অনলাইন
পেশাদাররা কেন বাংলাদেশ ছাড়ছেন?
(৬ দিন আগে) ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১২:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন

সাম্প্রতিক সময়ে, বাংলাদেশের পেশাদারদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য প্রবণতা দেখা যাচ্ছে: উচ্চ অধ্যয়ন বা আরো ভাল ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন দক্ষ ব্যক্তিরা। দৈনন্দিন এবং পেশাগত জীবনে একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার জেরে এই ঘটনাটি বাড়ছে। এই অভিবাসনের পেছনে কারণগুলি কী কী?
যারা দেশ ছাড়ছে তাদের মধ্যে অনেকেই স্নাতক হয়ে চাকরির জগতে সদ্য যোগ দিয়েছে, এখন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যারা পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে চাকরি করছেন, সদ্য বিবাহিত, পরিবারে শীঘ্রই একটি সন্তানের প্রত্যাশা করছেন, অথবা একটি ছোট শিশু আছে তারাও বিদেশে যেতে আগ্রহী । এই লোকেরা বেশিরভাগই সাধারণ কোনো পরিবার থেকে উঠে এসে বিশ্ব বাজারে নিজের আলাদা একটা পরিচয় তৈরি করছে। বাংলাদেশি পেশাদারদের বিদেশের মাটিতে পা রাখার সবথেকে লোভনীয় কারণ উচ্চতর কর্মজীবনের সুযোগ।
আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারগুলি প্রায়শই উচ্চতর পারিশ্রমিক প্যাকেজ, ব্যাপক সুবিধা এবং পেশাদার অগ্রগতির অনন্য সুযোগ দিচ্ছে । এছাড়াও, দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বীকৃতি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। কিছু পেশাদার বিশ্বাস করেন, তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে অধিকতর প্রশংসিত হয়েছে, বেড়েছে আর্থিক পারিশ্রমিক। বৈচিত্রপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন এবং স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ও কাজের পরিবেশের এক্সপোজার পেশাদারদের অনুপ্রেরণার আরো একটি উৎস। অভিবাসনের একটি অবিচ্ছেদ্য দিক হলো একটি উন্নত মানের জীবনযাত্রা ।
অর্থনৈতিক কারণগুলি স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। অনুকূল মুদ্রা বিনিময় হার এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের বৈষম্য পেশাদারদের আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে। পেশাদাররা প্রায়ই দেখতে পান যে, বিদেশে তাদের উপার্জন তাদের আরও বেশি ক্রয়ক্ষমতা এবং আর্থিক নিরাপত্তা দেয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত একটি সমাজ কেবল ব্যবসার পরিবেশই নয়, ব্যক্তিগত জীবনকেও ব্যাহত করতে পারে। এই উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে, কিছু পেশাদাররা সেইসব দেশগুলি বেছে নেয় যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। এইভাবে, বাংলাদেশি পেশাদারদের আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থান খোঁজার সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত, পেশাদার এবং অর্থনৈতিক কারণগুলির ওপর নির্ভর করে। যদিও প্রেরণাগুলি ব্যক্তিভিত্তিক ভিন্ন হতে পারে যেমন- উন্নত কর্মজীবনের সম্ভাবনা, উন্নত জীবনের মান, উচ্চতর শিক্ষার সুবিধা, দক্ষতার স্বীকৃতি, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে চ্যালেঞ্জিং কাজের পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনাগুলি এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা নেয় ।
গ্লোবালাইজিং বিশ্বের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে বাংলাদেশি পেশাদারদের আগ্রহ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গার্হস্থ্য জীবন, শিক্ষার মান এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সুবিধার প্রাপ্যতার সাথে একটি ভাল কর্মক্ষেত্রের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের চিন্তাভাবনাও প্রয়োজন।
সূত্র : দ্য ডেইলি ষ্টার
লেখক- মামুন রশিদ, একজন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
পাঠকের মতামত
দেশের উন্নয়ন ও দেশ পরিচালিত হচ্ছে একশ্রেণির শাসক দ্বারা, যারা শাসনের নামে জনগণকে শোষন করছে। এমতাবস্থায়, এধরণের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়! তবে,এহেন অবস্থা জাতির জন্য স্বস্তিদায়ক নয়!
সব ক্যাডারের ওপর প্রশাসন ক্যাডারের মাতব্যরি।প্রতিটা ক্যাডার নিজস্ব ক্যাডারের লোকজন দ্বারা পরিচালিত হতে হবে।যোগ্য লোকদের যোগ্য স্হানে পদায়ন করতে হবে সমস্ত রাজনৈতিক, আর্থিক সংশ্লেষ ছাড়াই।
স্বাভাবিক ভাবে বাঁচা তো দূরের কথা স্বাভাবিক ভাবে মরার নিশ্চয়তা নাই।
দেশে জীবনের মূল্য নাই, স্বাভাবিক ভাবে মরার গ্যারান্টি নাই।
When a country doesn't give value to an intellect rather it gives value to a political affiliance, it's a must for an intellect to migrate. Besides, safety, the justice system is also broken in Bangladesh. Who would want to live in such a condition?
যে দেশে জ্ঞানের ও জ্ঞানীর কদর নাই বরঞ্চ তাদেরকে সবসময় হেয় প্রতিপন্ন করা হয় সে দেশে জ্ঞানী জন্মায় না বা জন্মালেও অন্যদেশে চলে যায়। এটাই স্বাভাবিক।
দেশের অভ্যন্তরে চাকরীর বাজার সংকীর্ণ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, পুলিশ ও স্থানীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক হয়রানী, অত্যাচার, অনাচার,অবিচার ও নানাবিধ কারণে আজ তরুণ সমাজ দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে! সরকার সেটাকে রেমিটেন্সের উৎস মনে করলেও এই প্রক্রিয়ায় দেশ মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে! যার ফলে সরকারের জনবলে মডেলদের আদিখ্যেতা সীমাহীন! এরাই দুর্নীতি করে ব্যাংক বীমা লুট করে দেশ থেকে টাকা পাচার করছে! ক্রমান্বয়ে দেশটা রসাতলে চলে যাচ্ছে! মনে হচ্ছে বিষয়টা থেকে উত্তরণের আর কোন পথই আর খোলা নেই!