খেলা
অভিষেক রাঙিয়ে হৃদয়ের আক্ষেপ
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার
ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের কেউ এখনো সেঞ্চুরি করেননি। এমনকি ছুঁতে পারেননি ৯০ এর ঘরও। কিন্তু তৌহিদ হৃদয় যেন সব ইতিহাস ভেঙে দিতে মাঠে নেমেছিলেন। দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি থেকে পৌঁছে গিয়েছিলেন মাত্র ৮ রান দূরে। কিন্তু হলো না! অভিষেক রাঙালেও সাজঘরে ফিরলেন আক্ষেপ নিয়ে। গতকাল আয়ারল্যান্ডের বিপেক্ষ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৯২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন হৃদয়। অভিষেকে নার্ভাস নাইনটিজে এর আগে আউট হয়েছেন বিশ্বের ৬ ব্যাটার। সেই বিরল তালিকায় তৌহিদ যুক্ত করেছেন নিজের নাম। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হৃদয় ৫ নম্বরে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, ক্রিজে ছিলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ তখন ৮১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রাম করছে। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সাবলীল ব্যাটিং করে হৃদয় গড়ে তোলেন ১৩৫ রানের মোড় ঘুড়ানো জুটি। সাকিব আউট হলে এই তরুণ মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ৮০ রানের। তার নামের পাশে তখন ৯২ রান। আর তখনও ইনিংসে বল বাকি ২৭টি। হৃদয়ের জন্য সুর্বণ সুযোগ ছিল ৫ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার। আউট হয়ে ফেরার পথে মুশফিক যেন সেই কথাই হৃদয়কে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন! তার মাথায় হাত বুলিয়ে হয়তো বলেছেন সেঞ্চুরিটা করে আয়। কিন্তু হয়নি! বোল্ড হয়ে যান গ্রাহাম হিউমের বলে। ওয়ানডে অভিষেকে ৫ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড কারও নেই। সর্বোচ্চ ৯৯ রান করে রেকর্ড বুকে আছেন আরব আমিরাতের স্বপ্নিল পাতিল। ব্যাট হাতে দারুণ খেলতে থাকা হৃদয় হিউমের বল খেলতে চেয়েছিলেন মিড উইকেটে। ভাগ্য সহায় হয়নি। বল লেগ স্টাম্প ভেঙে দিলে সমাপ্তি ঘটে তার অসাধারণ ইনিংসের। তবে আউট হওয়ার আগে ৮৫ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তৌহিদ হৃদয়। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি । এর আগে ২২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার ৫ নম্বরে ব্যাটিং নেমে সিলেটে উপস্থিত দর্শকদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভেঙেছেন ১২ বছর আগের রেকর্ড। ২০১১ হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক ওয়ানডেতে নাসির হোসেন খেলেছিলেন ৬৩ রানের ইনিংস। এরপর এক যুগে বহু ক্রিকেটারের অভিষেক হলেও এই রেকর্ড কেউই ভাঙতে পারেননি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেই দাপট দেখাচ্ছেন তৌহিদ হৃদয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি- টোয়েন্টি সিরিজে অভিষেকের পর গতকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে যাত্রা শুরু তার। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও ‘ইনটেন্ট’ দেখিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। আর গতকাল সুযোগ পেয়েই ৫০ ওভারের ক্রিকেটে নিজের ছাপ রাখলেন তরুণ এ ব্যাটার। অভিষেকে নার্ভাস নাইনটিজে প্রথম আউট হয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার স্টিফেন ফ্লেমিং। ভারতের বিপক্ষে অভিষেকে তিনি খেলেছিলেন ৯০ রানের ইনিংস। এরপর এই রেকর্ডে নিজের নাম লেখান আইরিশ ব্যাটার এউইন মরগান। ২০০৬ এ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৯ রান করে সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি। সেই বছর তার আগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার ফিল জ্যাকস আউট হয়েছিলেন। ২০১৪ তে অভিষেকে মরগানের পর ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে আউট হয়েছিলেন আরব আমিরাতের ব্যাটার স্বপ্নিল পাতিল। প্রোটিয়া ব্যাটার রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ২০১৯ সালে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রুকস ২০২২ সালে অভিষেকে ৯৩ রানে আউট হন।