ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

গণতন্ত্রের চর্চা, নতুন কারিকুলাম

শামীমুল হক
১৫ জুন ২০২২, বুধবার
mzamin

সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চট্টগ্রাম জেলা রাজস্ব প্রশাসনের নিয়োগ পরীক্ষায় এমন প্রক্সি নিয়ে আলোচনা এখন সর্বত্র। এমন ১৫ জন হাতেনাতে ধরা পড়ে। তবে প্রক্সি পরীক্ষা দেয়ার সময় নয়। লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ভাইবা দিতে এসে ধরা পড়ে তারা। এমন ১৫ জনকে জেল-জরিমানা গুনতে হয়েছে। পহেলা জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিমনেশিয়াম হলে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। অবাক হওয়ারও কিছু নেই। এই প্রক্সি প্রথা যেভাবেই হোক সমাজে ঠাঁই করে নিয়েছে। তাই তো মাঝে মাঝে খবর শোনা যায়- আসল আসামির জায়গায় জেল খাটছে প্রক্সি দেয়া কেউ। এমন একাধিক ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনাও আসে।

বিজ্ঞাপন
এক সময় গ্রাম-গঞ্জে শোনা যেত বউ দেখে এসেছে একজনকে। কিন্তু বিয়ের পর দেখা গেছে এই মেয়ে সেই মেয়ে নয়। এখানেও পাত্রপক্ষকে প্রক্সি দেয়া বউ দেখানো হয়েছে। আসল পাত্রী কালো বলে অন্য পাত্রীকে দেখিয়েছে কনেপক্ষ। পাত্রপক্ষও পাত্রীকে দেখে পছন্দ করেছে। কিন্তু বিয়ের পর বরের বাড়ি নতুন কনে আসার পর দেখে সেই পাত্রী তো এই পাত্রী নয়। তখন বুঝতে পারে প্রক্সি দেয়া পাত্রীকে তারা দেখে এসেছিল। তাদের ঠকানো হয়েছে। 

সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চট্টগ্রাম জেলা রাজস্ব প্রশাসনের নিয়োগ পরীক্ষায় এমন প্রক্সি নিয়ে আলোচনা এখন সর্বত্র। এমন ১৫ জন হাতেনাতে ধরা পড়ে। তবে প্রক্সি পরীক্ষা দেয়ার সময় নয়। লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ভাইবা দিতে এসে ধরা পড়ে তারা। এমন ১৫ জনকে জেল-জরিমানা গুনতে হয়েছে। পহেলা জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিমনেশিয়াম হলে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলার রাজস্ব প্রশাসনের রাজস্ব শাখাসহ ১৫টি উপজেলা ভূমি অফিস ও ছয়টি মহানগর সার্কেল ভূমি অফিসে অফিস সহায়কের শূন্য পদে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। ১১ই মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পহেলা জুন ২৩৭ জন চাকরিপ্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। কিন্তু ভাইভা বোর্ডে এমন কয়েকজন আসেন যারা কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারছিলেন না। এতে সন্দেহ হয়। তাৎক্ষণিক তাদের আগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়। দেখা যায়- আগের লেখার সঙ্গে এ লেখার তারতম্য। অনেকের হাতের লেখায়ও অমিল পাওয়া যায়। এ আয়োজন দেখে ২১ পরীক্ষার্থী পালিয়ে যায়। ধরা পড়ে ১৫ জন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়ার কথা স্বীকার করেন। লিখিত পরীক্ষায় প্রবেশপত্র ফটোশপ করে অন্য প্রার্থীকে দিয়ে পরীক্ষায় তারা পাস করেন। প্রক্সি শব্দের অর্থ কি? সাধারণত এটাকে মধ্যস্থতাকারী বলা যেতে পারে। যিনি মধ্যে থেকে দু’পক্ষকে সংযোগ ঘটিয়ে দেন। যেমন চাকরিপ্রত্যাশী আর চাকরির নিয়োগকারীর মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে দেয়া। তবে এটা বৈধ নয়। অবৈধ। আর তাই এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও কেন অব্যাহতভাবে এটা চলে আসছে। কারা এর পেছনে রয়েছে? বিষয়টি খতিয়ে দেখার তাগিদ অনুভব করেন কী সংশ্লিষ্টরা। নাকি এভাবেই পরীক্ষা হবে, দুই চারজন ধরা পড়বে। ক’দিন আলোচনা হবে। ফের চুপসে যাবে সব। এরপর আবারো কোনো পরীক্ষায় প্রক্সি সিন্ডিকেট সক্রিয় হবে। তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও এটি করার কারণ কি? দণ্ড না হওয়াই কী এর কারণ। 

দুই: প্রক্সি, প্রশ্নফাঁস আর নানা অনিয়ম দেখে নিরাশার চোরাবালিতে ডুবছে মানুষের আশা। ভরসার জায়গা হারিয়ে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রে। তবুও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হচ্ছেই আজান দিয়ে। ঘোষণা দিয়ে। মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ঝড় উঠছে। অভিভাবকরা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কোথায় যাবে তারা? এক সময় এর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময়ই তৎপর চক্রের বিরুদ্ধে। তারপরও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইসে উত্তরপত্র বলে দিচ্ছে সহজেই। ধরাও পড়ছে। সম্প্রতি এমন একটি চক্রকে ধরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা মন্ত্রণালয় সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীকে উত্তর জানিয়ে দিতো। প্রার্থীপ্রতি ৫-১০ লাখ টাকা চুক্তি করতো চক্রটি। ঢাকা মহানগর পুলিশ এমন ডিভাইস ব্যবহার করা চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের নিয়ে মিডিয়ার সামনে বিস্তারিত তুলে ধরে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় চক্রটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তরপত্র সরবরাহ করার চেষ্টা করে। তখন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য মতে, তারা দুটি ডিভাইস ব্যবহার করতো। একটি ছোট ডিভাইস কানের ভেতরে থাকতো, আর একটি সিম আকারের ডিভাইস শরীরের যে কোনো অঙ্গে বসিয়ে রাখতো। অন্যদিকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রশ্ন বের করে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের দিয়ে দ্রুত প্রশ্নের সমাধান করে তাদের কাছে পৌঁছে দিতো। তাদের ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো এত সূক্ষ্ম যে, কারও প্রতি সন্দেহ না হওয়া পর্যন্ত বোঝার ক্ষমতা নেই যে, তিনি ডিভাইসটি ব্যবহার করছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৩ জন পরীক্ষার্থী আর অন্য ৪ জন পরিচালনাকারী। তাদের হেফাজত থেকে ৮টি প্রশ্নপত্র প্রেরণের ডিভাইস, ২৯টি ব্যাটারি, ৩টি পেনড্রাইভ, ৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ৯টি বিভিন্ন অপারেটর সিম কার্ড ও ৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। অবস্থাদৃষ্টে প্রমাণিত হচ্ছে আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে চক্রটিও আধুনিক হচ্ছে। প্রশ্ন হলো- যারা এই ডিভাইস ব্যবহার করে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে যায় তাদের নিয়ে। তারা কি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত নয়? এভাবেই যদি পরীক্ষা দেবে তাহলে এ পরীক্ষা দিয়ে লাভ কি? 

ইতিমধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন কারিকুলাম অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগামী বছর থেকে এটি বাস্তবায়ন হবে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা কি আলোর দেখা পাবে? বলা হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বর্তমান কারিকুলাম আধুনিকায়ন করা হয়েছে। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চলমান শিক্ষাক্রমের ভুলত্রুটি সংশোধন, আন্তর্জাতিক মান ও সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে এ পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এটি বাস্তবায়ন হলে, মাধ্যমিক পর্যন্ত থাকছে না কোনো বিভাগ বিভাজন। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সবাইকে পড়তে হবে ১০টি বিষয়। দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ পছন্দ করতে হবে। একাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষা এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষা নেয়া হবে। এই দুই পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে তৈরি হবে এইচএসসি’র ফল। এ ছাড়া প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বই। তবে সব শ্রেণিতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেয়া হয়েছে। আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে। আফসোস স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসেও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করতে হচ্ছে। ভাবতে হচ্ছে। 

তিন. দেশের সবচেয়ে বাজে অবস্থা চলছে শিক্ষাক্ষেত্রে। যেখানে নিয়মের কোনো বালাই নেই। পত্রিকায় প্রায়ই খবর বেরোয় জাল সনদে কমপক্ষে ৫০ হাজার শিক্ষক চাকরি করছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে। তদন্তে প্রমাণ পেলেও তাদের কিছু হচ্ছে না। মাউশি তদন্ত করে রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয় ম্যানেজ হয়ে যায় সহজেই। জাল সনদে শিক্ষক হয়ে তিনি কি পড়াবেন? তিনি তো সময় কাটানোর জন্য বিদ্যালয়ে যান। মাস শেষে এমপিও’র টাকা ব্যাংক থেকে তুলেন। ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বলেন, রিডিং পড়ে যাও। তিনি চেয়ারে বসে ঘুমান। কিংবা রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকেন। যদি ক্লাসে সঠিকভাবে পড়া নেয়া হতো, দেয়া হতো। তাহলে শিক্ষার্থীরা চাপে থাকতো। লেখাপড়া করতো। তারা প্রশ্ন ফাঁসের দিকে তাকিয়ে থাকতো না। অথচ পরীক্ষা পদ্ধতি বদল করা হয় শিক্ষার্থীদের যেন গোটা বই পড়তে হয়। কিন্তু ভাবনা এক, হয়েছে আরেক। আশির দশকে দেশে নকলের বন্যা বয়ে যায়। ১৯৮৬ সালে শিক্ষক ধর্মঘটের মধ্যেই এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয়। সে সময় নকল করতে গিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলিও চালায়। গত দুই দশকে সরকারের কঠোর মনোভাবে নকল শূন্যের কোঠায় চলে আসে। এখন নকল নেই সেভাবে। তবে প্রশ্নফাঁস আছে। আবার অত্যাধুনিক ডিভাইস এসেছে। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হলে বুঝা যাবে এর সুফল কতোটুকু পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  

চার. চলতি মাসেই হয়ে গেল সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের নির্বাচন। যেখানে ছিল না কোনো বিশৃঙ্খলা, ভোটকেন্দ্র দখল কিংবা জালভোট। হয়েছে প্রচারণা। হাতে লেখা পোস্টারও টানানো হয়েছে। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে ভোট দিয়েছে তাদের প্রার্থীকে। শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনই হলো এ নির্বাচনের প্রধান লক্ষ্য। জাতীয় নির্বাচনের সব প্রক্রিয়াই থাকে এখানে। থাকে পোলিং এজেন্টও। শুধু ব্যালট পেপারে কোনো প্রতীক থাকে না। থাকে প্রার্থীর নাম, শ্রেণি এবং রোল নাম্বার। এর উদ্দেশ্য হলো লিডারশিপ তৈরি করা এবং সহযোগিতা ও সহনশীলতার মানসিকতা তৈরি করা। উদ্যোগটা ভালো। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে ক’বছর ধরে। কিন্তু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কি দেখছি? এখানে গণতন্ত্র মানে কি প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা, মারধর বর্বর যুগকেও হার মানিয়েছে।  ওদিকে গতকাল ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বন্ধ হলো চুয়েট। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সমন্বয়ে এক জরুরি সভার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন রাখা হয়েছে। সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা। এ চর্চা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোন রূপ ধারণ করছে? প্রশ্ন হলো-এটা কোন গণতন্ত্রের চর্চা? 

এ ছাড়া কথায় কথায় হামলা ক’বছর ধরে দেশে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। ক’দিন হামলার ব্যাপারে আলোচনা হয়। একসময় আলোচনা থেমে যায়। ক’দিন পরই ফের একই ঘটনা ঘটে। যেমনটা ঘটেছে সম্প্রতি চট্টগ্রামে। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটে যাওয়া কন্টেইনার ডিপোতে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড গোটা দেশকে নাড়া দিয়েছে। এই ডিপোতে অনুমতিবিহীন  কেমিক্যাল রাখা হতো। ইতিমধ্যে বিষয়টি আদ্যোপান্ত দেশ-বিদেশের সবাই জেনে গেছেন। কিন্তু সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের দেখতে যাওয়া যে অপরাধ, মহাঅপরাধ এটা বোধ হয় জানা ছিল না গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকীর। তাই তো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। শুধু তিনিই নন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানও হামলার শিকার হয়েছেন। সমমনা কয়েকটি দলের নেতাদের নিয়ে সীতাকুণ্ড যান জোনায়েদ সাকি। সেখান থেকে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের দেখতে যান। রোগী দেখে যেই মাত্র তারা গাড়িতে উঠতে যাবেন তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। হামলায় সাকীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এর আগেও একাধিকবার ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা হামলার শিকার হয়েছেন। রক্তাক্ত হয়েছেন। হামলাকারীদের কিছুই হয়নি। এ না হওয়ার সংস্কৃতিই তাদের আরও উগ্র হতে সহযোগিতা করে। তারাও উল্লাস করতে করতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যায়। অন্যদিকে হামলার শিকার যারা তারা রাজপথে ক’দিন বিক্ষোভ করে। যেমনটা হয়েছে জোনায়েদ সাকী হামলার পর। কিন্তু প্রশ্ন হলো প্রাথমিকে গণতন্ত্রের চর্চা  করে লাভ কি? যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্রকে দূরে ঠেলে হাতে তুলে নেয় হাতিয়ার? 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status