস্যায় এক টেবিলে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। একসঙ্গে সমাধানের পথ খুঁজে নেবেন।

এসবই যেন কথার কথা। বেহুদা প্যাঁচাল। কারণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এখন আগামী নির্বাচন ইস্যুতে দুই মেরুতে অবস্থান করছে। একেবারে বিপরীত সেই মেরু। দুটি দলই তাদের নিজ নিজ অবস্থানে অটল। তাহলে কি হবে আগামী নির্বাচনে? প্রশ্ন, প্রশ্ন আর প্রশ্ন। নতুন নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভোট করে কতোটুকু তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারছে তারাই জানে। কিন্তু স্থানীয়রা যা বলছে, তাতে দেশবাসী আশ্বস্ত হতে পারছে না। কারণ ১০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রের ফলাফলে এগিয়ে ছিলেন সাক্কু। শেষ চারে ছক্কা হাঁকালেন রিফাত। খেল খতম এখানেই। মাঝে একঘণ্টা ফল প্রকাশ বন্ধ ছিল। সন্দেহের সৃষ্টি হলো। আবার ইভিএম যন্ত্রণা দিয়েছে ভোটারদের। সব মিলিয়ে কেমন নির্বাচন হয়েছে দেশবাসীই তা দেখেছে। কথা হলো- সিটি নির্বাচনই শেষ কথা নয়। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সামনের দিনগুলো কেমন যাবে? বিরোধী দলগুলো তাদের দাবি আদায়ে মাঠে আছে। আগামীতে আরও কঠোর হবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় সবকিছু যে ফকফকা হবে সেটা আশা করা ঠিক হবে কি? দু’পক্ষই তো চাইবে জয়ী হতে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী একপক্ষই জয়ের পতাকা হাতে তুলে নেয়। 

 দুই: পৃথিবীতে হায়? সে বেশি চায়/আছে যার ভূরি ভূরি/ রাজার হস্ত/ করে সমস্ত/ কাঙালের ধন চুরি। যথার্থই বলেছেন কবি। চলার পথে কবির এ কাব্য কতো যে মধুর তা সবাই উপলব্ধি করছেন। বাস্তবেও দেখছেন প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত। রাস্তায় বেরুলে ছিনতাইকারী, মলম পার্টি, ব্লেড পার্টি, পকেটমার এমনকি থাবা পার্টির ভয়। যেকোনো সময় তারা তাদের কৌশল প্রয়োগ করে হস্তগত করতে পারে অন্যের ধন, অর্থ। কেউ কেউ এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আবার রাজপথে, ফুটপাথে অনেক ভিক্ষুক আছেন যারা কোটিপতি। ঢাকায় তাদের একাধিক বাড়ি রয়েছে। ভবন রয়েছে। কারও কারও সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। কারও সন্তান সম্মানজনক চাকরি করছেন।

কেউ কেউ মেয়ে বিয়ে দিয়েছে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। এত কিছুর পরও ওইসব ভিক্ষুক এখনো রাজপথে থালা নিয়ে বসেন। ভিক্ষা করেন। বাসায় থাকতে নাকি তাদের ভালো লাগে না। ঘুমের মধ্যেও মাঝে মাঝে বলে ওঠেন- ‘মাগো কিছু দিয়া যান।’ দীর্ঘদিনের অভ্যাস ত্যাগ করা খুব কঠিন। এক ছেলের মতো। ওই ছেলে বিয়ে করেছে। ঘরে নতুন বউ। প্রতিদিন সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। রাতে বাড়ি ফেরে। একদিন বউ তাকে বলছে, তুমি কি করো? ছেলে জবাব দেয় চাকরি করি। বড় চাকরি। ওগো বলো না কি চাকরি? ছেলে কোনো জবাব দেয় না। এভাবে দিন চলতে থাকে। বেশ কিছুদিন পর একরাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন দু’জন। হঠাৎ চিৎকারে বউ ঘুম থেকে জেগে উঠেন। দেখেন স্বামী তার চিৎকার করে বলছেন- ওই লাগেনি জুতা পালিশ...। লাগেনি জুতা পালিশ...। বউয়ের আর বুঝতে বাকি রইলো না তার স্বামী কি করেন। দিনে যা করেন রাতে স্বপ্নের মধ্যেও স্বামী বেচারা তা দেখছেন। তাই ডাকছেন ‘ওই লাগেনি জুতা পালিশ...।’ আসলে অভ্যাস কখনো পরিবর্তন হয় না। এমনকি তা আপনজনের কাছে লুকাতে গেলেও তা প্রকাশ হয়ে পড়ে। কখনো স্বপ্নে কিংবা কখনো মনের অজান্তেই তা প্রকাশ করেন। 

ঘুষখোর অফিসার জীবনে কোটি কোটি টাকা ঘুষ খেয়েও তার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেন না। বাড়ি-গাড়ি, ধন-দৌলত করেও তাদের আফসোস থেকে যায়। তাই তো বনখেকোর বাসার চালের ড্রাম, বালিশের ভেতর থেকে পাওয়া যায় অর্থ আর অর্থ। যে টাকা দেখে সারা দেশ হয় হতবাক। ঘটে বালিশকাণ্ডের ঘটনা। পর্দা কাণ্ডের ঘটনা। দেশের মানুষ যতই ছিঃ ছিঃ করুক এতে তাদের কিছুই যায় আসে না। কেউ তো অভ্যাস বদলায় না। বদলাতে চায় না। সবাই মনে করে তিনি যা করছেন, তা-ই ভালো। এ কারণেই হয়তো ‘কয়লা যায় না ধুলে, অভ্যাস যায় না মরলে’ প্রবাদ বাক্যটি সমাজে প্রচলিত। আর তাই তো কারও কারও জীবনে অভ্যাস পরিণত হয় বদ অভ্যাসে।   

তিন: শহর থেকে এখন মাদক ছেয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। যুব সমাজ দৌড়াচ্ছে সেদিকে। প্রতিদিন কতো হাজার বোতল সাবাড় হচ্ছে? কতো লাখ ইয়াবা বড়ি হাওয়াই মিলিয়ে যাচ্ছে? রাস্তাঘাটে, পথে-প্রান্তরে প্রকাশ্যেই দেখা যায় ইয়াবা নেশায় মত্ত আসক্তরা। শরীর দেখে মনে হয় মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে তারা। তারপরও যেন নেশা তাদের সুখ এনে দিচ্ছে। তাদের শরীর দেখলে আফসোস হয়। কীভাবে সমাজটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে মাদক তা অভাবনীয়। দেখা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করবেন তারাই গোপনে মাদক বিক্রেতা আর ক্রেতাদের সঙ্গে আপস করেন। রফাদফা করেন। দেশের সীমান্ত জেলাগুলো যেন মাদকের গোডাউন। জেলা প্রশাসন জানেন। পুলিশ প্রশাসন জানেন। এতটুকুই সান্ত্বনা। মাঝে মাঝে খবর বেরোয় পুলিশের সদস্যরাই এর সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মাদকের চালান আটক করা হচ্ছে। মাদক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাজধানী ঢাকাসহ জেলায় জেলায় বেসরকারি মাদক নির্মূল কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। পরিবার পরিজন অতিষ্ঠ হয়ে এসব কেন্দ্রে ভর্তি করছে তাদের। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলে। আবার এও শোনা যায় কোনো কোনো মাদক নির্মূল কেন্দ্রেই বসে মাদকের আড্ডা। 

প্রশ্ন হলো- এসব কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসক্তরা কি সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পেরেছেন। না। বেশির ভাগই সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারেননি। কারণ এসব কেন্দ্রে মাস কয়েক থাকার পর বাইরে বেরিয়ে এসে ফের তারা অন্ধকার জগতে পা বাড়ান। এমনও শোনা যায়, কোনো কোনো নিরাময় কেন্দ্রে নিজেরাই আসক্তদের নেশা সরবরাহ করে। ফলে নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা করিয়েও সন্তানদের সুস্থ করতে পারছেন না অভিভাবকরা।

এমন হলে অভিভাবকরা ভরসা করবেন কার ওপর। প্রশ্ন জাগে এর জন্য দায়ী কে? অভিভাবকরা? নাকি বন্ধু-বান্ধবরা? কেউ কেউ বলেন, বন্ধুরাই হলো আসল। ওরাই একজনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আবার কেউ বলেন, অভিভাবক সচেতন হলে এমনটা হতে পারতো না। আসলে দুটো কথাই ঠিক। সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছেÑ নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আসক্তি থাকে বেশি। কিন্তু কেন? মানুষের তো বিবেক রয়েছে। ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। তাহলে দেখা যাচ্ছে আমরা বিবেককে কাজে লাগাচ্ছি না। নিজের সন্তান কিংবা স্বজনরা একটা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে এর বিচার করি অন্যভাবে। আর নিরীহ অন্য কেউ হলে বিচার করি আরেকভাবে। এখানেও বিবেক দংশিত হলো। বিবেক আর সালিশের কথা উঠলেই মনে পড়ে আশুগঞ্জ ফেরিঘাটের সেই নরসুন্দরের কথা। তখন ফেরিতে মেঘনা পারাপার হতো গাড়ি। ব্রিজ ছিল না।

যানজট লেগে থাকতো প্রায় সময়ই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা আসছিলাম। আশুগঞ্জ প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটারব্যাপী যানজট। সবার পেছনে আমাদের গাড়ি। হাঁটতে হাঁটতে সামনে এলাম। গিয়ে বসলাম একটি সেলুনে। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। শেভ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। নরসুন্দর খুবই মনোযোগ দিয়ে শেভ করছে। তাকে বললাম, বাড়ি কোথায়? বললো কিশোরগঞ্জ। ওই যে নদী পেরিয়েই আমাদের গ্রাম। ক’দিন পর পর গ্রামে যাও? উত্তর না দিয়ে দীর্ঘশ্বাস। এরপর বললো, না স্যার গ্রামে যাই না অনেকদিন। কারণ গ্রামে গেলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। ওরা কারা? নরসুন্দরের উত্তর-সমাজপতিরা। কেন কি হয়েছে? নরসুন্দর বলতে লাগলো- বছর দুয়েক আগের কথা। আমাদের পাশের বাড়ির এক মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষক সমাজপতির ছেলে। এ নিয়ে কানাঘুষা। এভাবে চলে গেছে বেশ ক’দিন। সবার চাপে সমাজপতি বাধ্য হলেন সালিশ করতে। গ্রামের মাঠে সবাই এলো। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হলো। ছেলে মেয়ের কথা শোনা হলো। এভাবে ঘণ্টা তিনেক পার হওয়ার পর সমাজপতি রায় দিলেন। 

যেহেতু ধর্ষিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ইজ্জত হারিয়েছে। সেহেতু তাকে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। আর এ টাকা দেবে সমাজপতির ছেলে। নরসুন্দর বললো, স্যার রায় শুনে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। দাঁড়িয়ে গেলাম। বললাম, আমার একটি কথা আছে। সবাই জানতে চাইলেন, কি কথা? আমি বললাম, ধর্ষণের বিচার যদি ২০ হাজার টাকা-ই হয়, তাহলে আজ রাতেই আমি সমাজপতির মেয়েকে ধর্ষণ করবো। কাল ইজ্জতের মূল্য হিসাবে ২০ হাজার টাকা দিয়ে দেবো। কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সমাজপতির চামচারা আমার ওপর তেড়ে আসলো। আমি ওই রাতেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসি। আর গ্রামমুখো হইনি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেছে। আজ আর সেখানে ফেরিঘাট নেই। হয়েছে ব্রিজ। গাড়ি দ্রুত পেরিয়ে যায় ব্রিজ দিয়ে। কিন্তু আজও নরসুন্দরের কথা মনে পড়ে। নরসুন্দরের জাগ্রত বিবেক তাকে বাড়িছাড়া করেছে। মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে ওই নরসুন্দর কি বাড়ি যেতে পেরেছে? 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status