বিশ্বজমিন
আরব বসন্তের সুতিকাগার তিউনিসিয়ায় সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের কারাদণ্ড
মানবজমিন ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১:০৫ অপরাহ্ন

তিউনিসিয়ার একটি আদালত ২১ জন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন বিরোধী নেতা ও সংসদের সাবেক স্পিকার রাশেদ ঘানুচি। তিনি ২০২৩ সাল থেকে কারাবন্দি। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তিউনিস আফ্রিক প্রেস (টিএপি) এ তথ্য দিয়েছে বলে খবর জানিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
মঙ্গলবার ঘোষিত রায়ে ঘানুচিকে ১৪ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ চাহেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রফিক আবদুস সালাম বুশলাকা এবং প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা নাদিয়া আকাশাসহ অনেকে পালিয়ে থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে ৩৫ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন গঠন ও তাতে অংশগ্রহণ, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র উল্লেখযোগ্য। বিরোধীদের মতে, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুশলাকা মঙ্গলবার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে এই রায়কে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন। তিনি লিখেছেন, এই মিথ্যাচার, প্রতারণামূলক অভ্যুত্থানের সরকারও একদিন অন্য স্বৈরাচার ও ধোঁকাবাজদের মতোই বিদায় নেবে।
প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ ২০২১ সালে নির্বাচিত পার্লামেন্ট স্থগিত করে ডিক্রির মাধ্যমে শাসন শুরু করার পর থেকে বহু বিরোধী নেতা, সাংবাদিক ও সমালোচককে জেলবন্দি করা হয়েছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় অভ্যুত্থান বলে অভিহিত করে আসছে। সাঈদের সমালোচকরা বলছেন, তিনি আদালত ও পুলিশকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। ফলে ২০১১ সালের আরব বসন্তের পর তিউনিসিয়ার গণতান্ত্রিক অর্জনগুলো একে একে ধ্বংস হচ্ছে। তবে প্রেসিডেন্ট সাঈদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি আইন মেনেই কাজ করছি এবং লক্ষ্য হচ্ছে তিউনিসিয়ার দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির অবসান ঘটানো।
রাশেদ ঘানুচির দল এন্নাহদা পার্টি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ২০১১ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর দলটি তিউনিসিয়ার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয় এবং ঘানুচি সাবেক প্রেসিডেন্ট বেজি কায়েদ এসসেবসি’র সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রে রূপান্তরের নেতৃত্ব দেন। তবে গত বছর সরকার এন্নাহদা পার্টির তিউনিস কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। ৮৪ বছর বয়সী ঘানুচি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। একে তার সমর্থকরা রাজনৈতিক প্রতিশোধ বলে দাবি করছেন।
এন্নাহদা এক বিবৃতিতে বলে, এই রায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার উপর সরাসরি আঘাত এবং এর কার্যক্রম ও রায়কে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার একটি নগ্ন উদাহরণ।