নির্বাচিত কলাম
প্রসঙ্গ: গায়েবি ও রাজনৈতিক মামলা, আসামির করণীয় কী?
আবদুর রহমান জিলানী
২৬ আগস্ট ২০২৩, শনিবার
কোনো মামলা ভিত্তিহীন তা প্রাথমিকভাবে দৃশ্যমান হয় কথিত ঘটনাস্থলের সম্মানীত ব্যক্তিবর্গের নিকট যাদের উপস্থিতিতে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১০৩ ধারায় জব্দ তালিকা প্রস্তুতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানা হয় না। এছাড়া, রাজনৈতিক বা গায়েবি মামলার দু’টি উদাহরণ এখানে প্রনিধানযোগ্য যে, (ক) আমার সঙ্গে চাকরি করতেন এক জিআরও, তিনি ২০১৮ এর নির্বাচনের প্রাক্কালে ফোন করে বললেন, ‘স্যার, আমি তো গতকাল একটি তদন্ত কার্যে থানার বাইরে ছিলাম। সন্ধ্যায় এসে দেখি আমাকে দুই মামলায় এজাহারকারী দেখিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর ১৬ ধারাসহ অন্যান্য ধারায় দু’টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আমি থানায় জিজ্ঞাসা করলে বলে, উপরের নির্দেশ প্রত্যেক এসআই’কে একাধিক মামলার এজাহারকারী হতে হবে। এতে কোনো সমস্যায় পড়বো কি না?’
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় গায়েবি বা রাজনৈতিক মামলা বলে কিছু নেই। বর্তমানে ফৌজদারি বিচার কার্যে উক্ত দুই প্রকার মামলার মৌখিক প্রচলন দৃশ্যমান যা মামলার ধরন হতে ব্যুৎপত্তি লাভ করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৫ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার, জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ, আটক ও বিচার সংক্রান্ত রক্ষাকল্পে বিধান প্রণয়ন করা আছে। যা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এ বিষয়গুলো কিছুসংখ্যক আইনজীবী এবং কতিপয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্যরা খুব কমই জানেন।
গায়েবি বা রাজনৈতিক মামলার উদ্ভব হয় যেকোনো রাজনৈতিক সমাবেশের পনেরোদিন আগে থেকে পরবর্তী সাতদিন পর্যন্ত। সব মামলার এজাহারের বক্তব্য প্রায় একই, যেন কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো ড্রাফ্ট থানায় থানায় সরবরাহকৃত। গত পনেরো বছরের মামলা রুজুর প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, ইদানীং কিছু কিছু মামলায় রাষ্ট্র বাদী না হয়ে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে বাদী বা এজাহারকারী হিসেবে দেখানো হচ্ছে। আইন অমান্যের সংস্কৃতি হতে এসব মিথ্যা মামলার উৎপত্তি হলেও সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে অনুচ্ছেদ ৩৬-এ চলাফেরার স্বাধীনতা, অনুচ্ছেদ ৩৭-এ সমাবেশের স্বাধীনতা, অনুচ্ছেদ ৩৮-এ সংগঠনের স্বাধীনতা এবং অনুচ্ছেদ ৩৯-এ চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। তবে প্রত্যেকটি স্বাধীনতা চর্চার ক্ষেত্র জনস্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষ। কিন্তু এই যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ এর কোনো মাপকাঠি আমাদের দেশীয় আইনে অস্পষ্ট। তবে, যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ দ্বারা কোনো ব্যক্তি অপরের মৌলিক অধিকারকে হরণ করতে পারবে না।
গায়েবি মামলা রুজু, আটক ও রিমান্ড সংক্রান্তে প্রচলিত আইনের বিধানসমূহের ফাঁকফোকর দিয়ে করেন। যেমন- ক) সাধারণ ব্যক্তি কর্তৃক মামলা রুজুর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, কোনো এলাকায় কোনো ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হলে যেকোনো ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট থানায় সেই বিষয়ে মামলা করতে পারেন। তার আইনানুগ ভিত্তি হচ্ছে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৫৪ ধারা। তবে কু-মতলবে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত/নাজেহাল করার উদ্দেশ্য নিয়ে যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেউ এমন এজাহার দায়ের করে, তাহলে সে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে যায়। যার শাস্তি ক্ষেত্রভেদে যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্তও হতে পারে। মিথ্যা মামলার শাস্তি প্রয়োগের ভিত্তি দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা-১৭৭, ১৮২, ১৯৩-১৯৫, ২১১ এবং ২১৮-২২২ বিধানসমূহ যাহার প্রয়োগ আমাদের দেশে বিরল। খ) আর পুলিশ কর্তৃক মামলা রুজুর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, কোনো অপরাধজনক ঘটনা সম্পর্কিত কোনো তথ্য গুজব, জনশ্রুতি অথবা টেলিফোনে থানা পুলিশ প্রাপ্ত হলে, তার প্রেক্ষিতে প্রথমেই এজাহার দায়ের না করে তা জেনারেল ডায়েরি [জিডি]তে লিপিবদ্ধ করে সরজমিন আগে তার সত্যতা পরীক্ষা করতে হবে। অতঃপর তথ্যটি ভিত্তিমূলক বা সত্য বলে প্রতীয়মান হওয়ার পর যদি সেই তথ্যদাতাকে খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে থানার যেকোনো কর্মকর্তা নিজেই বাদী হয়ে সেই বিষয়ে মামলা রুজু করতে পারেন। যাহার ভিত্তি রয়েছে পুলিশ রেগুলেশন-১৯৪৩ এর ২৪৩(ঘ) রেগুলেশনে এবং ডিএমপি রুল্স: অধ্যায়-থানা, বিধি ৫৭(৭)তে। কাজেই, পুলিশ কর্তৃক এ ধরনের গায়েবি মামলা রুজুই যেখানে তাদের অপরাধমূলক কর্ম, সুতরাং সেই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করাটা শুধু ‘অবৈধ আটক’ বলেই বিবেচিত নয়, আইনের পরিভাষায় এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। যার শাস্তির পরিমাণও ক্ষেত্রভেদে একেকরকম। সুতরাং তা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি পরিত্রাণের জন্য কোনো বৈধ ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সাহায্য না পেলে আইনগতভাবেই তিনি নিজেই তার আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এবং গ) পুলিশ কর্তৃক মিথ্যা মামলা দায়ের: দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ১৯৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তিকে নাজেহালমূলক শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে যদি অপর কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা এজাহার উদ্ভাবন করে, তাহলেই তার ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার মতো অপরাধ সম্পন্ন হয়ে যায়। এজাহার দায়ের পরবর্তী আর কোনো বেআইনি কর্ম, যেমন- গ্রেপ্তার, রিমান্ড, মিথ্যা চার্জশিট দাখিল ইত্যাদি সম্পন্ন করার প্রয়োজন হয় না। এ সকল বেআইনি কর্মের জন্যে রয়েছে পৃথক ধারায় শাস্তির ব্যবস্থা। আর সেই মিথ্যা এজাহার দায়ের তৎপরবর্তী বেআইনি কর্মসমূহ সম্পন্ন শেষে নিরপরাধ ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে যদি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধের ধারায় সে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে, তাহলে সেই তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার মতো অপরাধ সম্পন্ন করে ফেলে। অতঃপর সেই বানোয়াট চার্জশিটের প্রেক্ষিতে পরিচালিত বিচারের পর বিজ্ঞ আদালত নিরপরাধ ব্যক্তিকে যে শাস্তি প্রদান করে, মিথ্যা এজাহারকারী সেই শাস্তি প্রাপ্তির যোগ্য হয়ে যায়। হতে পারে তা মৃতৃদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো শাস্তি। দণ্ডবিধির ১৯৪ ধারায় সে নির্দেশনাই দেয়। মিথ্যা বা গায়েবি মামলার ক্ষেত্রে এমন প্রতিটি স্তরের জন্য তা সৃষ্টিকারী পুলিশ এবং বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট অবগত হওয়ার পরও যদি কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, সেক্ষেত্র বিশেষে ম্যাজিস্ট্রেটও দায়ী বিবেচিত হতে পারেন। যার দণ্ডের বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে দণ্ডবিধি ১৮৬০ আইনে। এছাড়া, গায়েবি ও রাজনৈতিক মামলা মোকাবিলায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন- ২০১৩ এর বিধানাবলীর যথাযথ প্রয়োগ করা আবশ্যক।
গায়েবি বা রাজনৈতিক মামলা দায়েরের আরেকটি শক্ত হাতিয়ার হচ্ছে আলামত। এর মধ্যে জর্দার কৌটা এবং পুরাতন আগ্নেয়াস্ত্র খুব সহজলভ্য। বর্তমানে কিছু মামলা দায়ের করা হচ্ছে ইয়াবা বা অন্যকোনো মাদক দিয়ে। একটি মামলার আলামত সঠিকভাবে ও পুরোপুরি ধ্বংস না করায় পুলিশ তা দিয়ে অন্য একটি মামলা সাজায়। প্রসঙ্গক্রমে আর একটি বিষয় উল্লেখ করা অনাবশ্যক হবে না যে, ভুক্তভোগীরা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন যে, তাদেরকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা নিজেরাই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক পদার্থ বা মাদক দ্রব্য তাদের দখলে রেখে অতঃপর তাদেরকে সেই দখল রাখার অপরাধ দেখিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। এমন অভিযোগের সত্য-মিথ্যা তদন্ত সাপেক্ষ হলেও বাস্তবতা হলো, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ তা বিশ্বাস করে থাকে। এতদবিষয়ক সাধারণ বিধান হলো যে, যিনিই এই সকল অবৈধ দ্রব্যসামগ্রী নিজের বেআইনি দখলে রাখবেন, তিনি যে শ্রেণি-পেশারই মানুষ হোন না কেন ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ও অতঃপর সাজাপ্রাপ্ত হবেন।
সচরাচর প্রয়োগকৃত সংশ্লিষ্ট আইনের ধারাসমূহ:
(১) অস্ত্র আইনের ১৪ ধারায় অননুমোদিত কোনো আগ্নেয়াস্ত্র দখলে রাখাকে অপরাধজনক কাজ বলে বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, যিনি এমন রাখবেন তিনি ১৯(চ) ধারানুযায়ী ৭ বছর হতে যাবজ্জীবন পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
(২) অনুরূপভাবে বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ বেআইনিভাবে কোনো বিস্ফোরক পদার্থ দখলে রাখে, কিংবা প্রস্তুত করে, বা তদদ্বারা কোনো বিস্ফোরণ ঘটায়, তবে সেই ব্যক্তি ৩ হইতে ২০ বছর মেয়াদ পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে এবং (৩) মাদবদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৯ ধারায় এ্যালকোহল ব্যতীত অন্য সকল প্রকার মাদকদ্রব্যের চাষাবাদ, উৎপাদন, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানি, ক্রয়-বিক্রয়, সরবরাহ, সংরক্ষণ, প্রয়োগ ও ব্যবহার নিসিদ্ধ ঘোষণা করে বলা হয়েছে- যে বা যিনি তা করবেন, তিনি অত্র আইনের ১৯ ধারায় উল্লিখিত শাস্তি সিডিউল অনুযায়ী যাবজ্জীবন বা ক্ষেত্রভেদে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। সুতরাং পুলিশ যদি কোন ব্যক্তিকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে উপরিবর্ণিত কোনো দ্রব্য নিজে থেকে দিয়ে সেই মামলা সাজায় বা গ্রেপ্তার- চার্জশিট প্রদান করে, তাহলে সেই পুলিশ কর্মকর্তা নিম্নোক্ত দুই ধরনের অপরাধে অপরাধী বলে সাব্যস্ত হয়ে যায়- প্রথমত: মিথ্যা মামলা সৃষ্টি, গ্রেপ্তারের নামে অন্যায় আটক এবং অসৎ চার্জশিট ইত্যাদি অপরাধ। যার ধারাসমূহ পূর্ববর্তী অধ্যায়সমূহে আলোচনা করা হয়েছে এবং দ্বিতীয়ত: সেই সকল অবৈধ দ্রব্যাদি পুলিশের নিজের দখলে রাখা অপরাধ। যার সাজা দ্রব্য বিবেচনায় অস্ত্র, বিস্ফোরক, বা মাদক আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় হতে পারে।
কোনো মামলা ভিত্তিহীন তা প্রাথমিকভাবে দৃশ্যমান হয় কথিত ঘটনাস্থলের সম্মানীত ব্যক্তিবর্গের নিকট যাদের উপস্থিতিতে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১০৩ ধারায় জব্দ তালিকা প্রস্তুতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানা হয় না। এছাড়া, রাজনৈতিক বা গায়েবি মামলার দু’টি উদাহরণ এখানে প্রনিধানযোগ্য যে, (ক) আমার সঙ্গে চাকরি করতেন এক জিআরও, তিনি ২০১৮ এর নির্বাচনের প্রাক্কালে ফোন করে বললেন, ‘স্যার, আমি তো গতকাল একটি তদন্ত কার্যে থানার বাইরে ছিলাম। সন্ধ্যায় এসে দেখি আমাকে দুই মামলায় এজাহারকারী দেখিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর ১৬ ধারাসহ অন্যান্য ধারায় দু’টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আমি থানায় জিজ্ঞাসা করলে বলে, উপরের নির্দেশ প্রত্যেক এসআই’কে একাধিক মামলার এজাহারকারী হতে হবে। এতে কোনো সমস্যায় পড়বো কি না?’ আমি উত্তরে তাকে জানালাম, বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর ১৬ ধারার বিধানতো ১৯৯১ সনের ২৬শে ফেব্রæয়ারি বাতিল করা হয়েছে।
এটাতো রাজনৈতিক হয়রানি মামলা। পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের সময় ভিন্ন ধারায় অবগাহন করবে, তবে অপরাধের সম্পৃক্ততার চেইন থাকবে না বিধায় কোন আসামিই হয়রানি ছাড়া আর কোনো সাজা পাবে না; এবং (খ) আমি ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন এক হরতাল হতে উদ্ভূত মামলায় চার্জশিট হতে দুই আসামির নাম কর্তনের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা দরখাস্ত দিয়েছেন। কারণ, উল্লেখ করেছেন, এক আসামি পাঁচ বছর আগে মৃত: এবং অপরজন তিন বছর ধরে বিদেশে আছেন। এজাহারেও তাদের নাম আছে। শুনানীতে অনেক বিষয় এসেছে। আমি দরখাস্ত নথিভুক্ত করে বিচারামলে সিদ্ধান্তের জন্য রাখলাম। এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন অদৃশ্য শক্তিবলে আমাকে হয়রানিরও অনেক চেষ্টা করেছে।
আমাদের জনগণকে অনেক মৌলিক অধিকারে ও মানবাধিকারে অলঙ্কিত করা হয়েছে। কিন্তু তার ভোগের অধিকার সীমিত। মৌলিক অধিকার চর্চায় যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ যেন জনস্বার্থ বিরোধী না হয়। একজন শাসক বা প্রশাসকও জনগণের একটা অংশ সেটা ক্ষমতায় থাকালীন ভুলে থাকার সংস্কৃতি আমাদের মজ্জাগত। মিথ্যা ও হয়রানী মুক্ত সমাজ বিনির্মানে প্রতিটি মানুষের মানবিক মূল্যবোধ হউক আমাদের রক্ষা কবচ।
পাঠকের মতামত
খুবই সময়োপযোগী ও প্রাসংঙ্গিক নিবন্ধ। তবে বিশেষ রাষ্ট্রিয় দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষ নামের অফিসারদের মানবিক মূল্যবোধ ও বিচার বিভাগের ন্যায়বোধ জাগ্রত করতে একটা ঝাকুনি দরকার। তাহলেই কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবার নামে এমন নিষ্ঠুরতা বন্ধ হবে।