বিশ্বজমিন
তালেবানের নির্দেশ উপেক্ষা করলেন আফগানিস্তানের টিভি উপস্থাপিকারা
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ২২ মে ২০২২, রবিবার, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:১১ অপরাহ্ন

ফাইল ফটো
তালেবানদের নির্দেশ অমান্য করলেন আফগানিস্তানের শীর্ষ স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোর নারী উপস্থাপিকারা। তারা মুখ অনাবৃত রেখে শনিবার টিভি চ্যানেলে উপস্থাপনা করেছেন। কিন্তু এমন অনুষ্ঠানে নারীদের মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ আছে তালেবানদের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।
তালেবানরা গত বছর ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকেই নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারীদের অধিকার বিষয়ক। এ মাসের শুরুর দিকে তালেবানের সুপ্রিম নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা একটি নির্দেশনা জারি করেন। তা হলো জনসমক্ষে আসতে হলে নারীদের শরীর পুরোপুরি ঢেকে আসতে হবে। এমন কি তাদের মুখমণ্ডলও ঢেকে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে আদর্শ বোরকা।
এর আগে টিভিতে উপস্থাপিকাদের শুধু হেডস্কার্ফ পরতে হতো। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে টোলো নিউজ, সংসদ টিভি, ১টিভি শনিবার সরাসরি সম্প্রচারে যেসব নারীকে উপস্থাপন করে, তাদের সবার মুখমণ্ডল দৃশ্যমান ছিল।
সংসদ টিভির হেড অব নিউজ আবিদ এহসান বলেন, আমাদের নারী সহকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন যদি তারা মুখ ঢাকেন, তাহলে এরপরে তাদেরকে কাজ করাই বন্ধ করে দেয়া হবে। এ জন্যই তারা ওই নির্দেশ মানেননি। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তালেবানদের সঙ্গে আরও আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছে তার চ্যানেল।
তালেবানদের এমনতরো নির্দেশনার কারণে অনেক নারী সাংবাদিক আফগানিস্তান ছেড়ে গেছেন। একজন নারী উপস্থাপিকা বলেছেন, গত বছর তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর নারীরা এমন অনেক কঠিন বিধিনিষেধের মুখে পড়েছেন। তাদের সর্বশেষ আদেশ নারী উপস্থাপিকাদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। তাদের অনেকেই এখন দেখছেন দেশের ভিতর কোনো ভবিষ্যত নেই। তিনি বলেন, আমিও দেশ ছাড়ার কথা চিন্তা করছি। এমন ডিক্রি জারি হলে বহু পেশাদার দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হবেন।
ভাইস মিনিস্ট্রির মুখপাত্র মোহাম্মদ সাদেক আকিফ মোহাজির বলেন, তালেবানদের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছেন উপস্থাপিকারা। যদি তারা নির্দেশ না মানেন তাহলে আমরা তাদের ম্যানেজার, অভিভাবকদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবো। যেকেউ যখন একটি বিশেষ ব্যবস্থা বা সরকারের অধীনে বসবাস করেন, তখন তাকে তাদের আইন ও নির্দেশ মেনে চলতে হয়। তাই তাদেরকে এই নির্দেশ মানতেই হবে।
তালেবানের দাবি, যেসব নারী কর্মী নির্দেশ মানবে না তাদেরকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী, কন্যা বা বোন নির্দেশ না মানেন, তাহলে তাকেও চাকরিচ্যুত হতে হবে। মোহাজির বলেন, ওইসব মিডিয়ার ম্যানেজার, উপস্থাপিকাদের অভিভাবককেও শাস্তি দেয়া হতে পারে।
পাঠকের মতামত
উসূলে ফিকাহ এর নিয়ম হোলঃ ইসলামে হালাল হারাম হতে পারে (যেমন হজ্বের সময় শিকার করা) কিন্তু হারাম কখনো হালাল হয় না; শুধুমাত্র অপারগতার ক্ষেত্রে। যেমন মদ পান হারাম। তবে কোন মরুভুমিতে যদি ঐ ছাড়া আর কিছু না থাকে তখন হালাল হবে। এখন মুখ খোলা রাখা যদি হারাম হত, তাহলেক হজ্বের সময়, নামাযের সময় মহিলাদের মুখ খোলা রাখা বাধ্যতামূলক হত না। তালেবানরা সব শয়তানেরক চ্যালা।সন্ত্রাসী।
নিঃসন্দেহে তালেবানের এ নির্দেশনা আজকের ইসলামিক সভ্যতার জন্য খুবই জরুরী এবং প্রয়োজন। অন্যের কথা জানিনা তবে আমার তো শুধুমাত্র মেয়েদের মুখমন্ডল দেখেই অনেক বাজে চিন্তা মাথায় আসে সে ক্ষেত্রে তালেবানের সিদ্ধান্ত আমি ব্যক্তিগতভাবে সাপোর্ট করি।
তালেবানরা বেশি বেশি কড়াকড়ি করছে । মুখ দেখানোর মধ্যে কোন দোষ নাই। ইসলামের জন্মস্থান সৌদি আরব বা মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফতোয়া জেনে আদেশ দেওয়া দরকার। নিজের মনগড়া আইন তৈরী করার চেয়ে সেটা উত্তম।