বিশ্বজমিন
ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স নিমিষার মৃত্যুদণ্ড ১৬ই জুলাই
মানবজমিন ডেস্ক
(১০ ঘন্টা আগে) ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:৪৬ অপরাহ্ন

কেরালার বাসিন্দা ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে আগামী ১৬ই জুলাই বুধবার। তিনি ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। গত বছর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট তার মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদন করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে এবং সবরকম সহায়তা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নিমিষা প্রিয়া ২০০৮ সালে ইয়েমেনে পাড়ি জমান মা-বাবাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য। বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করার পর নিজে একটি ক্লিনিক খোলেন।
ইয়েমেনের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যবসা করতে হলে একজন স্থানীয় সঙ্গীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হয়। এ কারণে তিনি ২০১৪ সালে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদু মাহদি’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয় এবং মাহদির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নিমিষা। ফলে তাকে ২০১৬ সালে গ্রেফতার করা হয়। যদিও পরে মাহদি মুক্তি পেয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিমিষাকে হুমকি দিতে থাকেন। নিমিষার পরিবারের দাবি, তিনি নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করার জন্য মাহদিকে অচেতন করতে ঘুমের ইনজেকশন দেন। কিন্তু ওভারডোজ হয়ে মাহদির মৃত্যু ঘটে। এরপর দেশ ছেড়ে পালানোর সময় গ্রেপ্তার করা হয় নিমিষাকে। ২০১৮ সালে তাকে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইয়েমেনের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে।
ইয়েমেনের আইনে হত্যাকাণ্ড ছাড়াও ধর্মত্যাগ, মাদক পাচার, ব্যভিচার, সমকামিতা, যৌন পেশার সহায়তা ইত্যাদি অপরাধের জন্যও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ইসলামি শরিয়া আইনে ‘ব্লাড মানি’ বা রক্তের বিনিময়ে মূল্য দেওয়ার মাধ্যমে হত্যার শিকার ব্যক্তির পরিবার যদি ক্ষমা করে, তবে মৃত্যুদণ্ড রদ করা যেতে পারে। তবে এর অঙ্ক সম্পূর্ণ নির্ধারিত হয় ভুক্তভোগী পরিবারের ইচ্ছামতো। নিমিষা প্রিয়ার মা কোচিতে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। তিনি বাড়ি বিক্রি করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নিমিষার আইনজীবী সুভাষ চন্দ্রন। তিনি জানান, নিমিষাকে বাঁচাতে একদল রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, কর্মী এবং প্রবাসীরা মিলে একটি আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করেছে।
তবে সমস্যা দেখা দেয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, যখন ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে আলোচনার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ইয়েমেনি আইনজীবী আবদুল্লাহ আমির আগাম প্রায় ১৬.৬ লাখ রুপি দাবি করেন।
যদিও ভারত সরকার ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে ১৯,৮৭১ রুপি পরিশোধ করে। এরপরও তিনি মোট ৪০,০০০ রুপি ফি দাবি করে আলোচনা স্থগিত করেন।
নিমিষার মা বলেন, আমি ভারত ও কেরালা সরকারের কাছে এবং এই কমিটির কাছে কৃতজ্ঞ। তারা যেটুকু সম্ভব করেছে, সব করেছে। কিন্তু এখন আমি চূড়ান্ত আবেদন জানাচ্ছি- আমার মেয়ের জীবন বাঁচান। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।
পাঠকের মতামত
নিহতের পরিবারে গিয়ে বিষয়টি আটকালেও মেনে নেয়া এক্সেতো। কিন্তু টাউট উকিল আটকিয়েছে
প্রিয়া নিমিষার অপকর্মে জন্য সাজা অবশ্যই প্রাপ্য।