শেষের পাতা
১৪০ টাকা মজুরি মানে না চা শ্রমিকরা
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৯ আগস্ট ২০২২, শুক্রবার
১৪০ টাকা মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন চা শ্রমিকরা। গতকাল জানিয়ে দিয়েছেন এ প্রস্তাব তারা মানেন না। আন্দোলনে আছেন, আন্দোলনেও থাকবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ১২০ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা মজুরি দেয়া কোনো যৌক্তিক প্রস্তাব নয়। এ কারণে গতকাল দুপুরে চা শ্রমিকরা শ্রীমঙ্গলে বৈঠক করে নতুন মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এদিকে- চা শ্রমিকদের এই সিদ্ধান্তের পর সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। তবে ২৩শে আগস্ট শ্রম মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে পরবর্তী বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠকে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত ৯ই আগস্ট থেকে বাংলাদেশের প্রায় ২৩১ চা বাগানের ১ লাখ ৩৫ হাজার শ্রমিক দুই ঘণ্টার কর্মবিরতিতে নেমেছিল।
বিকাল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত একটানা বৈঠক হয়। শ্রমিক প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বৈঠকের সারাংশ হিসেবে রাতে ১২০ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা মজুরি করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এর বাইরে রেশন সহ অন্যান্য সুবিধাদি বাড়ানোর কোনো আলোচনা হয়নি। ফলে বৈঠকে উপস্থিত থাকা শ্রমিক প্রতিনিধিরা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। তারা বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে জানিয়ে দেয়ার কথা বলে সিলেটে চলে আসেন। তবে- সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা তারা জানিয়ে এসেছেন। কোনোভাবেই আন্দোলন থেকে তারা সরে যাবেন না বলেও জানান। এদিকে- ঢাকার বৈঠকের পর চা শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল দুপুরে শতাধিক বাগানের শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর বিকালে তারা সাংবাদিকদের কাছে জানান, ১৪০ টাকা মজুরি দেয়ার প্রস্তাবটি তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। দাবি মতো ৩০০ টাকা মজুরি না দিলে তারা আন্দোলন থেকে সরে যাবেন না। বৈঠক শেষে চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেটের সভাপতি রাজু গোয়ালা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ঢাকার বৈঠকে মাত্র ২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা মজুরি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাব যৌক্তিক না।
চা শ্রমিকরা শ্রীমঙ্গলে বৈঠক করে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আন্দোলনে আছি এবং আন্দোলনে থাকবো। এদিকে- শ্রীমঙ্গলে বৈঠক শেষে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানিয়েছেন, ‘আমরা এতটাই অসহায় যে, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবির প্রেক্ষিতে মানসম্মত একটি প্রস্তাবও আসছে না। বরং ১৪০ টাকা মজুরির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেটি যুক্তিযুক্ত নয়। এ কারণে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারা বসে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রস্তাব আমরা মানি না। তবে এ বিষয়ে আরও আলোচনা করতে চা শ্রমিকরা প্রস্তুত। আমরা আলোচনা থেকে সরে যাবো না। এদিকে- গতকাল দেশের সব বাগানের চা শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। জন্মাষ্টমী থাকায় সকালের দিকে তারা আন্দোলনে নামেননি। দুপুরের পর প্রতিটি বাগানের শ্রমিকরা বাগান এলাকায় বিক্ষোভ করেন। হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ থেকে সরে আসেন। চা মালিকরা দাবি করেছেন- শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের কারণে প্রতিদিন তাদের অন্তত ১০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে পাতা সংগ্রহ করা না গেলে এই ক্ষতি আরও বাড়বে।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]