নির্বাচিত কলাম
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ
বাংলাদেশের অর্থ পাচার, ভারতের আনন্দবাজার, ইউরোপের কালো তালিকা
তারিক চয়ন
৯ মে ২০২৩, মঙ্গলবার
বিদেশে পাচার করা টাকার একটা বড় অংশই দুর্নীতির মাধ্যমে কামানো। ‘সরকারি আনুকূল্য ছাড়া টাকা পাচার সম্ভব নয়’ বলে অনেকেরই বদ্ধমূল ধারণা। এ ছাড়া পাচার হওয়া অর্থ আর দেশে ফেরত আনা যাবে না বলে মনে করেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু, দুর্নীতিবাজদের বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলেও যারা অন্তত দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে এমনটি দেখতে চান, তাদের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র একটি প্রস্তাব। ২৭ দেশের ইউরোপীয় জোট প্রস্তাব করেছে যে ‘গুরুতর দুর্নীতি’ করেছে এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা সম্পদ জব্দ করা ও তাদের এই জোটে নিষিদ্ধ করা হবে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত, কিন্তু ইইউ’র সদস্য নয় এমন দেশের ব্যক্তিদের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
২০২৩ সালের ৬ই মে এ লেখাটি যখন লিখছি তার ঠিক সাত বছর আগে ২০১৬ সালের ৬ই মে ভারতের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজারে বাংলাদেশ নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। ‘বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ভোগ করছে ভারত, আমেরিকাও’ শীর্ষক আনন্দবাজারের ওই প্রতিবেদনটি খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন বাংলাদেশের সচেতন মহল তো বটেই সর্বমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। প্রতিবেদনের একেবারে শুরুটা ছিল: দরজা জানালা খোলা রেখে এসি চালালে কী লাভ। ঘর ঠাণ্ডা তো হবেই না। মাঝখান থেকে হু হু করে কারেন্ট পুড়বে।

আনন্দবাজারের সাড়া জাগানো ওই প্রতিবেদনের কারিগর অমিত বসু বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ‘গ্রহণ’ করায় অন্যান্য দেশের পাশাপাশি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন নিজ দেশকেও। তিনি লিখেছিলেন, ‘অপরাধ ভারতেরও। সেখানেও চার (সাঁকো বা পুল) ফেলে পাচার হওয়া টাকা ঘরে তোলার লোকের অভাব নেই। সরকারি স্তরে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না কেন! ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আসলে অর্থস্রাবী আগ্নেয়গিরির লাভা স্রোতের লোভ থেকে উত্তীর্ণ হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে পাওয়া টাকাটা খারাপ টাকা (কালোটাকা)। খারাপ টাকা ভালো কাজে নয়, খারাপ কাজেই লাগে। সন্ত্রাসীরাও এই টাকার প্রতীক্ষায় থাকে। যে দেশেই তারা থাকুক, তাদের প্রথম লক্ষ্য সে দেশের অর্থনীতির ভিত ভেঙে চুরমার করে নিজেদের ঐশ্বর্য বৃদ্ধি। নাশকতায় সক্রিয় হওয়ার সহজ রাস্তা সেটাই। ভারত ছাড়াও আরও ৩৬টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ভোগ করছে। তার মধ্যে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, বেলজিয়াম, পোলান্ড, বৃটেন, জার্মানি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, জাপানও আছে। সুযোগ বুঝে, কালোটাকা আত্মসাতের খেলায় নেমেছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, রোমানিয়া, তুরস্ক, বেলারুশ ও মরিশাস।’
অবশ্য বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার নিয়ে নানা আলোচনা সাত বছর আগে শুধু আনন্দবাজারেই নয়, বরং বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক সংকটের বড় কারণ হিসেবে বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলা হচ্ছে। দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে অনেকের বাড়ি করার কথা হরহামেশাই শোনা গেছে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা গেছে, পাচারকারীদের পরিবার সেসব দেশেই থাকেন। এ ধরনের পরিবারগুলো কানাডায় তথাকথিত ‘বেগম পাড়া’য় থাকেন বলে শোনা যায়। এ ছাড়াও, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা রাখার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমন খবর বেরিয়েছে। এসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এসব বিষয়ে অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মন্ত্রীরা কথা বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা এসেছে, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ব্যবস্থা যে গ্রহণ করা হয় নি, বিগত বছরগুলোতে দেশ থেকে টাকা পাচারের পরিমাণ সম্পর্কে একটু খোঁজখবর নিলেই সেটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কালোটাকা দেশে থাকে কম, পাচার হয় বেশি। সুতরাং, খুব স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায়, দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা মূলত কালোটাকা বা অবৈধভাবে অর্জিত। তাই, সঙ্গত কারণেই দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকার পরিমাণ ঠিক কতো সেটা বর্তমান বাস্তবতায় জানা সহজ নয়। সরকার এ নিয়ে দেশবাসীকে কিছু জানাচ্ছে তো না-ই, উল্টো জাতিসংঘকে বৈদেশিক বাণিজ্যের তথ্য দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রতি বছর বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন দেশের অর্থ পাচারের তথ্য প্রকাশ করতে পারলেও বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের তথ্য সংস্থাটি প্রকাশ করতে পারছে না।
২০২১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর জিএফআই বাংলাদেশসহ ১৩৪টি দেশের অর্থ পাচারের যে তথ্য প্রকাশ করেছিল, সেখানে অন্য সব দেশের হালনাগাদ তথ্য থাকলেও বাংলাদেশের তথ্য ছিল ছয় বছর আগের, অর্থাৎ ২০১৫ সাল পর্যন্ত। তাতেও আবার ২০১৪ সালের হিসাব ছিল না! তবে ২০১৪ সাল বাদে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের যে তথ্য দিয়েছে জিএফআই, সে সূত্রে দেশ থেকে প্রতি বছর পাচার হওয়া টাকার পরিমাণের একটা ধারণা পাওয়া যায়। সংস্থাটি জানায়, ওই ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছিল। রিপোর্ট প্রকাশকালের বিনিময় হার হিসেবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা) ওই অর্থের পরিমাণ ৪ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ৭১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। কেবল ২০১৫ সালেই পাচার হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। লক্ষণীয় যে, ২০১৫ সালের পর থেকেই জাতিসংঘকে বৈদেশিক বাণিজ্যসংক্রান্ত তথ্য দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়।
ওদিকে, সুইস ব্যাংকগুলোতেও বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়Ñ ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট হাজার দু’শ’ ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে, এই অর্থের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিন শ’ ৪৭ কোটি টাকা। এক বছরেই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দুই হাজার নয়শ’ ২৮ কোটি টাকা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, সুইস ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে কয়েক বছরের যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে তাতে এই বৃদ্ধি এক বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ!
সবমিলিয়ে একথা একবাক্যে বলা যায়, দেশ থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে কারও মনেই কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে পাচার হওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থের গন্তব্য কোথায়? গত ১০ই এপ্রিল প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদনে শওকত হোসেন লিখেছেন, ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় সরকারকে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী একটি কৌশলপত্র তৈরি করতে হয়। এখন পর্যন্ত এ রকম দুই কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কমব্যাটিং ফাইন্যান্স অব টেরোরিজম নামের প্রথম কৌশলপত্রটি ছিল ২০১৫-১৯ সময়ের জন্য। আর পরেরটি ২০১৯-২১ সময়ের। কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গবেষণা ও অবৈধ অর্থ প্রবাহের ঘটনা থেকে দেখা যাচ্ছে, ১০টি দেশ বা অঞ্চলেই বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়। এই ১০ দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কেম্যান আইল্যান্ড ও বৃটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস।
দেখা যাচ্ছে, সাত বছর আগে আনন্দবাজার পত্রিকা যে লিখেছিল ‘ভারত ছাড়াও আরও ৩৬টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ভোগ করছে’ সেই দেশগুলোর তালিকায় উক্ত কৌশলপত্রে উল্লিখিত ১০টি দেশের অনেকগুলোই রয়েছে। অর্থাৎ, একথা বলা যায় যে, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া টাকার একটা বড় অংশই দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশেই যাচ্ছে।
অন্যদিকে, বিভিন্ন সময়ে অর্থনীতির বিশ্লেষকরা টাকা পাচারের নানা কারণ ব্যাখ্যা করলেও তাদের বেশির ভাগই এক্ষেত্রে ‘দুর্নীতি’কে এগিয়ে রেখেছেন। অর্থাৎ, বিদেশে পাচার করা টাকার একটা বড় অংশই দুর্নীতির মাধ্যমে কামানো। সরকারি ‘আনুকূল্য ছাড়া টাকা পাচার সম্ভব নয়’ বলে অনেকেরই বদ্ধমূল ধারণা। এ ছাড়া পাচার হওয়া অর্থ আর দেশে ফেরত আনা যাবে না বলে মনে করেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু, দুর্নীতিবাজদের বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলেও যারা অন্তত দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে এমনটি দেখতে চান, তাদের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র একটি প্রস্তাব। ২৭ দেশের ইউরোপীয় জোট প্রস্তাব করেছে যে ‘গুরুতর দুর্নীতি’ করেছে এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা সম্পদ জব্দ করা ও তাদের এই জোটে নিষিদ্ধ করা হবে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত, কিন্তু ইইউ’র সদস্য নয় এমন দেশের ব্যক্তিদের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, ‘আমরা একটি পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছি। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের জন্য ইউরোপের দরজা বন্ধ। এই দুর্নীতি যেখানেই ঘটুক না কেন।’ কমিশন যেসব ঘটনাকে গুরুতর দুর্নীতি হিসেবে বিবেচনা করছে তার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়া। এ ছাড়া রয়েছে জনগণের তহবিল তছরুপ করা, বিশেষ করে এমন সব দেশে যারা করের মতো বিষয়ে সহযোগিতা করে না বলে মনে করা হয় অথবা যারা অর্থ পাচার ও জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে (সূত্র: প্রথম আলো)। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রেও ‘ম্যাগনিটস্কি অ্যাক্ট’ নামে এমন একটি আইন রয়েছে যার আওতায় দেশটির সরকার দুর্নীতি কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত বিদেশি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের উপসংহার ছিল, ‘বাংলাদেশের ঊর্ধ্বমুখী অর্থনীতিকে টান মেরে নিচে নামানোর চেয়ে জঘন্য কাজ আর কী হতে পারে। যাদের জেলখানার ভেতরে থাকার কথা, তারা বাইরে ঘুরে বেড়ায় কী করে!’ এখন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন প্রস্তাবটি কার্যকর হলে দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার করে বাইরে ঘুরে বেড়ানো মানুষগুলো যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন না, সে আশাটুকু করাই যায়।
পাঠকের মতামত
ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না.....এদেশে মেহনতী মানুষদের কথা কেউ কখনো ভাবেনি ভবিষ্যতে ভাববে কিনা সেটা দেখেই কিছুটা বুঝা যাচ্ছে..... গভীর সমুদ্রে যখন কোন ব্যক্তি ডুবে যায় সে তখন বাচার জন্য কোন মড়ক পেলেও আকড়ে ধরে বাচার জন্য.... এদেশের নিম্নবিত্ত পরিবারের অবস্থা এখন ঐ সাগরে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির মত!!
সাবেক গ গভর্নর জনাব ডক্টর ফড়াশুদ্দিন বলেছেন এ দেশ থেকে টাকা পাচারের বিরুদ্ধে যারা ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হয়েছে বা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সচেষ্ট ছিল তাদেরকে সেই পদ থেকে বদলি করা হয়েছে, বের করে দেওয়া হয়েছে, অতএব এটি পরিষ্কার বাংলাদেশের দুর্নীতি এবং টাকা পাচারের সাথে শীর্ষ শক্তি জড়িত, তবে আমার কথা হল, যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছ তারা এখন এই দেশ ত্যাগ কর, চলে যাও বিদেশে গিয়ে তোমরা দুর্নীতির টাকা ভোগ কর, এই দেশের সাধারণ মানুষকে তোমরা মুক্তি দাও , দয়া করে চলে যাও, ধ্বংস হও , বিতাড়িত হও , তোমাদের আর দেখতে চাই না।
আমাদের দেশের মানুষের ভিতরে একতা নাই, দেশপ্রেম নাই,যে জাতির ভিতর দেশ প্রেম নায় সে জাতি কোনদিন উন্নতি হতে পারে না। আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থার মূলে রয়েছে দুর্নীতিবাজরা। শাসকেরা শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দেশের জনগণ তাদের অধিকার সম্পর্কে উদাসীন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যুব সমাজ আজ পথভ্রষ্ট। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার জন্য যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। বাংলাদেশের দুর্নীতি আজ যে স্তরে পৌঁছে গেছে সেখান থেকে বের হতে হলে একজন দেশ প্রেমিক নেতার নেতৃত্বে বিপ্লব প্রয়োজন।
এভাবেই আফ্রিকার সর্বোচ্চ ধনী রাষ্ট্র নাইজেরিয়া আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। এদেশের অবস্থাও হয়তো তা-ই হবে।অবাক হওয়ার কিছু নেই;মীর জাফরের তো আমাদেরই পূর্ব পুরুষ।ওর তকমাটা ঝেরে ফেলি কেমনে?
সবাই জানে।দূর্ভাগ্য হলো অর্থ পাচার রোধে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।তাতে সবাই নিশ্চিত হচ্ছে যে সরকারি ছত্রছায়ায় দূনর্নীতি করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ঐসব উন্নত দেশ যারা দুর্নীতিবাজদের আনন্দ ফুর্তি করার জন্য জায়গা দেয় আবার আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ দিতে আসে। ঐসব দেশ যদি দুর্নীতিবাজদের টাকার উৎসের খোঁজ নিত, তবে সেখানে টাকা নিতে সাহস পেত না।
অতি জরুরি বিষয়
এগুলো পড়ে আমাদের কি লাভ? আপনিও ভাই অযথা সময় নষ্ট করলেন। এ টাকাগুলো কোনদিন কি দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে? হলে কি ভাবে হবে এ বিষয়ে আপনার লিখায় কি লিখেছেন? এসব নিয়ে না লিখে লিখুন আজকের বাজারদর এর উপর ১ টন তেল আমদানি করতে কত ডলার খরচ হয় কত টাকা উতপাদন খরচ হয়ে কর ভ্যাট বাদ দিয়ে সাধারণ ভোক্তা কত টাকায় পেতে পারে এই বিষয় গুলোর উপর লিখুন। টাকা পাচার এর উপর অনেক লিখা পড়েছি । আর পড়তে ইচ্ছে করেনা। একটা ছোট্ট কথা বলি যে সব দেশে পাচার করা টাকাগুলো যাচ্ছে তারাও চাইবেনা টাকাগুলো তাদের দেশগুলো থেকে ফেরত যাক। এটাই হচ্ছে চরম সত্য।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ-ই পদক্ষেপে কিছুটা হলেও টাকা পাচার কমবে হয়তোবা অথবা কেতাদুরস্ত দূর্নীতিবাজ'রা নতুন গন্তব্য খুজে বের করবে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় জাতিসংঘ কে বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে বাংলাদেশের তথ্য না দেয়া। এতে প্রমাণিত হয় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোসকতা ছিল এই দূর্নীতি ও টাকা পাচারে।ধন্যবাদ সাংবাদিক মহোদয় কে তথ্য বহুল রিপোর্টে দূর্নীতি সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সাধারণ মানুষের অনেকেরই অজানা ছিলো।
ভূত যেহেতু সর্ষের মধ্যে তাড়াবে কে? পাচার তো করে সরকার। অতএব সরকার কার বিচার করবে? জনগণের কঠোর অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ এগিয়ে যায় আর সরকার জনগণকে চুষে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায়। জনগণের ঘামের অর্থ সরকার বসে বসে ডাকাতি করে খায় আর ভোগ করে। জনগণের টাকা যেমন চুরি করে নিয়ে যায়, ভোট টা ও নিয়ে গেছে। বিচার আল্লাহ করবেন।
Govt is directly involved in this illegal money transfer matter and that is the main reason this crime will not stop in our country. At the govt level from top to bottom every body is involved especially govt party ministers MP and other govt party leaders.
মন্তব্য করুন
নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন
নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত
বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ বাংলাদেশের অর্থ পাচার, ভারতের আনন্দবাজার, ইউরোপের কালো তালিকা
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ নির্বাচন ঘিরে একই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে?
আন্তর্জাতিক/ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এবং পশ্চিমাদের অবস্থান
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, সরকারের নীরবতা, অ্যাকশনে অন্যরাও?

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]