নির্বাচিত কলাম
খোলা চোখে
মেট্রোরেলের উচ্চ ভাড়া এবং গণপরিবহনে জিম্মিদশা
লুৎফর রহমান
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
রাজধানী হলো একটি দেশের ড্রয়িংরুমের মতো। বাইরের কেউ এখানে পা রেখেই অনুমান করতে পারেন পুরো দেশের হাল-হকিকত। জাতিগত শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, আইনের অনুশীলন কতোটা শক্তিশালী একটি দেশের রাজধানীর চিত্রই তা অবলীলায় বলে দেয়। বাংলাদেশের ড্রয়িংরুম হিসেবে ঢাকাকে নিয়ে ভাবলে চিত্র ভাসবে আপনার চোখে। ভাঙা-খোঁড়া রাস্তায় দীর্ঘ যানজট। ছাল-চামড়া নেই, এবড়ো থেবড়ো গণপরিবহন। মোড়ে মোড়ে হকার, ভিক্ষুকের হাঁকডাক। রিকশা, ভ্যান আর পায়ে চলা মানুষের জটলা। হকার- দোকানে রাস্তা আর ফুটপাথ একাকার। গরিবী এমন চিত্রের মধ্যে ঢাকা নামের এই ড্রয়িংরুমে কিছুটা আভিজাত্যের সংযোজন হয়ে আসছে মেট্রোরেল বা এমআরটি। ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম এমআরটি-৬, রাজধানীর উত্তর-দক্ষিণে একটি সহজ সেতুবন্ধন হতে যাচ্ছে। উত্তরা ও বৃহত্তর মিরপুরের মানুষের দক্ষিণের যাতায়াত সহজ মাধ্যম হিসেবে মেট্রোরেল বড় একটি সমাধান। দীর্ঘ যানজট মাড়িয়ে, কষ্ট আর দুর্ভোগ সহ্য করে এতদিন যারা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসা করছিলেন তারা স্বপ্ন দেখছেন মেট্রোতে চড়ে সহজে গন্তব্যে যাওয়ার। নির্মাণ প্রায় শেষ হওয়ায় নগরবাসী ক্ষণ গুনছেন মেট্রোতে চড়ার। সব ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে আংশিক চালু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে ডিসেম্বরেই চালু হবে ট্রেন। ইতিমধ্যে ট্রেনের ভাড়া চূড়ান্ত করার কথা জানানো হয়েছে। উদ্বোধনের অনেক আগেই এই ভাড়া নির্ধারণের ঘোষণা অনেকের মেট্রোতে চড়ার স্বপ্ন কিছুটা পানসে করে দিয়েছে। কারণ মেট্রোতে নিশ্চিত সময় বাঁচলেও নির্ধারিত বাড়া অনেকের পকেটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। আবার যে হারে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে স্বল্পদূরত্বের যাত্রীরা হয়তো মেট্রোরেলকে প্রয়োজনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন না। তারা মেট্রোতে দু’একবার চড়বেন হয়তো শখের বসে। আর মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহন যদি শখের বাহনে পরিণত হয় তাহলে তো এই মেগা প্রকল্পের সুফল নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
আসছে ডিসেম্বর থেকে চালু হতে যাওয়া মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ধরা হয়েছে ২০ টাকা। আর কিলোমিটার প্রতি ভাড়া ৫ টাকা। এ হিসেবে ২০ কিলোমিটারের যাত্রাপথে যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হবে ১০০ টাকা। এই ভাড়া নিয়ে একটা বিতর্ক চলছে। কেউ বলছেন, প্রকল্প খরচ তুলতে এই ভাড়াই যৌক্তিক। আবার অনেকে বলছেন এই ভাড়া অনেকটা অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিত। কারণ বিদ্যমান গণপরিবহনের চেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে অনেকে মেট্রোরেলে চড়বেন না। বিশেষ করে কম আয়ের মানুষজন। এতে মেট্রোরেল হয়তো একটি বিশেষ শ্রেণির বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এটিকে আর গণপরিবহন বলার সুযোগ থাকবে না। বিশেষ করে ঢাকার নগর পরিবহনে এখন সর্বনিম্ন ভাড়া ৮ থেকে ১০ টাকা। যাত্রী কল্যাণ সংস্থাগুলোর মতে এই ভাড়াও অতিরিক্ত। এমন অবস্থায় মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা হওয়া যৌক্তিক ছিল। এই ভাড়া ১০ টাকা হলে যাত্রীরা এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে গিয়ে হয়তো নেমে যেতে পারতেন বা এই সুযোগ নিতেন। কিন্তু সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা হলে যাত্রীরা এই সুযোগটি নিতে পারবেন না অনেকে। ফলে স্বল্প দূরত্বে মেট্রোরেলে যাত্রী কমে যাবে। সঙ্গে বিদ্যমান সড়ক পরিবহনের যাত্রীর চাপ থাকবে।

মেট্রোরেল করার পেছনে যানজট কমানোও একটি বড় লক্ষ্য। এই উচ্চ ভাড়ার কারণে এই লক্ষ্যটিও পুরো অর্জন হবে না। অন্যদিকে কিলোমিটারে ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে সব যাত্রী মেট্রোরেলে চড়তে যাবেন না। এমনিতে এখন মানুষের আয় এবং ব্যয়ের হিসাব মিলছে না। এ অবস্থায় একটু কষ্ট হলেও পাঁচ/দশ টাকা বাঁচাতে মানুষ বাসে চড়ে হয়তো গন্তব্যে যাবে। এখন যারা ভাড়ায় চালিত ‘উবার পাঠাও’-এ যাতায়াত করেন বা ব্যক্তিগত যানবাহনে করে এ পথে যাতায়াত করেন মেট্রোতে তাদের খরচ এবং সময় কমে যাবে। তারা বড় একটা সুবিধা পাবেন। কিন্তু যারা উত্তরা বা মিরপুর থেকে মতিঝিল গিয়ে ছোটখাটো চাকরি করেন, স্বল্প বেতন বা যারা গুলিস্তান, নিউ মার্কেটে ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন তারা মেট্রোতে চড়তে হয়তো ভাড়ার হিসাব কষবেন। কারণ দিনে দুই বেলা মেট্রোতে যাতায়াত করতে তাদের দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা লেগে যাবে। মাসের হিসাবে এই খরচ চার থেকে ছয় হাজার টাকায় দাঁড়াবে। বাসে চড়ে গন্তব্যে গেলে হয়তো তাদের এই খরচ আরও কম পড়বে। এ ধরনের যাত্রীরা মেট্রোরেলের সুবিধা হয়তো নিয়মিত নিতে পারবেন না।
মেট্রোরেলের প্রস্তাবিত ভাড়া যে যৌক্তিক হচ্ছে না এটি আমাদের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের বিদ্যমান মেট্রোরেলের ভাড়ার সঙ্গে তুলনা করলেই বোঝা যায়। এই ভাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লি ও কলকাতার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ও তিনগুণ বেশি এবং পাকিস্তানের লাহোরের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি। ঢাকার প্রথম মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মেট্রোতে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে খরচ হয় ৪০ রুপি, ছুটির দিনে যা নেমে আসে ৩০ রুপিতে। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ৫০ টাকারও কম, ছুটির দিনে এই ভাড়া প্রায় ৩৫ টাকা। দিল্লিতে ৩২ কিলোমিটারের বেশি পথ মেট্রোরেলে যাওয়া যায় ৬০ রুপিতে। দিল্লিতে মেট্রোর সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ রুপি। কলকাতায় সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৬ টাকা। চেন্নাই মেট্রোরেলেও সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ রুপি। পাকিস্তানের লাহোর মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া সমপ্রতি বাড়িয়ে ২০ রুপি করা হয়েছে। পাকিস্তানি ২০ রুপি প্রায় সাড়ে ৮ টাকার সমান। এই ভাড়ার হার থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের ভাড়া কোনোভাবেই যৌক্তিক পর্যায়ে পড়ে না।
বিশেষ করে স্বল্প দূরত্বের ভাড়া বা সর্বনিম্ন ভাড়া কোনোভাবেই যৌক্তিক হবে না। কারণ স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা ট্রেনে ভাড়া আদায়ের একটা বড় উৎস হতে পারে। কিন্তু প্রস্তাবিত ভাড়ায় এদিকটি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। মেট্রোরেল এমন একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যেখানে ট্রেন প্রতিটি স্টেশনে সময় করে থামে। নির্ধারিত সময় অপেক্ষা করে। যাত্রী থাকলেও ট্রেন থামবে, না থাকলেও থামবে। এ ছাড়া যাত্রী উঠে আসন পূর্ণ হয়ে যাবে এরপর আর যাত্রী তোলা যাবে না- এমন কোনো সমস্যাও নেই। কারণ মেট্রোতে আসনের চেয়ে দাঁড়িয়ে বেশি যাত্রী গন্তব্যে যেতে পারেন। তাই স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা ভাড়ার কারণে ট্রেনে না উঠলে ক্ষতি হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষেরই। একইসঙ্গে একসঙ্গে অনেক মানুষকে সেবা দেয়া, বিদ্যমান যানজট নিরসনের যে লক্ষ্য নিয়ে মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে তার পুরো সুফল মিলবে না। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের মাথায় এমন কোনো চিন্তা আছে কিনা কে জানে? তারা হয়তো শুধু খরচের হিসাব কষছে। এই খরচ তুলে আনার চিন্তা করছে। শুধু খরচ তোলে আনাই যে, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য নয় এটি হয়তো সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নেই। এ ছাড়া মেট্রোরেলের মূল আয় তো যাত্রী ভাড়া থেকেই আসবে। এখানে বাড়তি ভাড়া চাপিয়ে দিয়ে যাত্রীদের যদি নিরুৎসাহিত করা হয় তাহলে তো আয় বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতে সহনীয় ভাড়া নির্ধারণ হলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেলে যাতায়াতে অভ্যস্ত হবে। প্রয়োজন হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধাপে ধাপে ভাড়া বাড়ানোর সুযোগও তো আছেই।
শুরুতে মেট্রোরেলের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ৬০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা করার একটি প্রস্তাবনা ছিল। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এই প্রস্তাবটিকে যৌক্তিক বলে সায় দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ মতামত ছাড়াই এই প্রস্তাবনার প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভাড়ার একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ।
আলোচনা আছে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরিবহন মালিক সংগঠন নেতাদের পরোক্ষ হাত থাকতে পারে। কারণ উচ্চ ভাড়া নির্ধারণে এই পরিবহন মালিকদের জন্য সুবিধা রয়েছে। মেট্রোরেলে উচ্চ ভাড়া থাকলে তাদের পরিবহন ব্যবসায় খুব একটা প্রভাব পড়বে না। রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা এখন অনেকটা এসব সংগঠনের হাতে জিম্মি। কোনো উদ্যোক্তা চাইলেই এখন আর সড়কে বাস নামাতে পারেন না। কোথায় কোন রুটে কে বাস নামাবে তা নির্ধারণ করছে এসব সংগঠন। এমনকি যাত্রী ভাড়া নির্ধারণে সরকারি কর্তৃপক্ষ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে মালিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাবকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে। ঢাকায় বাস ফ্রাঞ্চাইজি চালু করতে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সব বাসকে একটি কোম্পানির অধীনে এনে রুট ভাগ করে চালানোর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে- এমন বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর এই উদ্যোগ এগিয়ে নেয়ার কাজ করছেন ঢাকার দুই মেয়র। তাদের দীর্ঘদিনের চেষ্টায় একটি রুটে বাস নামাতে পারলেও পদে পদে জটিলতা তৈরি করছে অন্য পরিবহন কোম্পানি। আরও তিনটি রুটে বাস নামানোর ঘোষণা দেয়া হলেও দফায় দফায় সময় পেছাতে হচ্ছে মালিকদের অসহযোগিতার কারণে।
বলতে গেলে এই পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের হাতে জিম্মি এই খাত। এই সংগঠনের নামে নেতারা নানা ধরনের চাঁদা নেন পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে। ঘুরে ফিরে এই চাঁদার টাকা যাত্রীদের পকেট থেকেই যাচ্ছে। এই জিম্মিদশা চলে আসছে দিনের পর দিন।
মেট্রোরেল পরিবহন ব্যবসায়ীদের এই মনোপলি অবস্থা ভেঙে দেয়ার একটা সূচনা হতো পারতো। কিন্তু উচ্চ হারে ভাড়া নির্ধারণ করে শুরুতেই একটা ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে যাত্রীদের। বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য মেট্রোরেল ব্যবস্থায় মানুষকে অভ্যস্ত করতে কর্তৃপক্ষকে আরও কৌশলী পদক্ষেপ নেয়ার দরকার ছিল বলে অনেকে মনে করেন। একই সঙ্গে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও যাত্রী কল্যাণের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে যুৎসই একটি ভাড়া নির্ধারণ করা যেতো। সরকারিভাবে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণের পর যাত্রী কল্যাণ সংস্থাগুলো আপত্তি তুলেছে। এসব সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তা অযৌক্তিক। এই ভাড়া অর্ধেকে নামিয়ে আনার দাবি করেছে কোনো কোনো সংগঠন।
আসছে ডিসেম্বরে মেট্রোরেলের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এই সময় চালু হলে প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল চলবে। এই পথে নয়টি স্টেশন রয়েছে। এই নয় স্টেশনের একটির থেকে আরেকটির দূরত্ব এক কিলোমিটারের কম অথবা বেশি। একটি স্টেশন থেকে উঠে পরবর্তী স্টেশনে মানে এক কিলোমিটার পর নেমে গেলেও যাত্রীকে ২০ টাকা গুনতে হবে। এ ছাড়া উত্তরা থেকে সাতটি স্টেশন পাড়ি দিয়ে আগারগাঁও পর্যন্ত আসলে যাত্রীকে ৬০ টাকা গুনতে হবে। এটুকু দূরত্বে বিদ্যমান গণপরিবহনে এখন অর্ধেক ভাড়ায় যাতায়াত করা যাচ্ছে। এ ছাড়া উত্তরার যে অংশ থেকে মেট্রোরেল যাত্রা শুরু করবে ওই অংশের আশপাশে জনবসতিও তুলনামূলক কম। দূরের এলাকা থেকে অন্য পরিবহনে করে এখানে এসে মেট্রোরেলে করে আগারগাঁও বা তার আগের কোনো স্টেশনে যেতে হয়তো অনেকে আগ্রহ দেখাবে না। এক্ষেত্রে মিরপুর-১২ নম্বরের পল্লবী স্টেশন থেকে পরবর্তী স্টেশনগুলোতে যাত্রী বেশি হবে। এসব যাত্রীরা পরবর্তী দুই বা তিন স্টেশন বা শেষ স্টেশন পর্যন্ত যাবেন। তাই মেট্রোরেলের প্রথম ধাপে যাত্রী টানতে হলে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের বিবেচনায় নিয়েই ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। তা না করে ২০ টাকা সর্বনিম্ন ভাড়া নিয়ে যাত্রী পরিবহন করলে শুরুতেই যাত্রী নিয়ে ধাক্কা খেতে পারে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় বেশি ভাড়া নিয়ে কম যাত্রী পরিবহন নাকি কম ভাড়ায় বেশি যাত্রী সেবা দেবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সেটিই এখন দেখার বিষয়।
লেখক: মানবজমিনের নগর সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদক