ঢাকা, ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

খোলা চোখে

স্বপ্নের সেতু উদ্বোধন এবং রাজধানীর যানজট

লুৎফর রহমান
১৬ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
mzamin

প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড় যুক্ত করেছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে পদ্মা পারাপারের দিনগুলো ২৫শে জুনের পর থেকে অতীত হতে শুরু করবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের জন্য এই সেতু নতুন করে জেগে ওঠার এক হাতিয়ার। অবহেলিত জনপদের মানুষের সামনে নতুন এক সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে পদ্মা সেতু। এই অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, পর্যটন শিল্পে এই সেতু অপার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। স্বপ্ন জাগিয়েছে মানুষের জীবন জীবিকার উন্নয়নে। খরস্রোতা পদ্মার দুই তীরকে এক করে এই স্বপ্নমালা গাঁথার কাজটি অবশ্য সহজ ছিল না। স্থপতি প্রকৌশলীরা যেমন অসাধ্য সাধনের মতো এক কাজ করেছেন, তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার সাহসী চরিত্রটিকে আরেকবার জানান দিয়েছেন। নিজেদের অর্থে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ নিজের সক্ষমতারও জানান দিয়েছে বিশ্বকে। 

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২৫শে জুন খুলছে পদ্মা সেতু। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নের দুয়ার খুলে দেবেন। 

 

 

পরদিন থেকে পদ্মার ওপর দিয়ে বাধাহীনভাবে ছুটতে শুরু করবে যানবাহন। এক সময়ের দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি আর কষ্টের ইতি টেনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে রাজধানী হয়ে উঠবে ঘরের কাছের কোনো গন্তব্য। পুরো দিনের ভ্রমণ দূরত্ব কমে দাঁড়াবে কয়েক ঘণ্টায়। পদ্মা সেতু নিঃসন্দেহে দেশের স্থাপত্য ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। এই দেশের মানুষের সাহস আর অদম্য মানসিকতারও দৃঢ় এক প্রতিকৃতি। পদ্মা জয়ের এই সাফল্য পুরো জাতির। এই সাফল্য সরকারের। এই সাফল্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তার সাহসী ভূমিকার কারণেই নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এই সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে লক্ষ্য অনুযায়ী। 

পদ্মার এমন সম্ভাবনার হাতছানির মধ্যেও নতুন এক ভয় জাগছে রাজধানীর মানুষের মনে। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত যানজটের আগুনে পদ্মার গাড়ির স্রোত নতুন করে ঘি ঢেলে দিতে পারে বলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা আভাস দিয়েছেন। বলা হচ্ছে, এতদিন ফেরির ভোগান্তির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতো। পদ্মা সেতু চালু হলে এই রুটে যাওয়া যানবাহন মুখ ফিরিয়ে নেবে। বিশেষজ্ঞদের একটি পরিসংখ্যান বলছে, সেতু চালুর পর পাটুরিয়া-দৌলদিয়া রুট ৪০ শতাংশের মতো আকর্ষন হারাবে। তার মানে এই রুটের ৪০ শতাংশ যানবাহন পদ্মা সেতু ব্যবহার করবে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চেহারা পাল্টে যাবে। প্রভাব ফেলবে পুরো দেশের অর্থনীতিতে। বাড়বে  মোট দেশজ উৎপাদন বা জিপিডি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, মাছ, ফলমূল দ্রুত পরিবহন করা যাবে দেশের অন্য জেলায়। একইভাবে অন্য জেলাগুলোতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে পৌঁছে যাবে নদী বিধৌত এই জনপদে। পদ্মা বাধা কাটায় শিল্পায়ন সহজ হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ সমস্যার সংকট কেটে যাবে। খুলবে বিনিয়োগের নতুন দুয়ার। কাজের জন্য দক্ষিণের জেলাগুলো থেকে ঢাকা ছুটে আসা মানুষের স্রোত কমে যাবে শিল্প বিনিয়োগের ছোঁয়ায়। 

পদ্মার এমন সম্ভাবনার হাতছানির মধ্যেও নতুন এক ভয় জাগছে রাজধানীর মানুষের মনে। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত যানজটের আগুনে পদ্মার গাড়ির স্রোত নতুন করে ঘি ঢেলে দিতে পারে বলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা আভাস দিয়েছেন। বলা হচ্ছে, এতদিন ফেরির ভোগান্তির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতো। পদ্মা সেতু চালু হলে এই রুটে যাওয়া যানবাহন মুখ ফিরিয়ে নেবে। বিশেষজ্ঞদের একটি পরিসংখ্যান বলছে, সেতু চালুর পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট ৪০ শতাংশের মতো আকর্ষন হারাবে। তার মানে এই রুটের ৪০ শতাংশ যানবাহন পদ্মা সেতু ব্যবহার করবে। একইসঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ বেড়ে যাবে দক্ষিণের জেলার সঙ্গে। 

পদ্মা সেতু হয়ে দিনে ২৫ হাজারের বেশি যানবাহন চলবে। বছর বছর গাড়ি চলাচলের এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এই যানবাহন পুরোটাই আসা যাওয়া করবে রাজধানীর উপর দিয়ে। বিশেষ করে রাজধানীর দুটি সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এসব যানবাহন যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। এই দু’টি সড়কের একটি বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে গেছে। অন্যটি জুরাইন-পোস্তাগোলা হয়ে গেছে। এই দুই সড়কে এমননিতে যানজট নিত্যদিনের চিত্র। সেতু চালু হলে এই যানজট নতুন রূপে দেখা যেতে পারে। তখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোনো জেলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দ্রুত ঢাকায় পৌঁছার পর নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে নতুন ভোগান্তির কারণ হতে পারে ঢাকার যানজট। পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নেয়ার পরই এই যানজটের বিষয়টি সামনে এসেছিল। তখন বলা হচ্ছিল রাজধানীর যানজট এড়াতে আউটারে এক্সপ্রেসওয়ের মতো চার লেনের রিং রোড করা হবে। এমন সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও নেয়া হয়। যদিও এই প্রকল্পের এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। 

যানজটের কারণে রাজধানী এখন অনেকের কাছে অভিশাপের মতো। বিশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থা। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন আর সেবা সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা দিনে দিনে নগরের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। জীবন জীবিকার তাগিদে বসবাস করা এখানকার বাসিন্দাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ সঙ্গী করে পথ চলতে হচ্ছে। যানজট কমাতে একের পর এক উড়াল সেতু, ওভার পাস নির্মাণ করা হলেও এর প্রভাব খুব একটা পড়ছে না। নতুন করে তৈরি হচ্ছে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে। চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে ভবিষ্যতে নগরীর যানজট কমবে এমনটি আশা করা হচ্ছে। যদিও নগরবিদরা বলছেন, ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন না হলে এমন বড় প্রকল্প দিয়ে রাজধানীর যানজট কমানো অসম্ভব। 

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রাজধানীতে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম গড়ে তুলতে না পারা নিঃসন্দেহে আমাদের বড় ব্যর্থতা। এই সময়ে আমরা এমন একটি সিস্টেম দাঁড় করাতে পারিনি। বরং এক সময়ে যে সিগন্যালিং সিস্টেমের শুরু হয়েছিল সেটিও এখন আর চলে না। রাজধানীর যানজটের অন্যতম কারণ বিভিন্ন সেবা সংস্থার অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন। বিশেষ করে এখন যেসব বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তার সবক’টির জন্য জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। সড়কগুলোতে যানজট বাড়িয়েছে এসব প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজ শুরুর আগে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যানবাহন চলাচল ও জনদুর্ভোগ কম রাখতে চুক্তির শর্ত ও নির্দেশনা দেয়া থাকলেও আদতে তা খুব একটা মানা হয় না। এ কারণে বাড়ে দুর্ভোগ। 

পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। এই কাজের কারণে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রধান সড়কটি সরু হয়ে গেছে। মেট্রো স্টেশন নির্মাণের জন্য কোথাও কোথাও প্রধান সড়ক বন্ধ করে বিকল্প সড়কে যান চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকেই এই সড়ক ব্যবহারকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে যানজট। এছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শুকনো সময়ে ধুলা আর বর্ষায় জলজটের দুর্ভোগ আছে সঙ্গী হয়ে। এসব দুর্ভোগ কমাতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও সিটি করপোরেশনের কার্যকর তেমন উদ্যোগ খুব একটা দেখা যায়নি। তারা কার্যকর দায়িত্ব পালন করলে এই সড়ক ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি আরও অনেকাংশে কমিয়ে আনা যেতো। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সম্প্রতি আগারগাঁও তালতলা থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত সড়কের পশ্চিম পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। 

কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে একসঙ্গে খুঁড়ে ড্রেনেজ পাইপ বসানো হচ্ছে। খুঁড়ে রাখা হয়েছে পুরো সড়ক। এতে দুই লেনের এই সড়কের এক লেন বন্ধ হয়ে আছে। এক লেনে চলছে দুই লেনের গাড়ি। এতে রাত-দিন সমানতালে এখানে যানজট লেগে থাকছে। ড্রেনেজের কাজের পাশাপাশি মেট্রোরেলের কাজ চলায় মাঝে মাঝে মেট্রোরেলের কর্মীরাও সড়ক বন্ধ করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তীব্র দুর্ভোগের কারণে মিরপুরে বসবাস করা অনেকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে ফার্মগেট-মতিঝিলের দিকে যাওয়া-আসা করতে বাধ্য হচ্ছেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ নেয়ার কথা থাকলেও উল্টো এখানে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। মাসের পর মাস কাজ ফেলে রেখে দুর্ভোগকে দীর্ঘস্থায়ী করা হচ্ছে। এর আগে একই সড়কের অন্যপাশে একই কাজ করায় দীর্ঘদিন অচলাবস্থা ছিল। 

মেট্রেরেলের কাজ শুরুর আগে থেকেই সড়কটি ব্যবহারকারীদের জন্য দুর্ভোগের শুরু। মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ করার আগে বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন সরাতে সময় লেগেছে মাসের পর মাস। তখন থেকেই সড়ক’টিতে বেহাল অবস্থা। এত গেল একটি প্রকল্পের কথা। এবার আসি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়কে। এই সড়কটি ব্যবহার করে দু’টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। একটি গাজীপুর থেকে বনানী পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্প। অন্যটি বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এই দুই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের কারণে বিমানবন্দর সড়কটিতে যানজট এখন প্রতিদিনের চিত্র। বিশেষ করে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে যানজটের সঙ্গে দুষণের দুর্ভোগে অতিষ্ট মানুষ। এইটুকু সড়ক পার হতে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে থাকতে হচ্ছে। প্রকল্পগুলোতে সমন্বয়হীনতা তদারকির অভাবের কারণে মানুষকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 

এর বাইরে পুরো রাজধানীতেই যানজট বাড়ছে দিনকে দিন। এই সমস্যা কমাতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি উড়াল সেতু চালু করা হয়েছে। এসব সেতুর কিছুটা সুফলও মিলছে। তবে উড়াল সেতুর নিচের সড়কের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে উপরে নির্বিঘ্নে যান চলাচল করতে পারলেও নিচের সড়কে যানজট লেগে থাকছে। যানজট নিরসনে সময়ে সময়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ উদ্যোগই আলোর মুখ দেখে না। ঢাকা উত্তর সিটির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যানজট নিরসনে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বেশকিছু পরিকল্পনাও করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর এসব উদ্যোগ আর পরিকল্পনা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে। রাজধানীতে থাকা আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ডগুলো ঢাকার বাইরে নেয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন আনিসুল হক। 

এই পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত খুব একটা এগোয়নি। বর্তমান দুই মেয়র এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করলেও এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আনিসুল হক চেয়েছিলেন রাজধানীতে চলাচল করা বাসগুলোকে  একই ছাতার নিচে এনে শৃঙ্খলা ফেরাতে। এ পরিকল্পনা নিয়ে কাজও শুরু করেছিলেন তিনি। এর অংশ হিসেবে ঢাকা চাকা নামে গুলশান এলাকায় এবং হাতিরঝিলে চক্রাকার বাস চালু করেছিলেন। বাস রুট রেশনালাইজেশন নামের এই পরিকল্পনা অবশ্য এখন স্থবির হয়ে আছে। আনিসুল হকের এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কমিটি কাজ করছে। এই কমিটির উদ্যোগে একটি রুটে পরীক্ষামূলক বাস চলাচল করছে। এখন পর্যন্ত এই রুটটিতে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি কমিটি। অন্য রুটগুলো চালু করার ক্ষেত্রেও আর কোনো অগ্রগতি নেই। মাঝে দুই বছর করোনা ভাইরাসের কারণে নানা বিধিনিষেধ ছিল। এতে অনেক সময় যানজট ছিল সহনীয়। 

করোনা পরবর্তী সময়ে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসায় রাজধানীর যানজট আবার চিরচেনা রূপ নিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেড়েছে। এমন অবস্থায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পুরো সুফল পেতে হলে রাজধানীর যানজট কমানো নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। এই চ্যালেঞ্জটি পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মতোই বড় এক চ্যালেঞ্জ। শুধু ঢাকার ট্রাফিক বিভাগের পক্ষে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা প্রয়োজন। বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। অন্যসব প্রকল্পের মতো এখানেও দীর্ঘসূত্রতা হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাফল্যের গল্পগাঁথাটিতে একটা অপূর্ণতা থেকে যাবে।

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

সা ম্প্র তি ক প্রসঙ্গ/ এক যুগ আগে ড. ইউনূসকে যা বলেছিলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status