বিশ্বজমিন
‘ডেমোক্রেটস’ নামে নতুন দল গড়ছেন পিটিআই ছেড়ে আসা নেতারা
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ৫ জুন ২০২৩, সোমবার, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

পিটিআই ছেড়ে যাওয়া নেতারা এবার নতুন দল গঠন করেছে। সাবেক মন্ত্রী মুরাদ রাস ও হাশিম ডোগারের নেতৃত্বে ‘ডেমোক্রেটস’ নামের নতুন দল আত্মপ্রকাশ করেছে পাকিস্তানে। আর এতে যোগ দিয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ সাবেক আইনপ্রনেতা। ডোগার-রাস গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে আছেন একাধিক সাবেক প্রাদেশিক ও ফেডারেল মন্ত্রী। এ খবর দিয়েছে ডন।
খবরে জানানো হয়, এরইমধ্যে তারা দলে আরও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টানতে একের পর এক সভা করে চলেছে। ফলে রাজনৈতিক দিক থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠছে দলটি। তবে দলটিতে এখনও কোনো নারী সদস্য নেই। এই দলের আদর্শ কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দলের প্রধান রাস বলেন, একটি বিষয় স্পষ্ট যে ডেমোক্রেটরা ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)-এর বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে। রাস নিজেও পাঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে কতজন আইনপ্রনেতা দলটিতে যুক্ত হয়েছে তা নিয়ে জানতে চাইলে রাস বলেন, আমরা নিয়মিত বৈঠক করছি। কিন্তু এখনই যুক্ত হওয়া সদস্যদের নাম সামনে আনতে চাচ্ছি না। প্রায় সব দল থেকেই এই দলে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। এখনই তাদের নাম প্রকাশ করলে তারা সমস্যায় পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে জোর করছি না। পিটিআই আইনপ্রনেতারা স্বাধীনভাবে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। পিএমএল-কিউ এবং জাহাঙ্গীর খান তারিন গ্রুপের নেতারাও বৈঠক ও যোগদানের জন্য বার্তা পাঠাচ্ছেন। আমরা যথাযথ শক্তি অর্জনের পরই প্রকাশ্যে আসবো। ডেমোক্রেটরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাদের শক্তি ও পরিকল্পনা প্রকাশ্যে নিয়ে আসবে।
তবে শুধু নতুন ডেমোক্রেট দলেই নয়, অন্য দলগুলোতেও যুক্ত হচ্ছেন সাবেক পিটিআই নেতারা। পিপিপি, পিএমএল-কিউ এর মতো দলগুলোতেও যুক্ত হয়েছেন বহু পিটিআই নেতা। প্রায় প্রতিদিনই কয়েক জন করে পিটিআই নেতা দল ছাড়ছেন। একদম শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে আঞ্চলিক পর্যায়ের নেতারাও ইমরান খানকে ত্যাগ করে চলেছেন। এরপর নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে তারা একেক দলে যোগ দিচ্ছেন। তবে নওয়াজ শরীফের দল পিএমএল-এন তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সেখানে যুক্ত হতে পারছে না পিটিআই নেতারা।
গত ৯ই মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর পাকিস্তানজুড়ে শুরু হয় ভয়াবহ দাঙ্গা ও সহিংসতা। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। সেদিন হামলা হয় সরকারি ও বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায়। রাওয়ালপিণ্ডি ও লাহোরে সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে বিক্ষোভকারীরা। পুরো ঘটনাকে পাকিস্তানের জন্য নজিরবিহীন এক পরিস্থিতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ওই ঘটনার জন্য দায়ী করা হচ্ছে পিটিআই প্রধান ইমরান খানকে। এরপরই পিটিআই ছাড়তে শুরু করেন দলটির নেতারা। এরইমধ্যে দলটির বড় একটি অংশ ইমরান খানকে ত্যাগ করেছে। ইমরান এই নেতাদের সুবিধাবাদী বললেও পাশাপাশি দাবি করেছেন যে, চাপের কারণেই দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা। অপরদিকে দলত্যাগী নেতারা ৯ই মে’র ঘটনা নিয়ে ইমরান খানের অবস্থানের সমালোচনা করে চলেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, এভাবে দল ত্যাগের কারণে পাকিস্তানে পিটিআই’র ভবিষ্যত হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশটিতে নতুন শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের আবির্ভাবেরও প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে।