ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

মাননীয় মন্ত্রীগণ আপনাদের কার কথা বিশ্বাস করবো?

তারিক চয়ন
১৩ জুন ২০২৩, মঙ্গলবারmzamin

গত ৬ই জুন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দেশবিরোধী দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ১৪ দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা, সাবেক মন্ত্রী এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে আলোচনার দ্বার সবসময় খোলা আছে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। আমুর এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে যেন বোমা ফাটে। ফাটা-ই স্বাভাবিক। কেননা, বাংলাদেশের দেশি-বিদেশি বন্ধু এবং শুভাকাক্সক্ষীরা দীর্ঘদিন ধরেই চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র মধ্যে আলোচনা বা সংলাপের জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছিলেন। কিন্তু, ‘তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের ইস্যু ছাড়া বিএনপি আলোচনায় বসতে চায় না’ এবং ‘শর্ত দিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা বা সংলাপ হতে পারে না’ এমন সব যুক্তি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ বারবার এ ধরনের আহ্বানকে সাফ নাকচ করে দিয়েছিল।

এখন বলা নেই, কওয়া নেই; হঠাৎ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন বর্ষীয়ান নেতার মুখে নিজ থেকে আলোচনার কথা শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। রাজনীতি সচেতন বহু মানুষের পাশাপাশি বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীর ভাবখানা এমন- ‘হুম, তোমরা তো বলেছিলে আলোচনায় বসবে না? এখন কেন নিজ থেকে আলোচনার ডাক? আমাদের দাবি তো মানোনি। এখন আমেরিকা ভিসা নীতি ঘোষণা করায় সবই তোমরা করবে’। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলছিলেন, এটা আসলে আওয়ামী লীগের নতুন একটা চাল। কোনো এক নেতাকে দিয়ে আলোচনার জিকির তুলবে।

বিজ্ঞাপন
তারপর অন্য কোনো নেতা বলবেন, ‘এটা আমুর ব্যক্তিগত মত। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।’

ইচ্ছে করে হোক, বা অনিচ্ছাতেই হোক, বাস্তবে হয়েছেও তাই! আমুর ওই বক্তব্যের ঠিক পরদিনই (৭ই জুন) এটাকে তার ব্যক্তিগত মত বলে দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। তার এ বক্তব্য নিয়ে আমাদের দলের মধ্যে, সরকারের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও কোনো আলোচনা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত বক্তব্য।’ তবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তিনি বলেছেন, আসলে গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে, তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক, এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। 
তথ্যমন্ত্রী এমন দাবি করলেও আমুর বক্তব্যকে কি ব্যক্তিগত বক্তব্য বলে চালিয়ে দেয়া যায়? আমু যে অনুষ্ঠানে এমন কথা বলেছেন, সেটি কি ব্যক্তিগত কোনো অনুষ্ঠান? বলাবাহুল্য, আমু কেবল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাই নন, তিনি ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়কও বটে। তিনি যে সমাবেশে এমন কথা বলেছেন সেটিও ছিল ১৪ দল আয়োজিত একটি সমাবেশ। ওই সমাবেশে শুধু আমু-ই নন; ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের মতো জোটের অন্যান্য শীর্ষ নেতা এবং সাবেক মন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। এরকম একটি সমাবেশে আমু হঠাৎ করেই বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনার কথা বলে বসবেন, সেটি বিশ্বাস করা মুশকিল।

শুধু তথ্যমন্ত্রীই নন, বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনার কথা নাকচ করে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচন ঘিরে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা নিজেরা আলোচনা করবো। প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করবো।’ জাতিসংঘের মধ্যস্থতার কথাও উড়িয়ে দিয়ে কাদের প্রশ্ন করেন, ‘এখন বাইরের বিষয়টা কেন বারবার আসে? জাতিসংঘ কেন মধ্যস্থতা করবে? এখানে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ করবে এমন কোনো রাজনৈতিক সংকট এই স্বাধীন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত হয়নি।’ জাতিসংঘ কেন মধ্যস্থতা করবে এমন প্রশ্ন কাদের সাংবাদিক বা জনগণের উদ্দেশ্যে করলেও এই প্রশ্ন বরং তার করা উচিত ছিল নিজ দলের নেতা আমুকে। কেননা, হঠাৎ করেই আমু জাতিসংঘের প্রসঙ্গটি টেনে এনেছেন।

ওদিকে, কাদের এমন কথা বললেও একইদিন ‘গণতন্ত্র চাইলে আলোচনার বিকল্প নেই’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জনগণের ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাই আলোচনার বিকল্প কিছু নেই।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কথা বললেও যার বক্তব্য নিয়ে এত তোলপাড় সেই আমু ওই একইদিন আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে ‘নির্বাচন ইস্যুতে কাউকে আলোচনার জন্য আহ্বান করা হয়নি’ বলে দাবি করেন।  তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয় নাই, কাউকে দাওয়াত দেয়া হয় নাই। কাউকে আহ্বান করা হয় নাই। কাউকে আহ্বান করার সুযোগ নাই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত নয় যে দাওয়াত করে এনে খাওয়াবো। নির্বাচন নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে বারবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। সেই নির্বাচনে জাতিসংঘ থেকে তারানকোকে পাঠানো হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা তাদের সামনে প্রমাণ করেছিলাম নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। একটি দেশের জন্য সাংবিধানিক শূন্যতা কাম্য হতে পারে না।’

এভাবে, বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে একেক মন্ত্রীর একেক ধরনের এমনকি বিপরীতধর্মী মন্তব্যের কারণে আমাদের মতো আম-জনতা মন্ত্রীদের ঠিক কোন বক্তব্যটিকে বিশ্বাস করবো তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাই। এই সমস্যাটি যদি একটি ইস্যুতেই সীমাবদ্ধ থাকতো, তাহলেও হয়তো মানিয়ে নেয়া যেতো। কিন্তু, প্রায় প্রতিটি বড় ইস্যুতেই সরকারের একেকজন মন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা একেক ধরনের মন্তব্য শুনতে পাই।

বিদ্যুতের সমস্যা বা লোডশেডিংয়ের কথাই ধরা যাক। গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছি আমরা। এটি কেবল আমাদের কথা নয়। বিশ্বের প্রভাবশালী বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের শিরোনামই ছিল এমন-‘এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে বাংলাদেশ’। পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ তা বোঝা যায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকেও। সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। তখন শ্রীলঙ্কা তেল ও কয়লা কিনতে পারেনি, বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে পারেনি। আমদানি করতে পারেনি, কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’
দুঃখনক হলেও এটাই বাস্তবতা যে, দেশের এই কঠিন সংকটের মুহূর্তেও আমরা একেক মন্ত্রীর মুখ থেকে একেক ধরনের কথা শুনতে পাচ্ছি। গত ৪ই জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে (ভয়েস অফ আমেরিকা)। কিন্তু, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের এক সপ্তাহের মাথায় (১০ই জুন) পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানও ওই একই কথা বলেছেন- দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেছেন, ‘আদানির বিদ্যুৎ আসছে, কয়লাও জাহাজে আছে। দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে, না হলে ক্ষমা করে দিয়েন (মানবজমিন)।

এখানে লক্ষণীয় যে, দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী দুজনই দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছেন। কিন্তু, দুজনের বক্তব্যের মাঝখানে রয়েছে এক সপ্তাহের ব্যবধান! তাছাড়া, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না হলে পরিকল্পনামন্ত্রী তাকে ক্ষমা করে দিতে বলেছেন। তিনি যদি হিসাব কষে দু’সপ্তাহ সময় চেয়েই থাকেন, তাহলে ‘ক্ষমা’ করার প্রশ্ন উঠছে কেন, সেটি জানতে চাওয়াটা নিশ্চয়ই অপ্রাসঙ্গিক হবে না! অনেকে আবার তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, তাওতো মন্ত্রী মহোদয় ক্ষমা চাওয়ার কথা বলছেন, আজকালতো মন্ত্রী-এমপিরা প্রায় ভুলতেই বসেছেন যে, দেশের ক্ষমতার প্রকৃত মালিক জনগণ এবং জনগণের কাছে সরকার যেকোনো কাজের জবাবদিহি করতে বাধ্য।

যাই হোক, প্রায় এক মাস আগে (১৪ই মে) বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, খুব দ্রুতই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে (ঢাকা মেইল)। কিন্তু, মন্ত্রীর বক্তব্যের ঠিক পরদিনই যুগান্তরের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল- ‘দ্রুতই স্বাভাবিক হচ্ছে না বিদ্যুৎ গ্যাস পরিস্থিতি’। হয়েছেও তাই। মন্ত্রীর কথামতো বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক তো হয়নি, বরং আরও খারাপ হয়েছে। 
এর আগে গত বছরের বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের দায়িত্বশীল অনেকে ‘আর কিছুদিনের মধ্যে’ কিংবা অমুক সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি। ফলে, কোন মন্ত্রীর ঠিক কোন কথা বা কোন আশ্বাসটি জনগণ বিশ্বাস করবে, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হয়। এমন দ্বিধায় পড়তে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করার পরও। গত ২৪শে মে ভিসা নীতির কথা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার পর সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এটিকে স্বাগত জানান। যদিও ৩ই মে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এমন সিদ্ধান্তের কথা বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছিল। ৩ই মে থেকে ২৪শে মে পর্যন্ত সময়টায় সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে নানান নেতিবাচক কথা বলা হলেও ঘোষণাটি প্রকাশ্যে আসার পর বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বিএনপি’র বিরুদ্ধেই গেছে কারণ দলটি ভিসা নিষেধাজ্ঞা খাওয়ার ভয়ে এখন আর জ্বালাও-পোড়াও করতে পারবে না।

কিন্তু, মন্ত্রীরা এমন কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করছে খোদ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট! চ্যানেল আই অনলাইনের খবরে বলা হয়, ‘ক্ষমতাসীন এই জোট মনে করে, যারা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, মার্কিন ভিসা নীতি তাদের পক্ষে যাবে।’ অন্যদিকে, গত ২৭শে মে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। আমরা যেটি চাই-দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্বাচন, সেটিই যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনে দেখতে চায়। এক্ষেত্রে বিএনপিই মূলবাধা। আন্দোলন করে, সন্ত্রাস করে বিএনপি নির্বাচনকে ব্যাহত করতে চায়, বানচাল করতে চায়। বিএনপি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা করেছিল। সে রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেজন্যই যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে।’ (বার্তা২৪) ১১ই জুন কলকাতায় গিয়ে সেই কৃষিমন্ত্রীই ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ভুল বার্তা দিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন! একইদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যখন আমার সাক্ষাৎ হয়েছে তখন তাকে আমি বলেছি-মার্কিন ভিসা নীতির কারণে অপমানিত হয়েছে বাংলাদেশ। সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করলে আপত্তি নাই। কিন্তু শুধু একটা দলের জন্য ব্যবহার করলে আপত্তি আছে।’

এভাবে, বিএনপি’র সঙ্গে সংলাপই হোক, ভয়াবহ লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাই হোক কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয়ই হোক-একেক সময় একেক মন্ত্রীর একেক ধরনের কথায় সাধারণ জনগণ তো বটেই, সবচেয়ে পোড় খাওয়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বুঝতে পারছেন না, কোন মন্ত্রীর কখন বলা কোন কথাটি তারা বিশ্বাস করবেন।

পাঠকের মতামত

মুনাফেকি চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার মতো মারাত্মক অপরাধ। সহজ কিছু অভ্যাসেই ফুটে ওঠে মুনাফিকের পরিচয়। যুগে যুগে মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র ছিল দ্বিমুখী।হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার মাঝে ৪টি অভ্যাস পাওয়া যাবে; সে নিখাদ মুনাফিক। অভ্যাস ৪টি হলো- > কখনও আমানত রাখলে সে খেয়ানত করে। > কথা বললে মিথ্যা বলে। > প্রতিশ্রুতি দিলে ভঙ্গ করে এবং > যখন কারও সঙ্গে ঝগড়া করে তখনই (নৈতিক ও সততার) সব সীমালঙ্ঘন করে।’ (বুখারি ও মুসলিম) আল্লাহর পক্ষ থেকে মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফেরদের জন্য জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। এটা তাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ করেছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ৬৮) ‘হে নবি! আপনি কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম এবং তা কতই না নিকৃষ্ট ঠিকানা।’ (সুরা তাওবাহ : আয়াত ৭৩) তাই যারা এ গুলো করেন তাঁরা যেন আজ থেকেই এই জঘন্ন্য অপরাধ থেকে তয়বা করে বিরত থাকুন। না হয় ক্কথরতম শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকুন।

jalal hussain
১৪ জুন ২০২৩, বুধবার, ৮:০২ অপরাহ্ন

Dont belive any statement or don't belive govt party people they already sold this country to India

Tanweir
১৩ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ৩:৫২ পূর্বাহ্ন

"মিছা কথা বলিনা, হাছা কথারও ধার ধারিনা"- এইটা হইলো গিয়া ধোঁকা। এই ধোঁকা নাকি মানুষ দেয়।তবে এর প্রতিশব্দগুলি খুব খাসা যেমন প্রপঞ্চ অপলাপ গুজব গুল লুকোচুরি অষ্টরম্ভা ভেলকি কপট ঋতানৃত মিছামিছি অকারন শুধু শুধু । বিগত দেড় দশক ধরে এমন ভেল্কিবাজির একচেটিয়া কারবারিদের মিছা কথার বিপণণ আরো কিছু কাল চলতে দিতে কাহারো অসুবিধা হবার কথা নয়। কারন সঠিক পণ্য সত্যটি এখন অন্ধকার ভেদ করে আলোর দিকে ধাবমান।

মোহাম্মদ হারুন আল রশ
১৩ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ৩:১৫ পূর্বাহ্ন

আওয়ামিলীগ এখন এলোমেলো লীগে পরিনত হয়েছে।

Fm sahin
১২ জুন ২০২৩, সোমবার, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

আমরা বিশ্বাস করবো দেশের জনগনের কথা।

মো রাজন সরকার
১২ জুন ২০২৩, সোমবার, ৯:৫৪ অপরাহ্ন

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status