বাংলারজমিন
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দিনে ১৫ লাখ টাকার অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
৩১ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার
দেশের ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার বলে খ্যাত রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুট। এ নৌরুটে শীত ও শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। নদীর মাঝে প্রায় দুই কিলোমিটার অংশজুড়ে বিশাল ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে সাড়ে ৩ কিলোমিটার নৌরুট পার হতে ফেরিগুলোর আরও দুই কিলোমিটার এলাকা ঘুরে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। এদিকে সন্ধ্যার পর কুয়াশার কারণেও ফেরিগুলো ধীরগতিতে যাতায়াত করে। আগে স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে সেখানে বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫০ মিনিটেরও বেশি সময় লাগছে। গত বছর এ সময়ে একটি ফেরি ২৪ ঘণ্টায় ২৮-৩০ ট্রিপ দিতে পারলেও বর্তমানে সেখানে ১৮-২০টির বেশি ট্রিপ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে পারাপারে প্রায় দ্বিগুণ সময় ব্যয় হচ্ছে। আর এ কারণে ফেরির জ্বালানি খরচও বেড়েছে দেড়গুণ। স্বাভাবিক সময়ে একটি ফেরিতে ১০০ লিটার জ্বালানি ব্যয় হলেও সময় বেশি লাগায় ১৫০ লিটার তেল খরচ হচ্ছে।
ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় ২০ বার আপ-ডাউনে প্রতিদিন একটি ফেরিতেই ১০০০ লিটার বেশি জ্বালানি তেল লাগছে। এভাবে প্রতিদিন ১৫টি ফেরিতে ১৫ হাজার লিটার জ্বালানি তেল অীতরিক্ত খরচ হচ্ছে। অতিরিক্ত এ জ্বালানির দাম ১৫ লাখ টাকারও বেশি। অতিরিক্ত এ খরচ শুধু নাব্য সংকটে দীর্ঘ ডুবোচর জেগে উঠা এবং ঘন কুয়াশায় ধীরগতিতে ফেরি চলাচলের কারণে। যদিও গত ২৩শে ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে ২০০০ ও প্রস্থে ৩০০ ফুট ফেরি চলাচলের চ্যানেলে নাব্যতা ফিরিয়ে স্বাভাবিক ফেরি চলাচলে ড্রেজিং করা হয়েছিল। কিন্তু ফেরির হুইলে কাটা পলি ও উজান থেকে নেমে আসা পলি মাটি ফেরির চ্যানেলে ভরাট হওয়ায় একসঙ্গে দু’টি ফেরি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ যানবাহন পারাপার হয়। ছোট বড় মিলে এসব যানবাহন থেকে সরকারিভাবে প্রতিদিন ২৫ লাখ টাকারও বেশি আয় হয়। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলরত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরির মাস্টার শাহারিয়ার সোহেল জানান, বর্তমানে ফেরি চলাচলের চ্যানেলে দীর্ঘ ডুবোচড় জেগে উঠার কারণে দেড়গুণ বেশি পথ ঘুরে আসতে হচ্ছে। ফলে দেড়গুণ বেশি জ্বালানি খরচ হচ্ছে। ২৫-৩০ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে ৪৫-৫৫ মিনিট সময় বেশি লাগছে। গত বছরের এই সময়ে এত পথ অতিক্রম করে ঘুরে আসতে হয়নি। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র মেরিন বিভাগের এজিএম আব্দুস সাত্তার জানান, স্বাভাবিক সময়ে যেখানে একটি রোরো ফেরি ১০০ লিটার তেলে একবার যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারতো বর্তমানে সেখানে দীর্ঘ পথ ঘুরে আসতে সময় বেশি লাগায় অতিরিক্ত তেল খরচ হচ্ছ।