নির্বাচিত কলাম
খোলা চোখে
আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টি না করার সিদ্ধান্ত এবং হাজার কোটি টাকা লুটের সিন্ডিকেট
লুৎফর রহমান
২৮ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার
পবিত্র রমজান মাসে রাজনৈতিক দলগুলো সরব থাকে ইফতার মাহফিল আয়োজন নিয়ে। দলের নেতাকর্মী, বিশিষ্টজন, বিদেশি কূটনীতিক, পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন দলগুলোর দীর্ঘদিনের রুটিন কাজ। কিন্তু এবার এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কোনো ধরনের ইফতার মাহফিল আয়োজন না করতে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। শুধু দলীয়ভাবেই নয় এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও গণভবনে ইফতার মাহফিলের আয়োজন রাখেননি তিনি। ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন অনেকে। নানা কারণে অর্থনৈতিক সংকট চলছে চারিদিকে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। অনেকে সংকটে পড়েছেন। আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রাখা যাচ্ছে না।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা রমজানের আগেই গণভবনে এমন কোনো আয়োজন হবে না বলে জানিয়ে দেন। দল এবং সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ইফতার আয়োজন না করতেও বার্তা দেয়া হয়। সভানেত্রীর পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনা ইতিমধ্যে সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বলা হয়েছে, এবার ইফতার মাহফিলের আয়োজন না করে দলের নেতাকর্মীদের সাধ্যমতো সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করতে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে যেসব মানুষ কষ্টে আছেন তাদের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে দলের তরফে। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সামনে এখন নানা চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক পরিস্থিতি এই চ্যালেঞ্জকে আরও কঠিনতর করে তুলেছে। এমন অবস্থায় জনবান্ধব সিদ্ধান্ত এবং উদ্যোগের মাধ্যমে সংকট উত্তরণের কোনো বিকল্প নেই। পরিস্থিতি বিবেচনায় ইফতার মাহফিল আয়োজন না করার সিদ্ধান্তকে অনেকে এমন উদ্যোগ হিসেবেই দেখছেন।
এবার আসি দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির দিকে। রুশ-ইউক্রেন যুক্ত শুরুর পর থেকে হঠাৎই দেশের নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। হু হু করে বাড়তে থাকে বিভিন্ন পণ্যের দাম। এই মূল্যবৃদ্ধি ছিল অনেকটাই অস্বাভাবিক। ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। চিনির দামও প্রায় একই হারে বেড়েছে। দাম বাড়েনি এমন কোনো পণ্য এখন আর হাতের কাছে নেই। দাম বাড়ার এই প্রবণতা এখনো থেমে নেই। কখনো বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা বলে, কখনো ডলার সংকটের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। অস্বাভাবিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে দেশের সাধারণ মানুষ কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। নির্দিষ্ট আয় দিয়ে ব্যয় সংকুলান করতে পারছেন না। হিসাব মেলাতে না পেরে কেউ কেউ খাদ্য তালিকা ছোট করছেন। এক সময় আমিষের জন্য পোল্ট্রি মুরগি যারা কিনে খেতেন তারা এখন তেলাপিয়া বা পাঙাস মাছও কিনতে পারছেন না। শাক সবজি কিনে যে পুষ্টির চাহিদা মেটাবেন সেই সুযোগও ক্ষীণ হয়ে আসছে। ব্যয় বাড়ায় ঢাকায় থাকতে না পেরে কেউ কেউ চলে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। কেউ বা পরিবার পরিজনকে গ্রামে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দামের কারণে সাধারণ মানুষের যখন ত্রাহি অবস্থা তখনো রমরমা মুনাফা বাণিজ্যে ব্যস্ত দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী। এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কব্জায় দেশের গোটা পণ্যবাজার। খাতভিত্তিক আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছেন এই ব্যবসায়ী শ্রেণি। তারা ইচ্ছামতো দাম বাড়ান। আবার ইচ্ছা হলে কমাতেও পারেন। যদিও তা সচরাচর করেন না। একান্ত বাধ্য হলে লোক দেখানোর জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে দাম কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে বা বাজারে গিয়ে এর প্রভাবও শতভাগ মেলে না।

বাজার সিন্ডিকেটের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে সামনে এসেছে পোল্ট্রি মুরগির উচ্চ দামের বিষয়টি। গরিবের আমিষের উৎস বলে পরিচিত পোল্ট্রি মুরগির কেজি সম্প্রতি দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়। এক সময়ের একশ’ থেকে একশ’ ২০ টাকা কেজির পোল্ট্রি মুরগির দাম উঠে ২৭০ টাকায়। বলা হচ্ছে বড় ৪টি করপোরেট খামারি সিন্ডিকেটের কারণে মুরগির বাজারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। সরকারি তদারকি না থাকায় এই সিন্ডিকেটের দুই মাসেরও কম সময়ে প্রায় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন-বিপিএ গত শুক্রবার অভিযোগ করে মুরগির উৎপাদন ব্যবস্থায় প্রান্তিক খামারিদের সরিয়ে গত ৫২ দিনে পুঁজিবাদী মাফিয়া চক্র ৯৩৬ কোটি হাতিয়ে নিয়েছে। সংগঠনটির দাবি, এ খাতের কর্পোরেট গোষ্ঠী ইচ্ছেমতো ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেয়, আর সেই দাম মেনে নিয়ে প্রান্তিক খামারি উৎপাদন করলে বাজারে দাম কমিয়ে দিয়ে লোকসানে ফেলা হয়। তাতে করে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়ছেন। আবার খামারিরা উৎপাদনে না থাকলে ভোক্তাদের পকেট ফাঁকা করে দেয় ওইসব বড় কোম্পানি। বিপিএ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ৩৫০০ টন। প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ আগে কম থাকলেও এখন ১ কেজি উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, আর কর্পোরেট কোম্পানিদের উৎপাদন খরচ পড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। কিন্তু পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকা পর্যন্ত। খামারিদের সংগঠনটি বলছে, প্রতিদিন যদি ২ হাজার টন সরবরাহ ধরে প্রতি কেজিতে ৬০ টাকাও অতিরিক্ত মুনাফা ধরা হয়, তবে একদিনে অতিরিক্ত মুনাফা হয় ১২ কোটি টাকা। ৩১ জানুয়ারি থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫২ দিনে সেই অতি মুনাফার পরিমাণ দাঁড়ায় ৬২৪ কোটি টাকা।
এ ছাড়া প্রতিদিন মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ২০ লাখ। প্রতি বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত ৩১শে জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই বাচ্চা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। প্রতি বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা ধরা হলে ৫২ দিনে অতিরিক্ত মুনাফা হিসেবে লুটে নেয়া হয়েছে ৩১২ কোটি টাকা।
এত গেল পোল্ট্রি সিন্ডিকেটের লুটপাটের চিত্র। মাত্র ৫২ দিনে যদি তারা হাজার টাকা লুট করতে পারে তাহলে পুরো বছরে কতো হাজার টাকা তারা কামিয়ে নিচ্ছে তারও একটা হিসাব বের করা সম্ভব।
পোল্ট্রির মতো আরও অনেক খাত এমন অনেক সিন্ডিকেটের কব্জায় চলে গেছে। চাল, ভোজ্য তেল, চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত ও আমদানি এখন বৃহৎ শিল্প ও ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোর হাতে। এক একটি পণ্যের মজুত বা আমদানি হাতে গোনা পাঁচ সাত বা ১০টি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর বাইরে ছোট ব্যবসায়ীরা এখন আর তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। তাই এই ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোই তাদের ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম নিচ্ছে। অতি মুনাফা নিচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। বাজার তদারকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি সংস্থা থাকলেও পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তারা যে ভূমিকা রাখতে পারছে না এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কারণ দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমদানিকারক বা বড় ব্যবসায়ীরা যে প্রস্তাব দেন এর বাইরে মন্ত্রণালয়কে খুব একটা দ্বিমত করতে দেখা যায় না।
দেশের চালের বাজার এক সময় আড়ত বা মোকামকেন্দ্রিক ছিল। আড়তদার বা মোকামের মালিকরা দাম নিয়ে নয়ছয় করতেন। এ কারণে মাঝে মধ্যে দাম উঠানামা করতো। কিন্তু এই বাজারও এখন বড় পুঁজির কোম্পানির হাতে চলে যাচ্ছে। প্রায় সব বড় গ্রুপ এখন চালের ব্যবসা করছে। তাদের মিল আছে। কারখানা আছে। তারা নিজেরা ধান কিনে মজুত করে। চাল মজুত করে সুবিধামতো সময়ে বেশি মুনাফা নিয়ে বিক্রি করে। এসব বড় কোম্পানির মজুত প্রবণতা চালের বাজারের অস্থিরতার বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। চাল, তেল, চিনি বা পোল্ট্রির মতো খাতের বড় পুঁজির প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ার ফলে বাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠানের তদারকি কোনো কাজে আসছে না। পোল্ট্রির মতোই এক একটি পণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট সময়ে সময়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। এর ফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ।
বাজারে অতি পুঁজির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠাতে আরও একটি বড় বিপদ হয়তো তৈরি হচ্ছে। আর সেটি হলো ছোট উদ্যোক্তা, প্রান্তিক উৎপাদক এবং ছোট ব্যবসায়ী শ্রেণি ক্রমে বিলীন হয়ে যেতে পারে এই পুঁজিপতিদের গ্রাসে। যা বড় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে উৎপাদন খাতে।
সার্বিক বাজার পরিস্থিতির একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র পাওয়া গেছে গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের একটি অনুষ্ঠানে। ওই অনুষ্ঠানে সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজার প্রক্রিয়া ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে। বাজারে কোনো ধরনের মেকানিজম কাজ করছে না। বাজারের ভেতর ছোটদের প্রভাব ও অংশগ্রহণ ক্রমেই সীমিত হচ্ছে। বড়দের প্রভাব-প্রতিপত্তি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বাড়ছে। একই অনুষ্ঠানে সিপিডি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। তেল, চিনিসহ অনেক পণ্যের দাম বিশ্ববাজারের চেয়ে দেশের বাজারে অনেক বেশি। জিনিসপত্রের এই দামে ভারসাম্য আনতে সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিদ্যমান বাজার ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে সংস্থাটির তরফে।
এবার আসি শুরুর প্রসঙ্গে। রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন না করে আওয়ামী লীগ নিঃসন্দেহে একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। এই আয়োজন না করে হয়তো শত বা হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হবে না। কিন্তু এই উদ্যোগের মাধ্যমে সংকট এবং সংকটকালীন সাশ্রয়ের একটি বার্তা দেয়া হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের। জনতুষ্টির ক্ষেত্রেও হয়তো এর একটি প্রভাবও থাকবে। তবে তার চেয়ে ঢের প্রভাব পড়বে যদি নিত্যপণ্যের চিহ্নিত সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া যায়। তাদের হাজার কোটি টাকা লুটপাটের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া যায়। এটি করা যেকোনো জনবান্ধব সরকারের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে। মানুষ আশা করে ইফতার মাহফিল না করে আওয়ামী লীগ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এর পথ ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পুঁজিপতি সিন্ডিকেটের লাগামও টেনে ধরবে। এটি করা গেলে সবচেয়ে বড় জনবান্ধব কাজটি হবে দল এবং সরকারের জন্য।
লেখক: মানবজমিনের নগর সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত
The problem will be automatically resolved If govt starts to import the above items. But Govt did not do this. So we can assume that this institute couldn't able to control all of the Parlament Members who have been involved in directly leading companies.
আলহামদু লিল্লাহ।. যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।”[সুনানে তিরমিযি (৮০৭), সুনানে ইবনে মাজাহ (১৭৪৬), ইবনে হিব্বান তাঁর সহিহ গ্রন্থ (৮/২১৬) এ এবং আলবানি তাঁর ‘সহিহ আল-জামে’ গ্রন্থ (৬৪১৫) হাদিসটিকে ‘সহিহ’ বলেছেন। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: “রোজাদারকে ইফতার করানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাকে পেট ভরে তৃপ্ত করানো।”[আল ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা-১৯] সলফে সালেহিন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ছিলেন এবং তাঁরা এটাকে মহান ইবাদত মনে করতেন। জনৈক সলফে সালেহিন বলেছেন: “দশজন সাথীকে দাওয়াত দিয়ে তাদের পছন্দসই খাবার খাওয়ানো আমার কাছে দশজন গোলাম আজাদ করার চেয়ে প্রিয়।” সলফে সালেহিনের অনেকে নিজের ইফতার অন্যকে খাওয়াতেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- ইবনে উমর, দাউদ আল-তাঈ, মালিক বিন দিনার, আহমাদ ইবনে হাম্বল। ইবনে উমর এতিম ও মিসকীনদের সঙ্গে না নিয়ে ইফতার করতেন না। সলফে সালেহিনদের কেউ কেউ তাঁর নিজের ইফতার তার সঙ্গী সাথীদেরকে খাওয়াতেন এবং নিজে তাদের খেদমত করতেন। এদের মধ্যে অন্যতম- ইবনুল মুবারক। আবু সাওয়ার আল-আদাওয়ি বলেন: বনি আদি গোত্রের লোকেরা এই মসজিদে নামায পড়ত। তাদের কেউ কখনো একাকী ইফতার করেনি। যদি তার সাথে ইফতার করার জন্য কাউকে সাথে পেত তাহলে তাকে নিয়ে ইফতার করত। আর যদি কাউকে না পেত তাহলে নিজের খাবার মসজিদে নিয়ে এসে মানুষের সাথে খেত এবং মানুষকেও খেতে দিত। খাবার খাওয়ানোর ইবাদতের মাধ্যমে আরও অনেকগুলো ইবাদত পালিত হয়: নিমন্ত্রিত ভাইদের সাথে হৃদ্যতা ও ভালবাসা। যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা জান্নাতে প্রবেশের কারণ। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা ঈমান আনা ছাড়া জান্নাত যেতে পারবে না। আর পারস্পারিক ভালোবাসা ছাড়া তোমাদের ঈমান হবে না।”[সহিহ মুসলিম (৫৪)] দাওয়াত খাওয়ানোর মাধ্যমে নেক লোকদের সাহচর্য অর্জিত হয় এবং আপনার খাবার খেয়ে তারা নেককাজের শক্তি পায়, এতে আপনার সওয়াব হয় ইফতারি না বন্ধ করে সর্বপ্রকারের জিনিসপত্রের দাম ব্যবসায়ীদেরকে একটু কমাতে বললে ভালো হতো কারণ সাধারণ মাসে যে জিনিসের দাম যত থাকে বাংলাদেশ রোজা এলে তার দাম বেশি বেড়ে যায়
সরকার ইফতার মাহফিল থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে ব্যয় সংকোচনের কথা বলে। অথচ ইফতারে রয়েছে অফুরন্ত সওয়াব। এর মর্তবা বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা। একজন রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করালে, তা হোক এক চুমুক বিশুদ্ধ পানি অথবা একটি খেজুর দিয়ে তাহলে একটি পূর্ণ রোজার নেকি আমলনামায় লেখা হবে। আড়ম্বরপূর্ণ দামী দামী খাবার দিয়ে ইফতারের দরকার নেই। সাধারণ কম মূল্যের খাবার দিয়েও ইফতার করা বা করানো যায়। ব্যয় কমিয়ে ঝাঁক জমক ইফতার পার্টির আয়োজন না করে সাধারণ ভাবে, সাধারণ খাবার দিয়ে প্রান্তিক মানুষকে ইফতার করানো যায়। কিন্তু, একজন রোজাদারকে ইফতার করানো যে অফুরান নেকির কাজ তা থেকে সচেতন ভাবে বিরত থাকা উচিত নয়। কারণ, তার ফলে অফুরন্ত সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া। কূটনীতি ও রাজনীতির নিয়ত বাদ দিয়ে রোজাদারের সম্মানে সাদাসিধা হলেও ইফতারের আয়োজন করা উচিত। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিম্নমুখী হলেও আমাদের বাজারে তার প্রভাব নেই। কারণ, এক অসাধু ব্যবসায়ীচক্র আমাদের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার কেনো এসকল অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা তা রহস্যময় ব্যপার। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, "বাজার তদারকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি সংস্থা থাকলেও পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তারা যে ভূমিকা রাখতে পারছে না এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কারণ দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমদানিকারক বা বড় ব্যবসায়ীরা যে প্রস্তাব দেন এর বাইরে মন্ত্রণালয়কে খুব একটা দ্বিমত করতে দেখা যায় না।" এখানেই বুঝা যায় 'ডাল মে কুচ কালা হ্যায়'। সরকার, ব্যবসায়ী, প্রশাসন সব একাকার হয়ে পড়েছে। যার ফলে জনগণের হয়েছে মরনদশা।
Brother, President again going to Singapore for 8 days though he will be EX very soon. Need reporting for this if possible.
Sir, you have to understand this matter that govt is directly involved with this syndicate. That is the main reason our govt can never take any hard decision against this group. From the top level to the lower level of the govt all are corrupted. Common people are sufferng
মন্তব্য করুন
নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন
নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত
বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ বাংলাদেশের অর্থ পাচার, ভারতের আনন্দবাজার, ইউরোপের কালো তালিকা
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ নির্বাচন ঘিরে একই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে?
আন্তর্জাতিক/ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এবং পশ্চিমাদের অবস্থান
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, সরকারের নীরবতা, অ্যাকশনে অন্যরাও?

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]