রকমারি
২৭ বছর মামলা চলার পর ৮৯-এর বৃদ্ধের ডিভোর্সের আর্জি খারিজ
মানবজমিন ডিজিটাল
(১১ মাস আগে) ১৪ অক্টোবর ২০২৩, শনিবার, ২:১৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন
ভারতের শীর্ষ আদালত একজন ৮৯ বছরের প্রৌঢ়ের বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। স্ত্রীর সঙ্গে ২৭ বছর সংসার করার পর তাকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন নির্মল সিং পানেসর। তখন তার বয়স ৬০ পেরিয়ে গেছে। ভারতে অনেক দম্পতিই বিবাহ বিচ্ছেদের পথে যেতে চান না। প্রতি ১০০টি বিবাহের মধ্যে মাত্র একটিই ক্ষেত্রে এই পরিণতি দেখা যায়। প্রায়ই দম্পতিরা অসুখী বিবাহ টিকিয়ে রাখে পারিবারিক এবং সামাজিক চাপের কারণে। যারা বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন তাদের অবশ্যই আদালত থেকে অনুমোদন পেতে হবে।
নিষ্ঠুরতা, সহিংসতা বা অযৌক্তিক আর্থিক দাবির প্রমাণ উপস্থাপন করলে তবেই আদালত তা মঞ্জুর করে। ১৯৬৩ সালে বিয়ে হয়েছিল নির্মল সিং পানেসর ও পরমজিৎ কৌর পানেসারের। কিন্তু ১৯৮৪ সালে অর্থাৎ বিয়ের প্রায় দুই দশক পেরনোর পর আচমকাই তাঁদের সম্পর্কে দারুণ অবনতি হয়। আসলে সেই সময় নির্মলের বদলি হয়ে যায় চেন্নাইয়ে। ভারতীয় বিমান বাহিনী যখন তাকে সেখানে পোস্ট করে তখন তার সাথে দক্ষিণের চেন্নাই শহরে যেতে অস্বীকার করেছিলেন পরমজিৎ ।
১৯৮৪ সালেই তাদের সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরেছিলো যা ক্রমেই গভীর হতে থাকে। নির্মল ১৯৯৬ সালে নিষ্ঠুরতা এবং স্ত্রী দ্বারা পরিত্যাগের ভিত্তিতে প্রথম বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন, ২০০০ সালে একটি জেলা আদালত মঞ্জুর করেছিল কিন্তু পরমজিতের আবেদনের পরে সেই বছরে তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন নির্মল ।
দেখতে দেখতে দুই দশক পেরিয়ে মামলা পৌঁছায় শীর্ষ আদালতে। অবশেষে এবারও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল নির্মল ডিভোর্স পাবেন না। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, "বিবাহ প্রতিষ্ঠানটিকে এখনও ভারতীয় সমাজে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে একটি ধার্মিক, আধ্যাত্মিক এবং মানসিকসম্পর্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।"
রায়ে বলা হয়েছে যে, বিচ্ছেদ মঞ্জুর করা হলে পরমজিতের ওপর "অবিচার" করা হবে, যিনি আদালতকে বলেছিলেন যে তিনি বিবাহবিচ্ছেদের "কলঙ্ক" নিয়ে মরতে চান না। তিনি আরও বলেছিলেন যে, তাদের "পবিত্র সম্পর্ক"কে সম্মান করার জন্য তিনি সমস্ত প্রচেষ্টা করেছিলেন এবং এখনও স্বামীর বৃদ্ধ বয়সে তিনি তার দেখভাল করতে প্রস্তুত। এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে।
ভারতের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকলগ রয়েছে, কিছু মামলার সমাধানে পৌঁছাতে কয়েক দশক সময় লাগে। ভারত সরকার গত বছর বলেছে, সারা দেশে আদালতে প্রায় ৪৩.২ মিলিয়ন মামলা বিচারাধীন ছিল।
সূত্র : ডন