নির্বাচিত কলাম
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ
নির্বাচন ঘিরে একই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে?
তারিক চয়ন
২৪ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার
চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। আসন্ন জানুয়ারি মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বক্তব্য দিলেও চায়ের দোকানে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়েও কানাঘুষা চলে। এসবের বাইরে বেশ নিয়মিতভাবেই কানে বাজে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন। রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে? বিএনপি কবে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে? বিএনপি কি ঢাকার রাজপথ দখল করতে পারবে? পর্দার আড়ালে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে কি সমঝোতা হচ্ছে বা হবে? আওয়ামী লীগ কি পদত্যাগ করবে? বিএনপিকে কি নির্বাচনকালীন সরকারে কিছু মন্ত্রিত্ব দেয়া হবে? সংসদের প্রধান বিরোধী দল, জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টি কি সংসদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপি’র সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেবে নাকি তারা আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করে ফের প্রধান বিরোধী দল হতে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষি করবে? আবারো কি ১/১১ এর মতো কিছু হবে? তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন অথবা তারা কি নির্বাচনের আগে দেশে আসবেন? বিএনপি বা বিএনপি জোট নির্বাচন বয়কট করলেও তাদের একটি অংশ কি নির্বাচনে অংশ নেবে? চীন কার সঙ্গে থাকবে? ভারত কি আওয়ামী লীগের পক্ষেই থাকবে? বিএনপি বয়কট করলেও জামায়াতে ইসলামী কি নির্বাচনে অংশ নেবে? বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? চীন ও ভারতের মধ্যে সরকার শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেবে? নির্বাচনের সময় পুলিশের ভূমিকা কেমন হবে? নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া কি ছাড়া পাবেন? জাইমা কি রাজনীতিতে আসবেন? জয় নাকি পুতুল, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উত্তরসূরি কে হবেন? নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকা কেমন হবে?
তবে, এসব প্রশ্ন ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি হাটে-ঘাটে-মাঠে-চায়ের দোকানে-টিভি টকশোতে-পত্রিকার কলামে-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সহ সর্বমহলে উত্থাপিত হচ্ছে সেটি হলো- আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে? আরও সুনির্দিষ্ট করে লিখলে, আমেরিকাকে কি ভারত ম্যানেজ করে ফেলবে? কিংবা আরও সুনির্দিষ্ট করে লিখলে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে ভারত কি আমেরিকাকে ম্যানেজ করে ফেলবে? এই প্রথম প্রশ্ন থেকে স্বাভাবিকভাবেই আরেকটি প্রশ্ন জাগে, আমেরিকাকে ম্যানেজ করার প্রশ্ন আসছে কেন? আর সেই আরেকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই প্রথম প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে।

পাঠক, চলুন খুঁজে নেয়া যাক আরেকটি প্রশ্নের উত্তর। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারের আমলে নানা কারণেই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র আমেরিকাকে ম্যানেজ করার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কিন্তু, হালে যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করার বিষয়টি টক অফ দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয় মূলত ২০২১ সালের ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর।
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য যে, র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন খোদ সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা। নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরদিনই (১১ই ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নতুন ঢং’ হিসেবে উল্লেখ করে, র্যাবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো অস্বীকার এবং ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও দিন যত গড়িয়েছে ততই ফুটে উঠেছে এ ইস্যুতে দেশটিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা।
দু’সপ্তাহ না যেতেই সুর বদল করেন মোমেন। ২৪শে ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে পাঠানো এক চিঠিতে ‘ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে’ ওই নিষেধাজ্ঞা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের তরফে যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করার বিষয়টি একেবারে নগ্ন হয়ে পড়ে নতুন বছরের (২০২২ সাল) ২৬শে এপ্রিলে যখন মন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অনাবাসী ভারতীয়রাও দেশটির সরকারকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে।
অবশ্য পর্যবেক্ষক এবং বিশ্লেষকরা শুরু থেকেই বলছিলেন যে, কেবল আলোচনা বা অনুরোধের মাধ্যমে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো পরিবর্তন আসবে না। নিষেধাজ্ঞার মাস চারেকের মধ্যেই (এপ্রিল, ২০২২) যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে সেটার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষে আলাদা করে হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়। এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ এবং যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে, সে সমস্ত অভিযোগের ব্যাপারে এক ধরনের ধারণা তাদের আছে। তারা সেটা নজরদারিতে রেখেছে।’
নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইস্যুটি জড়িয়ে তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমার জানা মতে, র্যাবের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যুক্ত আছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর, গণতন্ত্রের বিষয়, মত প্রকাশের অধিকারের প্রশ্ন এবং আগামী নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়- সে বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্রের নজর রয়েছে।’
প্রফেসর রীয়াজের কথার মিল খুঁজে পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে দেয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের বক্তব্য গুলোতে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাসখানেক পর (জানুয়ারি, ২০২২) এই লেখককে দেয়া নিজের বিদায়ী সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দু’মাস পর (মার্চ, ২০২২) ঢাকা সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড ‘র্যাবের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা কঠিন’ এমন ইঙ্গিত করে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই নিশ্চুপ থাকবে না। এর আগের দিন নুল্যান্ড পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও মন্ত্রী তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে র্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য জোরালো আহ্বান জানান।
এদিকে, গত বছর (২৯শে সেপ্টেম্বর) সেন্টার ফর গর্ভনেন্স স্ট্যাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্ও ‘র্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে না’ জানিয়ে বলেন, বাহিনীটিতে ‘সংস্কার’ আনলে সেটি বিবেচনা করা হবে। এর আগে (৩১শে মে, ২০২২) ডিক্যাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উক্ত সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন পিটার হাস্, ‘র্যাবের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে’। এরপরও র্যাবের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের প্রকাশ্য আহ্বান এবং পর্দার অন্তরালে দেন- দেরবার যেমন থেমে থাকেনি, তেমনি থেমে থাকেনি নিষেধাজ্ঞার জন্য বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপানো। এ বছরও (১৪ই জানুয়ারি) একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার পর মন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা অন্য বুদ্ধিতে তাদের ওপর প্রেসার দিয়েছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে এ জিনিসগুলো ওভারকাম করবো। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হবে’। ২রা মার্চ র্যাবের মহাপরিচালক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা আছে জানিয়ে বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যা জানতে চেয়েছিল; তাদের অনেক ভুয়া তথ্য জানানো হয়েছে। মূলত, তাদের বিভ্রান্ত করা হয়েছিল’। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে বৈঠকের পর ‘র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমন আশা প্রকাশ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ঠিক পরদিনই ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনুর এই লেখককে জানিয়েছিলেন যে, ঢাকায় নিজের বৈঠকগুলোতে ডোনাল্ড লু র্যাবের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে কোনো সময়সীমা নির্দেশ করেননি।
র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞার ইস্যুটি ছাড়াও আরেকটি ইস্যুতে ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ’ করার জোর আলোচনা চলেছিল। র্যাবের বিরুদ্ধে যে সময় নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়া হয় ঠিক সেই মুহূর্তে (৯ই ও ১০ই ডিসেম্বর, ২০২১) চলছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত প্রথম গণতন্ত্র সম্মেলন। ওই সম্মেলনে বাইডেন বিশ্বের অধিকাংশ দেশকে (১১০টি) আমন্ত্রণ জানান। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, নেপাল এমনকি পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশকে বাদ দেয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী মোমেন সে সময় যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে নিয়ে ‘গণতন্ত্র সম্মেলন’ ডেকেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, যেসব দেশ গণতন্ত্রের দিক থেকে দুর্বল হয়তো তাদের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা দুই পর্বে এই সম্মেলন করবে। প্রথম পর্বে এমন কয়েকটি দেশ নিয়ে সম্মেলন করছে, যারা গণতান্ত্রিক দিক থেকে খুবই দুর্বল। দ্বিতীয় গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের বাদ দিয়েছে সেটি আমি বলি না। হয়তো পরে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের ডাকবে’।
মন্ত্রী মোমেনের উক্ত বক্তব্য শোনে অনেকেই তখন বলাবলি করছিলেন যে, ‘হয়তো পরে যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করা হবে এবং পরবর্তী গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হবে’। কিন্তু, বছর দেড়েক পর (২৯ ও ৩০শে মার্চ, ২০২৩) অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় গণতন্ত্র সম্মেলনেও আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ। দায়িত্বশীল সূত্র মানবজমিনকে জানায়, এবারের সম্মেলনে আমন্ত্রণের পূর্বশর্ত হিসেবে কিছু বিষয়ে বাংলাদেশের আগাম প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ঢাকা তাতে তাৎক্ষণিক সাড়া না দেয়ায় আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত ঝুলে যায়! এবারের সম্মেলনেও আমন্ত্রণ না পাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, অনেক দেশকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দাওয়াত দেয়, যাদের মধ্যে গণতন্ত্রের নাম গন্ধও নেই।
এই প্রেক্ষাপটে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশকে ধারাবাহিকভাবে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর, বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অপেক্ষাকৃত চুপ ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি ‘হাসিনাকে দুর্বল করলে ক্ষতি সবার, বার্তা আমেরিকাকে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সূত্রবিহীন প্রতিবেদনটির সত্যতা এখনো যাচাই না হলেও নির্বাচন ঘিরে সর্বত্র এখন একটাই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে?
পাঠকের মতামত
তারিক চয়ণ আপনার লিখাটি ভালো করে পড়লাম আপনি কিন্তু এদেশের জনগণ কি চায় সেটা বলেননি, যুক্তির খাতিরে ধরলাম আমেরিকার চাওয়া মতে একটা নির্বাচন হলো কিন্তু বিএনপির চাওয়া কেয়ার টেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হলোনা আর বিএনপি তাদের বক্তব্য অনুযায়ী নির্বাচনেও এলোনা, আওয়ামিলীগ তার লালু ভুলুদের নিয়ে নির্বাচনে জয় লাভ করে রাস্ট্র ক্ষমতায় চলে আসলো। এরপর কি হবে? জনগণ কি বিএনপির পিছনে থেকে গণঅভ্যুত্থান করে সরকারের পতন ঘটাবে? আমেরিকাতো আর বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে এটা বলেনি ওনারা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তাই বলছে। এখন জনগণ যদি কোন পরিবর্তন না আনতে পারে তাহলে কোন রাস্ট্র কিছু করতে পারবে বলে মনে হয়না।
America is already managed by India. In our country, fair elections will never come because of India. Common already lost its voting power. Awami lig already looted common people's wealth, rights, and everything and they tortured too much. Awami Lig knows that they don't have any support from common people because of their activities but they will come to the power again with the help of India
আমেরিকা ম্যানেজ হবে? আমেরিকা কানপড়া শোনার জাতি নয়, যদিও তারা যে স্বার্থ ছাড়া কোন কাজ করেনা, সেটাও ঠিক , কিন্তু বিরোধী দলগুলো উপায় না দেখে আমেরিকার স্মরণাপন্ন্ হচ্ছে।
আমেরিকার চাওয়া একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আর ভারতের চাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনাকে দুর্বল না করা। দুইটি প্রভাবশালী দেশের চাহিদার পার্থক্যই প্রমানকরে দেয়ে তাদের উদ্দেশ্য।
আমেরিকা তো ম্যনেজ হয়ে বসেই আছে। আসল কথা হল আমেরিকা সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশ একমাত্র আওয়ামী ছাড়া অন্য কোন দলকে গোনার মধ্যেই নেয় না। বিএনপির চরিত্র সম্পর্কে তারা খুব ওয়াকিবহাল এবং তারা জানে বিএনপি কোন রাজনৈতিক দলই না এবং তাদের কোন রাজনৈতিক চরিত্রই নাই। আসলে তারা আওয়ামী লীগের সাথে একটু দরকসাকসি করছে এবং এখানে স্বাভাবিক ভাবে সবাই উইন উইন সিচুয়েশন এ থাকতে চাই।
মনে হয় আমেরিকা ম্যানেজের পথেই হাঁটছে। বিরোধী দলগুলোকে (বিএনপি ছাড়া) বিশ্বাস করা যায় না ? কাদের মিয়া ও বামপন্থী দলগুলো কুকুরের মত বিস্কুট দেখালেই পিছনে হাঁটে, যার প্রমাণ সদ্য ফেরৎ জাতীয় পার্টি (কাদের) ! ভারতে কি কথা হয়েছে তাদের অনুমতি ছাড়া বলতে পারবেন না অর্থাৎ ভারতে গোলাম। অথবা ভারত এমন সাপোর্ট দিয়েছে যে তাকে নির্দিষ্ট সংখক সদস্য দিবে। অন্যদিকে বিএনপি এমন কিছু মাঠে দেখাচ্ছে না সরকারের মাথায় টনক নড়ে ? এতিম পার্টি পিতা মাতা ছাড়া অপরের সাহায্য পেলেও এতিমের ছায়া থেকেই যায়।এই সুযোগে আমেরিকার স্বার্থে সরকার যদি কিছু করে আমেরিকা গণতন্ত্রের কথা বললেও বিরোধী দলের মাথায় কাঠাল ভেঙে স্বার্থ নিয়ে চলে যাবে। এটাই দেখা যাচ্ছে।
২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার সকল প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ফলে, এবং বর্ত্তমান সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরেও, এমন কি নুতন সংসদের সদস্যবর্গ শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্ত্তমান সংসদ্ বহাল থাকবে, এই পরিস্থিতিতে কি শেখ হাসিনার অধীনে ২০২৩/২৪ নির্বাচন গ্রহনযোগ্য হওয়া সম্ভব? নিশ্চয় নয়। বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পাঁচ পূর্বশর্ত: ✴দলীয় সরকারের পরিবর্তে নির্দলীয় সরকার ✴তাবেদার নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ✴প্রশাসন থেকে দলবাজদের অপসারণ ✴দলবাজ বিচারকদের অপসারণ ✴নির্বাচনের সময় মেজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন। কেউ কেউ জাতি সঙ্ঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী নিয়োগ করার কথাও বলছে . . . বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটময় এই সন্ধিক্ষণ প্রমাণ করবে কারা এ দেশে প্রকৃত গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবং কোন্ গণশত্রুরা এর বিপক্ষে। সপক্ষ শক্তিকে চেনার প্রথম উপায় হলো, এরা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে না। অন্যদিকে, বিএনপির পটু কৌশল লক্ষ্য করবার মতো। ১. ধাপে ধাপে লক্ষ্যের দিকে সব্বাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। ২. দখলদারদের নৈতিক পরাজয় নিশ্চিত করা। ৩. আওয়ামী লীগের পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে, সম্পূর্ণভাবে সন্ত্রাস পরিহার করে, বিশ্বের কাছে নিজেদের উদার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে প্রমাণ করা। চেতনাবাজী, জঙ্গি দমন, উন্নয়নের খতিয়ান, সবই এখন বস্তাপঁচা মাল। জনগন আর খায় না। জনগন জেগেছে। তাদের আরও জাগতে হবে। জাগরণেই সমাধান। বিএনপির ১০ দফার লক্ষ্য, নির্দলীয় সরকাবরের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করা। আর ২৭ দফা হলো, জনগণের কাছে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের প্রতিজ্ঞা। জনগণ, বিএনপি ও আন্দোলনকারী দলগুলো নিশ্চয়ই জানে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ পরাজিত হবে না। তাই সঠিক সময়ে চুড়ান্ত আঘাত হানার যথাযত প্রস্তুতি নিশ্চয়ই জনগণ এবং দলগুলো নিচ্ছে। অবশ্য, তাদের এ ঘোষণাও দিতে হবে যে, তারা প্রথমে আক্রমণ করবে না, তবে আঘাত এলে কঠোর প্রত্যঘাত করা হবে।
আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে? Maybe impossible !
যৌক্তিক লেখা!! অনেক ভালো লেগেছে।
আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে আপনার আগের প্রশ্নের উত্তর আমরা পেয়েছি। সেখানেও এখন পর্যন্ত ম্যানেজ হয়ার খবর পাইনি অর্থাৎ ম্যানেজ করা যায়নি। তাহলে নতুন প্রশ্নের জন্য একিই উত্তর কি আশা করা যায়না? সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ প্রশ্ন হলো যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গনতন্ত্র পুনরূদ্ধারে কেন যুক্ত হলো? তাদের উদ্দেশ্য শুধু গনন্তন্ত্র নাকি অন্য কিছু? অন্যকিছু হলে ম্যানেজ করা মোটেও সম্ভব হবেনা।
একটাই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে? আমেরিকা বিশ্বে গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের মোড়ল সাজলেও নিজের স্বার্থের জন্য সব পারে । তাই কোন দল,দেশ, গ্রপ নয় , আমরা জনগন, আমাদের দেশে গনতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গন আন্দোলনের প্রয়োজন ,এটাই চিরন্তন ।
ধন্যবাদ সিনিয়র রিপোর্টার জবান তারিক চয়ন আপনার মূল্য রিপোর্ট এর জন্য। আপনার সু সুস্থ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
নিরপেক্ষ সরকার: নিরপেক্ষ নির্বাচন: টেকসই গনতন্ত্র: নিরাপদ ভবিষ্যৎ -------------------------------------------------------------------- জনাব তারিক চয়ন নিজেই বলেছেন, আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন সূত্রবিহীন। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনটি যে সূত্রবিহীন মানবজমিন অলরেডি সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিষয়টি খোলাসা করেছে। আর সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা তাদের পররাষ্ট্রনীতি ভারতের মতো একটি দেশের কথায় ঠিক করবে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার গনতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের অধিকার। সেইমতে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বাংলাদেশে। শুধু কেবল বাংলাদেশ নয়, বাইডেন প্রশাসনের একমুহূর্তের চাওয়া একটি গনতান্ত্রিক বিশ্ব। সুতরাং, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিরুদ্ধে ভারত ম্যানেজ করতে পারবে আমেরিকাকে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। গনতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, নির্বাচন নিরপেক্ষ না হলে গনতন্ত্র হোঁচট খায়, টেকসই হওয়ার সুযোগ পায়না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে চলতে আমাদের গনতন্ত্র মাজা সোজা করে এখনো দাঁড়াতে পারেনি। তাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের আলোচনা ডালপালা মেলেছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচনের তাগিদ অনুভব করছে সরকারি দল, বিরোধী দল এবং বিদেশিরাও। সরকার ক্ষমতায় বহাল থেকে তাঁদের অধীনে সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বিভিন্ন সময় সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিদেশের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের সময় সরকারি দলের নেতারা সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বলেছেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ করা হবে। এটা হলো সরকারি দলের মতামত। বিদেশিরা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। কিন্তু কি উপায়ে নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে তা বিদেশিরা বলছেনা। বিএনপি ও তাঁদের সাথে সরকার বিরোধী আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া সম্ভব। পত্রপত্রিকায় একটি বিষয় অনেক সময় দেখা যায়, অনেকেই বলেছেন বাংলাদেশে এপর্যন্ত যতোগুলো নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে সবকটিতে ক্ষমতাসীন সরকার জয়লাভ করেছে। কিন্তু কেনো করেছে সেই বিশ্লেষণ করতে দেখা যায়না। দলীয় সরকার নিরপেক্ষ নয়, তাই তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব। আমাদের দেশে গনতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি। রাজনীতিবিদরা জনগণের কাছে কখনো জবাবদিহি করেননি। স্বাধীনতার পরে প্রথমে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। কয়েকটি বছর যেতে না যেতেই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় মোড় ঘুরে একদলীয় শাসনের দিকে চলে যায়। রাজনৈতিক রেষারেষি এমন আকার ধারণ করেছে, এক দলের উত্তম কাজ অন্য দল ধারণ করতে পারেনি। জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গনতান্ত্রিক শাসনের দিকে প্রত্যাবর্তন করেন। পরে তাও লণ্ডভণ্ড করা হয়। বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ঐক্যমতে নির্বাচন কালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে যে কয়টি নির্বাচন করা হয়েছে তার সবকয়টি নিরপেক্ষ হয়েছে। কারণ সুস্পষ্ট। সরকার যদি নিরপেক্ষ হয়, নির্বাচনও নিরপেক্ষ হয়। এটা আমাদের দেশের বাস্তবতা। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে নির্বাচন কালীন সরকারের উদাহরণ নেই। টেকসই গনতান্ত্রিক দেশগুলোতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও হস্তক্ষেপ করা হয়না এবং নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৮১ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন করেই তাঁর নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দল পর পর পাঁচবার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তাঁর সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সুযোগ পায়নি। কারণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা হয়নি। নির্বাচন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়েছে। তিনি এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গনতন্ত্রকে টেকসই করে, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে এবং দেশকে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে দিয়ে ২০০৩ সালের ৩০শে অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। যা আমাদের দেশের জন্য আকাশকুসুম কল্পনা। তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একটানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। তার আগে তিনি একটানা ২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ১৪-ই মে ২০২৩ তারিখে তুরস্কে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে এরদোয়ান ৫০% এর বেশি ভোট না পেলেও ভোটের হিসেবে প্রথম স্থানে এগিয়ে ছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভোটের হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। ফলে আবার দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হয় ২৮শে মে ২০২৩ তারিখে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন প্রায় ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে। ক্ষমতাসীন এরদোয়ানের সরকারের অধীনে নির্বাচন করা হলেও এতোটাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে পৃথিবীর কোনো দেশে সেই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। এরদোয়ান জনগণের মন জয় করে নিয়েছেন। সেজন্যই ২০১৬ সালে এরদোয়ানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে সামরিক অভ্যুত্থান নস্যাৎ করে দিয়েছেন সে দেশের জনগণ। সিপাহি জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সংহতির ফলে জিয়াউর রহমানকেও বন্দীদশা থেকে মুক্ত করা হয়েছিলো। বর্তমান সরকার যতোই বলুক তাঁদের সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা হবে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রকৃতি থেকে তা কখনো সম্ভব হবে বলে কেউ বিশ্বাস করতে পারছেনা। মূলত: আমাদের দেশ মালয়েশিয়া বা তুরস্ক নয়। পশ্চিমের টেকসই গনতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো তো নয়-ই। বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের জন্য একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অপরিহার্য। এর উপরেই নির্ভর করছে আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য কেমন দেশ আমরা রেখে যেতে চাই। নিরপেক্ষ সরকার হলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে গনতন্ত্র টেকসই রূপ লাভ করবে। গনতন্ত্র টেকসই হলে আমাদের পরষ্পরের মধ্যে মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, সহানুভূতি, শ্রদ্ধাবোধ, মহানুভবতা, সহিষ্ণুতা, ইনসাফ ও সহমর্মিতার চর্চা হবে। ফলে নিশ্চিন্ত হতে পারবো আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা শান্তির সুবাতাস পাবে, বাসযোগ্য দেশ পাবে।
একটাই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে? impossible