বাংলারজমিন
ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা
ত্রিশালে ৪৭ কমিউনিটি ক্লিনিকের বেহাল দশা
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার জনসংখ্যা সাড়ে চার লাখেরও বেশি। মানুষের সেবার জন্য ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। বহু বছর আগে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হলেও সংস্কারের অভাবে ঝুঁকি নিয়েই সেবা দিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। বেশির ভাগ ভবন সংস্কারের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেবা নিতে আসা স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামের মানুষ কিছু সেবা পেলেও অযত্ন অবহেলায় চলছে এসব ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যেন নিজেরাই রুগ্ণবস্থায় পড়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তথ্য মতে, দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। দূরত্ব বুঝে প্রতিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ছয় হাজার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা থাকলেও পাচ্ছে না মানসম্মত চিকিৎসাসেবা। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা থাকলেও স্বাস্থ্যসেবা শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। এ উপজেলার বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে কানিহারী, রামপুর ও ত্রিশাল ইউনিয়নে। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, উপজেলা ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর বেশির ভাগই বেহাল অবস্থা। ভবনগুলোর প্রলেপ আস্তর খুলে খুলে পড়ছে। কিছু ভবন একেবারেই ব্যবহার উপযোগী নয়। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। কোথাও আবার শৌচাগার থাকলেও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন যাবৎ। অধিকাংশ ভবনের দরজা-জানালা খুলে গেছে, ছাদে ফাটল ধরেছে। কিছু ক্লিনিকে ওষুধের সংকটও রয়েছে। পুরাতন ভবনের কারণে অনেক ক্লিনিকে ফ্যান থাকলেও টানানো হয়নি। ধুঁকে ধুঁকেই চলছে এসব সেবা কার্যক্রম। উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বুদিরখাল, কুষ্টিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা মার্জিয়া সুলতানা, রওশনারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেক দূরে হওয়ায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে এখানে সেবা নিতে আসি। ক্লিনিকের অবস্থা খুব খারাপ যেন মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়লো। এটা আধুনিকায়ন করা হলে আমাদের ভোগান্তির অবসান হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক সায়েদুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় ক্লিনিকগুলোর ভবন অনেক দিন আগের হওয়ায় এগুলোর অবস্থা একটু খারাপ। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বহু বছর হওয়ার কারণে অনেক ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। আবার কতগুলো বসার উপযোগীও নয়। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তালিকা আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দিয়েছি।