ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

বিএনপিতে এত বিশ্বাসঘাতক!

শামীমুল হক
১৯ মে ২০২৩, শুক্রবারmzamin

এত গেল পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্যে শুধুমাত্র একটির বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকের তালিকা। বাকি চার সিটির বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকের তালিকাও নাকি প্রস্তুত হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে তাদের নামও আমরা জানতে পারবো। তবে প্রশ্ন রইলো, একটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই যদি ২৯ জন পদধারী সিনিয়র নেতা দলের নির্দেশ অমান্য করে তাহলে তাদের থাকেটা কি? বিএনপি কাদের ওপর ভরসা করে তৃণমূলে এগিয়ে যাবে? এ অবস্থায় আরেকটি বিষয় সামনে এলো আর তা হলো- বিএনপিকে এখন দুই পক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও নিজ দলের বেইমানদের সঙ্গে। আবার মাঠের আন্দোলনও ঠিক রাখতে হচ্ছে।

আলামত ভালো নয়। চারদিকে গুমোট অবস্থা। ঝড়-বৃৃষ্টি আসার আগে আকাশ যেমন অন্য রং ধারণ করে। ভ্যাপসা গরম ছাড়ে মাটি। গাছপালা সব নীরব নিথর হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন
ঠিক তেমনই অবস্থা এখন দেশের। যেন বড় কোনো ঝড়ের পূর্বাভাস। আসলেই কি ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানবে। নাকি আলতো করে ছুঁয়ে যাবে? যেমন ক’দিন আগে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র মতো। এই মোখা নিয়ে আতঙ্ক ছিল দেশজুড়ে। আবহাওয়া দপ্তর আগে থেকেই জানান দিয়ে রেখেছে ঝড়ের তীব্র আঘাতের কথা। উপকূলের মানুষজনকে আগে থেকেই সরিয়ে নেয়া হয় আশ্রয়কেন্দ্রে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর ছুটি বাতিল করা হয়। কিন্তু আঘাত হানার দিন হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারমুখী হয়। মিয়ানমারে আঘাত হানার আগে বাংলাদেশ পেরুবার সময় সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে ঝড়ের গতি বেড়ে যায়। এতটুকুই। কিন্তু যদি বাংলাদেশে আঘাত করতো ঘূর্ণিঝড় মোখা তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কি হতো, তা ছিল কল্পনাতীত। ১৯৯১ সালের এমন ঘূর্ণিঝড়ে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু এখনো মানুষকে কাঁদায়। স্মরণকালের ভয়াবহ সেই ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছে বহু মানুষ। অথচ ’৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও ভয়াবহ ছিল মোখা। ভাগ্য সুপ্রসন্ন বাংলাদেশের। রক্ষা পেয়েছে। তবে, রাজনীতির আকাশে এখন ঘুরছে মোখা’র মতো এক ঝড়। সেই ঝড়ের আলামত স্পষ্ট। বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দল দুই মেরুতে অবস্থান করছে। পাশাপাশি দুই দলেরই প্রভাবশালী নেতারা ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। প্রচ্ছন্ন হুমকি দিচ্ছেন। কোনো প্রকারেই কেউ কাউকে ছাড়বে না। যার যার অবস্থানে অটল থাকার কথা প্রতিদিনই জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে? এ বিষয়টি নিয়ে তারা এখন মুখোমুখি। বিএনপিসহ মাঠের সমমনা দলগুলো তাদের দাবি আদায়ে একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। সামনে কঠিন কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দিয়ে রাখছে তারা। এমনকি ১০ দফা থেকে এখন তারা এক দফা দাবি নিয়ে এগুতে চাইছে। নতুন কর্মসূচি হিসেবে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ তো চলমান আছেই। তারপরও তাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কঠোরভাবে শান্তি সমাবেশগুলো পালন করতে। বিরোধী দল যেন কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার কথাও বলা হয়েছে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায়। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। 

সংবিধান অনুযায়ী তারা নির্বাচন করবে। সাম্প্রতিক সময়ে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে- সেখানে বিএনপি’র ঠাঁই হবে না। জাতীয় পার্টি সরকারে জায়গা পাবে। কারণ সংসদে এখন আর বিএনপি নেই। অন্যদিকে বিএনপি তো এ সরকারের অধীনে নির্বাচনেই যাবে না। তারা চায় সংসদ ভেঙে সরকারের পদত্যাগ। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন। যে সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে। জনগণের ভোটে যারা জয়ী হবেন তারাই সরকার গঠন করবে। মূলত এ নিয়েই হবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে লড়াই। যে লড়াইয়ের উত্তাপ ছড়াবে সর্বত্র। এখানেই আতঙ্ক। কী হবে শেষ মুহূর্তে। সরকার কি তাদের চিন্তায় সফল হবে? নাকি বিএনপি সফল হবে। সফল তো পরের কথা। আগে মুখোমুখি অবস্থানে থেকে দু’টি পক্ষ যে ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে তা যদি মোখা’র মতো গতিপথ পরিবর্তন না করে তাহলে সবকিছু তছনছ করে দেবে হয়তো। আর যদি গতিপথ পরিবর্তন করে তাহলে হালকার উপর দিয়ে বয়ে যাবে। শেষ পরিণতি এমন হলে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে দেশের মানুষ। 

বর্তমানে দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচনেও বিএনপি নেই। বিএনপি’র স্পষ্ট ঘোষণা এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই তারা যাবে না। তারপরও যদি কেউ যায় তাহলে তাদের বহিষ্কার করা হবে। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি’র ২৯ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এ ঘটনায় প্রমাণ হয়, বিএনপি হার্ডলাইনে আছে। তাদের অপরাধ দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তারা। বিএনপি এই ২৯ জনের নামে পৃথকভাবে বহিষ্কারের চিঠি পাঠিয়েছে। বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বক্তব্যও খুবই কঠিন। চিঠিতে বলা হয়,  গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রহসনের নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে গত ১১ই মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও আপনি কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেননিÑযা গুরুতর অসদাচরণ।

নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে গত ১৫ বছর ধরে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা যারা গুম-খুন ও পৈশাচিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারসহ দেশের গণতন্ত্রকামী বিপুল জনগোষ্ঠীর আকাক্সক্ষার প্রতি আপনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনাকে এহেন অবজ্ঞা ও ঔদ্ধত্যের জন্য বিএনপি’র গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে আপনাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো। গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে আপনার নাম একজন বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে। 

এবার দেখা যাক- বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকের তালিকায় কারা আছেন? এক নম্বরেই রয়েছেন, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক হাসান আজমল ভূঁইয়া। এরপর ধারাবাহিকভাবে রয়েছেন গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক হান্নান মিয়া হানু, বাসন মেট্রো থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন মুসা চৌধুরী, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সফিউদ্দিন আহমেদ, গাজীপুর মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার, পুবাইল মেট্রো থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব এডভোকেট নজরুল ইসলাম ভিকি, একই থানা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক সুলতান উদ্দিন চেয়ারম্যান, সদর মেট্রো থানা বিএনপি’র সভাপতি মজিবর সরকার, সদর মেট্রো থানা বিএনপি’র সদস্য মাহবুবুর রশিদ খান শিপু, একই থানা বিএনপি’র সদস্য সবদের আহমেদ, খায়রুল আলম, জিএস মনির, শহিদ, মো. তানভির আহমেদ, শাহিন আলম, আনোয়ার সরকার, রফিকুল ইসলাম রাতা, গাজীপুর মহানগর বিএনপি’র সদস্য আবুল হাশেম, টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপি’র সদস্য সেলিম হোসেন, গাজীপুর মহানগর বিএনপি’র সাবেক সদস্য ফারুক হোসেন খান, গাজীপুর মহানগর মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার নুরুন্নাহার, গাজীপুর মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি কেয়া শারমিন, গাজীপুর মহানগর মহিলা দলের সদস্য ফিরোজা বেগম, টঙ্গী পূর্ব থানা মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসিনা মমতাজ, ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এডভোকেট আলম, ৩৭ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আউয়াল সরকার, গাছা থানা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মাহফুজুর রহমান, ৪৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র যুব বিষয়ক সম্পাদক মোবারক হোসেন মিলন ও টঙ্গী পশ্চিম থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান। তারা প্রত্যেকেই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন। 

এত গেল পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্যে শুধুমাত্র একটির বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকের তালিকা। বাকি চার সিটির বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকের তালিকাও নাকি প্রস্তুত হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে তাদের নামও আমরা জানতে পারবো। তবে প্রশ্ন রইলো, একটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই যদি ২৯ জন পদধারী সিনিয়র নেতা দলের নির্দেশ অমান্য করে তাহলে তাদের থাকেটা কি? বিএনপি কাদের ওপর ভরসা করে তৃণমূলে এগিয়ে যাবে? এ অবস্থায় আরেকটি বিষয় সামনে এলো আর তা হলো- বিএনপিকে এখন দুই পক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও নিজ দলের বেইমানদের সঙ্গে। আবার মাঠের আন্দোলনও ঠিক রাখতে হচ্ছে। সমমনাদের সঙ্গেও তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে। এতদিক সামলিয়ে বিএনপি কতোটুকু এগুতে পারবে? এ জন্যই হয়তো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি কিছুই করতে পারবে না। তারা আন্দোলনে ব্যর্থ। জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। যদিও বিএনপি ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের কড়া জবাব সব সময়ই দিয়ে আসছে। এই জবাব আর পাল্টা জবাবেই সামনে আসে ঝড়ের শঙ্কা। এখন দেখার বিষয় মোখা’র মতো কে গতিপথ পরিবর্তন করে। আওয়ামী লীগ না বিএনপি?

পাঠকের মতামত

বেহুদা ভাই চিন্তা করে দেখেন শুধু পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মধ্যে গাজীপুরেই ২৯ বেঈমান বিএনপির বিরুদ্ধে দাড়িয়ে গেছে বাকি আছে আরও চারটি তারপরে বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন তখন বিএনপির কত বিশ্বাসঘাতক বেরিয়ে পরবে তা এখন থেকেই ভাবতে হবে তা না হলে রাজনৈতিক মোখা বিএনপিকে লণ্ডভণ্ড করে দিবে।

মিন্টু সিদ্দিকী
১৯ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

ক্ষমতার দখল নিয়ে এ দু'দলের কাইজা আর যাহাই হোক রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিয়মতান্তিক রাজনীতি বলে যা বুঝায় তা কিন্তু নয়। সম্প্রতি দেশের একটা প্রভাবশালী ইলেকট্রনিক প্রচার মাধ্যমে হররোজের মধ্যরাতের আলোচনায় এক জন দায়িত্বশীল ও সপ্রতিভ সৎ মন্ত্রী যখন দৃঢ়তা নিয়ে যুক্তি দেখান যে বিরোধীদের মোকাবেলায় সরকার কৌশলের নামে কিছু আইনি উপায় গ্রহন করে ক্ষমতা সংহত করে, তখন বিরোধী রাজনীতি সে কৌশল মোকাবিলায় পাল্টা কর্মসূচী দিলেই উক্ত আইনটি স্বাভাবিকভাবেই ভঙ্গ হয়ে যায়। শুরু হয় ধর পাকড়, মামলা, হামলা কারাবাস ইত্যাদি।তখন সুবিধাশিকারী ধান্ধাবাজ নেতারা আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে সমযোতায় নামে । এরা সবাই বস্তুত বাইরে বিরোধী হলেও ভিতরে সরকারী দলের খাঁটি লেজুড়ে লোক। সুলিখিত দীর্ঘ নিবন্ধে ব্যক্তি মালিকায় পরিচালিত এ দু' পক্ষের নেতৃত্ব নিয়ে কোন আলোচনা এড়িয়ে সত্যিকার মাঠের অবস্থা বিশ্লেষন করা কতটা বাস্তব সন্মত হয়েছে তা নিয়ে সংশয় আছে। এক জনের মর্যাদাপূর্ন নিরাপদ অবস্থান ও নূতন নূতন রাজনৈতিক কৌশলের কাছে অন্য জনের অনিরাপদ ও বিপর্যস্থকর পরিনতী তুলনা করে মাঠের রাজনীতি ব্যাখ্যা করা সত্যিই দূরহ ব্যপার। ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ হারুন আল রশ
১৮ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:০৯ অপরাহ্ন

রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে আওয়ামী লীগের উত্থান। ষাটের দশকে আওয়ামী লীগের আন্দোলন অসহযোগ আন্দোলনে রূপ ধারণ করে। আন্দোলনের চাপ এতোটাই প্রকট আকার ধারণ করে যে, সামরিক শাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং সত্তর সালে পাকিস্তানের প্রথম ও শেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে ইয়াহিয়া খান বাধ্য হয়। আওয়ামী লীগের মতো হুবহু আন্দোলনের ভেতর দিয়ে বিএনপির উত্থান হয়নি বটে- তবে, বিএনপিতে আওয়ামী লীগের অনেকেই শরিক হয়েছেন। অবিসংবাদিত নেতা মাওলানা ভাসানী পশ্চিম পাকিস্তানীদের 'সালাম' বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন, 'ভোটের বাক্সে লাথি মারো বাংলাদেশ স্বাধীন করো'। পরবর্তীতে মাওলানা ভাসানী নিজের দল মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের হাতে সোপর্দ করেন। তাই বিএনপিতে তাঁদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা। অন্যদিকে আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ভেতর দিয়ে ছাত্রদলের সাংগঠনিক শক্তি প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী বহু নেতাকর্মী তৈরি হয়েছে। বর্তমানে এরাই বিএনপির তৃণমূলের শক্তি। গত প্রায় দেড়যুগের দমন-পীড়নে বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সবাই কমবেশি বিপর্যস্ত। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সকাল বিকেল প্রতিপক্ষের সাথে ওঠাবসা করতে হয়। তাঁরা কখনো কখনো অনেকটা তাল রক্ষা করে চলতে হয়। সময় সুযোগ করে আন্দোলনেও ভূমিকা পালন করেন। এদের মধ্যে যে সুবিধা নিয়ে চলছেনা কেউ তাও নয়। দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার গুরুতর অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা তো নিতেই হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে লোম বাছতে গিয়ে যেনো কম্বল উজাড় হয়ে না পড়ে। বিএনপি একটি বিশাল দল। জিয়াউর রহমানের প্রশ্নাতীত সততা, নিখাদ দেশপ্রেম এবং আল্লাহর ওপর খাঁটি ও অবিচল ঈমান বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে তিনি চিরস্থায়ী আসন অলংকৃত করেছেন। এজন্যই বিএনপিকে কখনো সামনে থেকে, কখনো পেছন থেকে, আবার কখনো ডান-বাম দিক থেকে চোরাগোপ্তা চুরি মেরেও নির্মুল করা অসম্ভব। বিএনপির নেতাকর্মীদের এবিষয়টি সম্যক অনুধাবন করতে হবে। সাময়িক সুবিধার জন্য দলের নীতি আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে নির্বাচন করা জিয়াউর রহমানের আদর্শের সাথে যায়না। কারণ, জিয়াউর রহমান সারা জীবনভর দেশ-জাতি-রাষ্টের স্বার্থকে ব্যক্তিগত স্বার্থের ওপরে স্থান দিতেন। এরপর তিনি দলের স্বার্থকে সমুন্নত রাখতেন ব্যক্তিগত স্বার্থের ওপর। চট্টগ্রামে তিনি দলের বিভেদ মেটাতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। সুতরাং, দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বা দলীয় বিভেদ আগামীতে ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

আবুল কাসেম
১৮ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:০১ অপরাহ্ন

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status