বাংলারজমিন
শান্তিগঞ্জে ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপাকে কৃষক
শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৫ মে ২০২২, রবিবার
পাহাড়ি ঢলের তাণ্ডব শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন হাওরের কৃষকরা। তবে সেই আনন্দকে মলিন করে দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাওরপারের কৃষকরা। রোদের দেখা না মেলায় মাড়াই করা ধানে অঙ্কুর দেখা দিয়ে তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। কাটা ধানের স্তূপ পড়ে আছে খলায় (ধান শুকানোর জায়গা)। ধান মাড়াই না করতে পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সরজমিন দেখা যায়, বৃষ্টিতে শেষ মহূর্তে বোরোধান তুলতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। টানা বৃষ্টির জন্য জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। যানবাহনের সংখ্যাও কম। অফিসসহ সর্বত্র উপস্থিতি তুলনামূলক কম। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার জনসাধারণ। বৃষ্টির কারণে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো কাদাযুক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে চরক দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ভেজা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। খলা ডুবে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে ধান নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। কেউ কেউ পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কেটে নৌকা দিয়ে পাড়ে তুলছেন। জানা যায়, চলতি মৌসুমে শান্তিগঞ্জে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর। এরমধ্যে হাওর এলাকার ১৮ হাজার হেক্টর জমির সবগুলোই কর্তন শেষ হয়েছে। নন হাওরে ৪ হাজার হেক্টর জমির প্রায় ৯৯ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে ধান কাটায় ব্যাঘাত ঘটছে। কিছু জায়গায় পাহাড়ি ঢলে ক্ষতি হলেও পানি কমে যাওয়ায় সে ধানও কাটতে পেরেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ভালো হলেই সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে এমন প্রত্যাশার পাশাপাশি যে সকল ধানে অঙ্কুর দেখা দিয়েছে তা বাড়ির উঠান, ছাদ কিংবা খোলা জায়গায় বিছিয়ে দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। সাংহাই হাওরের কৃষক আব্দুল হক বলেন, তিনদিন ধরে অশনির প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে ভেজা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আছি। ধানে গ্যাড়া (অঙ্কুর) দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুর রহমান বলেন, টানা বৃষ্টিতে ধান শুকানোয় সমস্যা হলেও কোন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না কৃষকরা। ধান যাতে নষ্ট না হয় সার্বক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে তদারকি অব্যাহত রেখেছি। হাওরে শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামান বলেন, অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে কৃষকরা বেকায়দায় থাকলেও ধানের কোন ক্ষতি হবে না। ইতিমধ্যেই উপজেলায় শতভাগ ধান কর্তন প্রায় শেষ। নন হাওরগুলোতেও ধান কাটা শেষের দিকে। আবহাওয়া ভালো হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।