বিশ্বজমিন
জি-২০ সম্মেলনে নয়াদিল্লির ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ৪০০ কোটি রুপি
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৮:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন ভারতের জন্য নিঃসন্দেহে একটি দুর্দান্ত সাফল্য। কিন্তু এই সম্মেলনের কারণে রাজধানী নয়াদিল্লির দোকান এবং রেস্তোঁরাগুলির প্রায় ৪০০ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি শহরটির বাজার এবং মলগুলি বন্ধ থাকায় প্রায় নয় হাজার ডেলিভারি কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দ্য ইকোনিমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
ওই খবরে জানানো হয়, সম্মেলনের কারণে নয়াদিল্লির বড় একটি অংশকে ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এনেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে এই নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাইরেও ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ব্যবসার বিক্রয় অর্ধেকে নেমে এসেছিল। কারণ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কারণে মানুষজন বাড়ির ভিতরে থাকতে বাধ্য হয়েছে। নিউ দিল্লি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিটিএ) সভাপতি অতুল ভার্গব বলেন, এই তিন দিনের কড়াকড়িতে নয়াদিল্লির ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি রূপির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আমরা নিজেরাও এই অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু যেহেতু নিরাপত্তাই এখানে প্রধান অগ্রাধিকার, আমরা মনে করি অতিথিদের ভারতের ভাল ভাবমূর্তি নিয়ে ফিরে যাওয়া উচিত।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য গত ৮ থেকে ১০ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয়াদিল্লির সমস্ত বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। স্পেশালিটি রেস্তোরাঁর চেয়ারম্যান অঞ্জন চ্যাটার্জি বলেন, দিল্লিতে রেস্টুরেন্টে খেতে আসা মানুষ এবং ডেলিভারির সংখ্যা উভয়ই কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। দিল্লির আশেপাশের এলাকায়ও বিক্রয় ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। এটা স্পষ্ট যে, এই আকারের একটি ইভেন্ট হোস্ট করার কারণে বেচাকেনা ব্যাপক প্রভাবিত হয়েছে।
আবার এই শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়েছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। ফলে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাঞ্জাব গ্রিল, জাম্বার এবং ইউমি চেইন পরিচালনাকারী লাইট বাইট ফুডসের পরিচালক রোহিত আগরওয়াল বলেন, দিল্লিতে আমাদের বিক্রয় প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। এমনকি গুরগাঁওতেও আমাদের বিক্রয় প্রায় ২০ শতাংশ কমে যায়। রাজধানীর সবথেকে বড় বাজার যেমন খান মার্কেট, কনট প্লেস এবং জনপথ কেনাকাটা এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য বেশ আকর্ষণীয় একটি স্থান। কিন্তু কড়াকড়ির কারণে তারাও এই দুর্দান্ত সুযোগটির ব্যবহার করতে পারেনি। খান মার্কেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আংশু ট্যান্ডন বলেন, বিশাল আর্থিক প্রভাবতো আছেই। তাছাড়া আমরা দিল্লির সমৃদ্ধ শপিং এবং ডাইনিং হাবগুলি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের ধারণা দিতে পারিনি। সরকার অন্তত বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারতো।
এই সম্মেলনের প্রভাব পুরো রাজধানী জুড়ে অনুভূত হয়েছে। দিল্লি ট্র্যাফিক পুলিশ রাস্তাগুলো নিয়ন্ত্রণে ছিল বেশ সক্রিয়। তাছাড়া তিন দিনের এই ইভেন্টের সময় দিল্লির বাসিন্দাদের বলতে গেলে বাড়ির ভিতরেই থাকতে হয়েছিল। চেম্বার অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিটিআই) চেয়ারম্যান ব্রিজেশ গোয়েল বলেন, দিল্লির কেন্দ্রস্থল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আশেপাশের বাজারগুলিও প্রভাবিত হয়েছে। চাঁদনি চক, করোলবাগ এবং সাউথ এক্সটেনশনেও ক্রেতা সংকট ছিল। আমরা আশা করছিলাম বিদেশি প্রতিনিধিরা আসবেন এবং ভারতের স্থানীয় বাজারের অনুভূতি পাবেন। কিন্তু আমাদের হতাশ হতে হলো।