খেলা
বাংলাদেশের জন্য জয়সুরিয়ার ‘মন্ত্র’
স্পোর্টস রিপোর্টার, (কলম্বো) শ্রীলঙ্কা থেকে
৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার
একসময় আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা বাংলাদেশ বর্তমানে রয়েছে দশম স্থানে। ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হলে কমপক্ষে সপ্তম স্থানে থাকতে হবে। লঙ্কা সফরে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের একটি দারুণ সুযোগ রয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দলের। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ জিততে পারলেই তারা এক ধাপ এগিয়ে নবম স্থানে উঠে আসবে। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা একে একে বিদায় নেওয়ায় নতুনদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এখন টাইগারদের বড় চ্যালেঞ্জ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কাও একসময় পড়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই লঙ্কান ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ ও কিংবদন্তি ক্রিকেটার সনৎ জয়সুরিয়া টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এক বিশেষ ‘মন্ত্র’ দিয়েছেন। গতকাল তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দলই রূপান্তরকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যায়। যদি দেখেন, শ্রীলঙ্কাও সেই রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে এবং এটা কঠিন ছিল। পরিস্থিতি কীভাবে আমরা কাটিয়ে উঠি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের সুযোগ দিতে হবে, তাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং তাদের সমর্থন করে যেতে হবে। এটা যেকোনো দলের ক্ষেত্রেই হতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক আত্মবিশ্বাস দেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত নয়।’
জয়সুরিয়া ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের পূর্ণকালীন প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার অধীনে দলের ভালো পারফরম্যান্সের কারণেই তাকে এই স্থায়ী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার চুক্তি ২০২৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তার কোচিংয়ে দল সম্প্রতি ভারত, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো ফলাফল করেছে, যা তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অন্যতম কারণ। তার অধীনে শ্রীলঙ্কা ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে এবং ইংল্যান্ডের মাটিতে ১০ বছর পর টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। জয়সুরিয়ার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তিনি দলের উন্নতি, বিশেষ করে ফিল্ডিং ও ব্যাটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ধারাবাহিক কাজ করার ওপর জোর দিচ্ছেন। তিনি তরুণ খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া এবং তাদের ওপর আস্থা রাখার গুরুত্বের কথাও বলেছেন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ী তারকা বলেন, ‘যেখান থেকে আমরা উঠে এসেছি, সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ হারিয়েছিলাম। আমরা প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগিয়েছি ওয়ানডে দলকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য। (অধিনায়ক) চারিথ আসালাঙ্কা আমার পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা যা করেছি তা হলো খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস দেওয়া এবং তাদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনা। খেলোয়াড়রা খুব পরিশ্রম করেছে এবং কঠোর পরিশ্রমই আমাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। যদি আমরা আরও উপরে উঠতে চাই, তবে আমাদের ফিল্ডিং এবং ব্যাটিংয়ের মতো অন্যান্য ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে হবে।’ প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধস নিয়ে জয়সুরিয়া বলেন, ‘প্রথম ১৫ ওভারে বাংলাদেশ ভালো খেললেও তারা আতঙ্কিত হননি। তারা টাইট বোলিং করে শৃঙ্খলা বজায় রেখে সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। রান-আউট আমাদের একটি সুযোগ এনে দেয় এবং এরপর স্পিনাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে, যার চাপ বাংলাদেশ সামলাতে পারেনি।’