বিশ্বজমিন
একের পর এক ‘উইকেটের’ পতন
কী করবেন ‘ক্যাপ্টেন’ ইমরান
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:০০ অপরাহ্ন

একের পর এক ‘উইকেটের’ পতন হচ্ছে ইমরান খানের দলের। বুধবার সবচেয়ে বড় উইকেট হিসেবে পরিচিত, ইমরান খানের পর দলের কাণ্ডারি সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ উমর পদ ত্যাগ করেছেন। তবে তিনি দলেই থাকছেন। এরপর বৃহস্পতিবার মালিকা বোখারি, মুসারাত চিমা, জামশেদ চিমা, সিনেটর আবদুল কাদির দল থেকে পদত্যাগ ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে ইমরান খানের ওপর। পদত্যাগী নেতারা বলেছেন, ৯ই মে সহিংসতা প্রতিজন পাকিস্তানির জন্য বেদনার। মালিকা বোখারি বলেছেন, ৯ই মে’র ঘটনার জন্য আমি নিন্দা জানাই। যে ঘটনা ঘটেছে তা প্রতিজন পাকিস্তানির জন্য বেদনার। মালিকা জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তিনি। বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমাকে কেউ চাপ প্রয়োগ করেনি। একজন আইনজীবী হিসেবে পাকিস্তানে আমি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। এর আগে আদিয়ালা জেল থেকে তিনি মুক্তি পান। জনশৃংখলা ব্যবস্থাপনা অর্ডারের ৪ ধারার অধীনে তাকে গ্রেপ্তার করে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৯ই মে সহিংস ঘটনার নেপথ্যে যারা আছে তাদেরকে শাস্তি দেয়া উচিত। যখন রেড লাইন অতিক্রম করা হয়েছে, তখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
আলাদা এক সংবাদ সম্মেলনে মুসারাত চিমা, জামশেদ চিমা দম্পতি জানান তারা আর ইমরান খানের দলে নেই। জামশেদ চিমা বলেন, কোর কমান্ডার হাউজের কাছে আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। যা ঘটেছে তা আমাকে বেদনাহত করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি পাওয়া উচিত। নেতাকর্মীদের সহিংসতা থামাতে ব্যর্থ হয়েছে পিটিআই। রাজনীতি আমাদের রক্তে মিশে আছে। তাই রাজনীতি ছেড়ে দেয়াটা খুব সহজ সিদ্ধান্ত নয়। তাই বলে জাতির স্বার্থে রাজনীতি করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর ক্ষতি করা যাবে না। জনগণেরও না।
আলাদাভাবে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন পিটিআই সিনেটর মোহাম্মদ আবদুল কাদির। তিনিও ৯ই মের সহিংসতা, জিন্নাহ হাউজে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, সিনেটে পিটিআইয়ের সদস্য হিসেবে বসার চেয়ে স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে বসবো।
অন্যদিকে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক সদস্য মুমতাজ আহমদ মাহারভি ও আসিফ মানজুর মোহালও দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে আসিফ মানজুর মোহাল ৯ই মে’কে পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে কালো দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এভাবে একের পর এক নেতারা দল ত্যাগ করার ফলে প্রচণ্ড চাপে পড়েছেন ইমরান খান। এরই মধ্যে তাকে ছেড়ে গেছেন সাবেক মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজারি, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, আমির মেহমুদ কিয়ানি, মালিক আমিন আসলাম, মাহমুদ মৌলভি, আফতাব সিদ্দিকী, ফয়জুল হাসান চোহান প্রমুখ। সব মিলে পদত্যাগী নেতার সংখ্যা দুই ডজন ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগে।
এ অবস্থায় কি করবেন ক্যাপ্টেন ইমরান খান! একজন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইমরান খান খুব শিগগিরই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করবেন যুক্তরাষ্ট্রে। গত সপ্তাহে যখন গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ইমরান খানকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তার ওপর এমন চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ওই গুজবের পর পরই ইমরান খান অবশ্য জানিয়েছিলেন, তিনি দেশ ছেড়ে কোথাও যাবেন না। পাকিস্তানই তার দেশ। কিন্তু ‘অদৃশ্য’ বা দৃশ্য যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে তার টিকে থাকা কঠিন। ফলে প্রতিমন্ত্রীর ওই বক্তব্যকে একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।