ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যম, কেন এত আলোচনা?

তারিক চয়ন
৮ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার
mzamin

তর্কের খাতিরে কেউ কেউ বলতে পারেন, ‘ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে ভিসার জন্য অযোগ্য বলে যারা বিবেচিত হতে পারেন তাদের মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন’ ম্যাথিউ মিলার এমন অনেক শ্রেণি-পেশার কথা বললেও গণমাধ্যমের কথা তো বলেন নি! তাদেরকে বলছি, মিলার তো এটাও বলেন নি যে, ভবিষ্যতে ‘কেবল’ উক্ত শ্রেণি-পেশার লোকজনই ভিসার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন, অন্য শ্রেণি-পেশার কেউ এর আওতায় পড়বেন না। আর, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অন্য শ্রেণি-পেশার মধ্যে গণমাধ্যম যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তা কে না জানেন!

 

পহেলা অক্টোবর ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত ১৪ দলীয় জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের ৫৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ৩রা অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জনকণ্ঠের খবর অনুযায়ী সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সম্মেলনে ১৪ দলীয় নেতা, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, এমপি; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী, হাসানুল হক ইনু, এমপি; ঢাকাস্থ চীনের দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর ইয়াং হু এলোং বক্তব্য রাখেন। ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে আসতে না পারলেও তিনি সাম্যবাদী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বাণী দিয়েছেন। 

অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা আমাদের রাজনীতি নির্ধারণ করবো। কোনো বিদেশি শক্তি নির্ধারণ করবে না। বিএনপি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে নয়, বরং তাদের জিম্মি করে ক্ষমতায় আসতে চায় মন্তব্য করে মেনন বলেন, এজন্য তারা তাদের বন্ধু নয়, বরং প্রভু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর নির্ভর করছে। তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ ভিসা নীতি নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে রুখতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। মেননের মতো খোলামেলাভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম না নিলেও পশ্চিমা বিশ্বের দিকে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করে হাসানুল হক ইনু বলেন, খাল কেটে অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত চলছে। এ চক্রান্তকে নস্যাৎ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার দেশের রাজনীতি কী হবে তা আমরা ঠিক করবো। তুমি বাধা দেয়ার কে? সভাপতির বক্তৃৃতায় দিলীপ বড়ুয়াও প্রায় একই ধরনের আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেন।

চীনা কূটনীতিকদের সামনে রেখে ক্ষমতাসীন জোট শরিকদের পশ্চিমা দেশগুলোকে আক্রমণ করার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। বলা যায়, হরহামেশাই এমনটি ঘটছে। মানবজমিন অনলাইনের খবর (নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন: মেনন) অনুযায়ী উক্ত অনুষ্ঠানের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে (১২ই সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ চায়না সিল্ক রোড ফোরামের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল চায়না বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের ১০ বছর পূর্তির ছবি প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠান। চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এইচ ই ইয়ান হুয়ালং-এর উপস্থিতিতে সেখানেও মেনন-ইনু বক্তব্য রেখেছিলেন।

সেখানে মেনন বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তা হলো বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। বিআরআইকে ‘পশ্চিমারা রাজনৈতিক বলয় ভাবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেকে ভাবে বিআরআইতে যোগ দেয়া মানে চীনা ঋণের ফাঁদে পড়া। এটা তারা প্রচার করে বেড়ান। শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও তুলনা করেন। আসলে তারা চীনা ঋণের ফাঁদের কথা বলে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। তারা প্রায়ই বলেনÑ এত উন্নয়ন দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। উন্নয়ন না করে গণমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আমি বলবো উন্নয়ন হলে দেশের উন্নতিও হয়। পদ্মা সেতু দেশের উন্নতি ও অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করছে। বিআরআই নিয়ে রাজনীতি আছে, এটা থাকবে। একটি পক্ষ সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিয়েও অপপ্রচার ও কুৎসা রটিয়েছে। পশ্চিমারা এটা সব সময়ই করে থাকে।

এভাবে, অতীতেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি শীর্ষ কূটনীতিকদের সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বকে আক্রমণ করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের। এ নিয়ে তেমন একটা শোরগোল হয় নি। কিন্তু, সাম্যবাদী দলের সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে চীনা কূটনীতিককে সামনে রেখে মেনন-ইনুদের পশ্চিমা বিশ্বকে আক্রমণ করার পর একশ্রেণীর সুশীল সমাজ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নীরবতা নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়।
অনেকেই প্রশ্ন করছেন, রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোট শরিক কোনো দলের অনুষ্ঠানে গিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্-এর সামনে যদি ওই জোটের শরিক দলের শীর্ষ নেতারা চীন কিংবা রাশিয়াকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতেন এবং পিটার হাস্ নিজেও যদি ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতেন তাহলে একশ্রেণীর ‘সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট নাগরিক ও সাংবাদিক’রা কি পিটার হাস্-এর চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করা থেকে বিরত থাকতেন? লন্ডন থেকে বিবিসি’র সাবেক সাংবাদিক কামাল আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পিটার হাস্কে এরকম একটি রাজনৈতিক দলের সভায় দেখা গেলে ব্যাপারটা কেমন হতো? বিএনপি না, ধরুন নাগরিক ঐক্য বা গণঅধিকার পরিষদের মতো দলের অনুষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা দিলেন।’

কামাল আহমেদ আরও প্রশ্ন করেছেন, ‘চীন ও রাশিয়ার দূতেরা জানি অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়ে কী বলেছিলেন? কারও কি মনে আছে?’ এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, চলতি বছরের ৩১শে জুলাই ১৪দলীয় জোটের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে আমির হোসেন আমু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এর কয়েকদিন আগেই চায়না কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে সপ্তাহব্যাপী চীন সফর করে আসা মেনন-ইনু-দিলীপ সহ জোটের সাত নেতা। বৈঠকে অংশ নেয়া এক নেতা দেশ রূপান্তর পত্রিকাকে জানান, বৈঠকে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘চীন আমাদের জানিয়েছে আমেরিকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। কিন্তু সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় চীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে আছে।’
মাস দেড়েক (১৬ই আগস্ট) আগেও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছিলেন, ‘চীন কখনো অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’ এর মাস দুয়েক আগে (৮ই জুন) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মন্টিটস্কি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাশিয়ার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তাই আগামী নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই’।

সে যাই হোক, বিভিন্ন দেশের ঢাকায় নিযুক্ত এত এত কূটনীতিক থাকতে এসব আলোচনায় সকলেই কেন পিটার হাস্কে টেনে আনছেন? স্বাভাবিকভাবে এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে, সাম্প্রতিককালে পিটার হাস্-এর বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক ‘স্মিয়ার ক্যাম্পেইন’ চালানোর বিষয়টি যাদের নজরে এসেছে তারা এ প্রশ্নটি করার কথা নন। কেম্ব্রিজ ডিকশনারি অনুযায়ী ‘স্মিয়ার ক্যাম্পেইন’ মানে হলো-
কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে তার সুনাম নষ্ট করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। এটা সংঘবদ্ধ প্রচারণা।
গত বছরের শুরুতে বাংলাদেশে আসার পর থেকে পিটার হাস্ লাগাতারভাবে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। যারা এ ধরনের নির্বাচন চান না খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের কাছে হাস্-এর এই তাগিদ মনঃপূত হয় নি। তাই, তারাও শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সভা- সেমিনারে নেতিবাচক মন্তব্য করে আসছেন। কিন্তু, সেগুলোর কোনোটই হালে পানি পায় নি। তাই, ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো পেলেও যেভাবে আঁকড়ে ধরে তেমনি ওই গোষ্ঠীটি পিটার হাস্-এর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে আঁকড়ে ধরে তার বিরুদ্ধে স্মিয়ার ক্যাম্পেইনিং করে নিজেরা বাঁচার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করছে।
তা কি বলেছিলেন মিস্টার হাস্? বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার প্রক্রিয়াকে যে বা যারাই বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তার এ মন্তব্যকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ অভিহিত করে তারা বলছে হাস্-এর এ বক্তব্য গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের শামিল। অনেকে আবার বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে একে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের আকাশে শকুনের উড়াউড়ি হিসেবেও দেখছেন।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বশীল সকলেই যেখানে বলছেনÑ ‘যাকেই দেখা যাবে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করছে, তার বিরুদ্ধেই এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে’, সেখানে হাস্-এর ওই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কেন তার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রচারণা? ‘ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে’ পিটার হাস্-এর এমন কথার জন্য যারা তাকে আক্রমণ করছেন তারা কি গত ২২শে সেপ্টেম্বর প্রচারিত ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণ’ শীর্ষক যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র অধিদপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের প্রেস বিবৃতিটি একবারও পড়ে দেখেছেন নাকি কারও শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন? সেখানে বলা হয়েছে ‘আজ, ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ প্রয়োগের পদক্ষেপ নিচ্ছে’। এর পরের লাইনে ‘এর মাঝে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত আছেন’ বলা হলেও তারপরেই বলা হয়েছে ‘‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত ‘অন্য ব্যক্তিরা’ও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। এর মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন’’। অন্য ব্যক্তিরা কারা? এর ব্যাখ্যাতেই হাস্ গণমাধ্যমের কথা টেনেছিলেন। তিনি কেবল গণমাধ্যমের কথাই টানেন নি, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে চায়ের দোকানের কথাও বলেছেন। তাহলে, কেন এটা বলা হচ্ছে যে, মিস্টার হাস্ ‘অযাচিতভাবে গণমাধ্যমকে টেনে এনেছেন’?

তর্কের খাতিরে কেউ কেউ বলতে পারেন, ‘ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে ভিসার জন্য অযোগ্য বলে যারা বিবেচিত হতে পারেন তাদের মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন’ ম্যাথিউ মিলার এমন অনেক শ্রেণি-পেশার কথা বললেও গণমাধ্যমের কথা তো বলেন নি! তাদেরকে বলছি, মিলার তো এটাও বলেন নি যে, ভবিষ্যতে ‘কেবল’ উক্ত শ্রেণি-পেশার লোকজনই ভিসার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন, অন্য শ্রেণি- পেশার কেউ এর আওতায় পড়বেন না। আর, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অন্য শ্রেণি-পেশার মধ্যে গণমাধ্যম যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তা কে না জানেন!

 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

সা ম্প্র তি ক প্রসঙ্গ/ এক যুগ আগে ড. ইউনূসকে যা বলেছিলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status